প্রতি জেলায় একটি নদী দখল ও দুষণমুক্ত করার পরিকল্পনা সরকারের

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘আমি মনে করি না, রাজশাহীর চারঘাটের স্লুইসগেট এখন আর প্রয়োজন আছে। চারঘাটের স্লুইসগেট সরিয়ে দিয়ে একটু খনন করলেই পানি প্রবাহ নাটোরের নন্দকুজা পর্যন্ত বেড়ে যাবে। নন্দকুজা থেকে ডাউনে আরও বেশি খনন করতে হবে। প্রতি জেলায় একটি নদী দখল ও দুষণমুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।’
আজ সোমবার (১৯ মে) দুপুরে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আটঘরিয়া বড়াল নদের স্লুইচগেট পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বড়াল নদকে বাঁচাতে, প্রয়োজনে খনন করে এর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ নিশ্চিত করতে আমরা এসেছি। নদী জনগণের সম্পদ। তাই এ সম্পদ রক্ষায় প্রশাসন এবং স্থানীয় জনগণের একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন। চারঘাট থেকে বড়াল পর্যন্ত কোথায় কোথায় খননের প্রয়োজন তা আমরা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বুঝে নেব। আমরা যতটা পারি, নদী রক্ষায় কাজ চালিয়ে যাব।’
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘উজানের অনেক কিছুর ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। উজানে বাঁধ দিয়ে আমাদের প্রবাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই এই ভুখণ্ডে যেসব নদী আছে তার যাতে নতুন করে আর ক্ষতি না হয় সে লক্ষ্যে পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার। ১৯৬০/৭০ সালে বড়ালের যে চিত্র ছিল এখন আর নেই। উজানে বাঁধ দিয়ে আমাদের পানি প্রবাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাজ আমাদের যেটুকু আছে সেটুকু ঠিক রাখা।’
স্লুইস গেট নিয়ে নানা অভিযোগ মন্ত্রণালয়ের জমা হচ্ছে জানিয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘একটা বিষয় হচ্ছে যখন স্লুইসগেটগুলো হয়েছিল তখন নিশ্চয়ই একটি উদ্দেশ্য নিয়ে হয়েছিল। জন-দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই সেগুলো হয়েছিল। কিন্তু এখন সেগুলো আর অত বাস্তবতায় নেই। এখন বাস্তবতা ঘুরে গেছে। এখন বাস্তবতা হচ্ছে নদীতে পানি না থাকা, নাব্যতা না থাকা। এর ফলে আশপাশের মানুষ ঠিকমতো পানি পাচ্ছে না।’
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের যত অবকাঠামো আছে সেগুলো নদীগুলোকে আরও মেরে ফেলেছে। এখন অবস্থা এমন সেসব অবকাঠামো সরিয়ে দিলেও পানি আসবে না। কারণ কোনো কোনো জায়গায় নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে গেছে, সেখানে খনন না করলে শুধু অবকাঠামো সরিয়ে লাভ হবে না।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সরকার প্রতিটি জেলাতেই একটি করে নদী দখল ও দুষণমুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। যদিও সেগুলো করে যাওয়ার সময় আমরা পাব না। তাই আটটি বিভাগে একটি করে ও কক্সবাজারে একটি এবং ঢাকায় চারটি নদীর বাজেট করে নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহম্মদ মোবাশ্বেরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন, রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমানসহ সরকারি কর্মকর্তারা।