সৌদি ফল সাম্মাম এখন চাঁপাইনবাবগঞ্জে, বিঘাপ্রতি আয় আড়াই লাখ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার বেশ কয়েকজন কৃষক উচ্চমূল্যের ফল সাম্মাম চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, এসএসিপি-রেইনস প্রকল্প ও উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এই ফলের চাষ শুরু হয়।
জানা গেছে, সাম্মাম চাষে এক বিঘা জমিতে খরচ হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। তবে ঠিকমতো যত্ন নিলে বিঘাপ্রতি ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। এর আগে পরীক্ষামূলকভাবে ৮ কাঠা জমিতে চাষ করে এক কৃষক ১০ কাঠা জমি থেকে লক্ষাধিক টাকা আয় করেন।
ভোলাহাট উপজেলার দক্ষিণ নামোটলা পোলাডাঙ্গা গ্রামের আমিরুল ইসলাম, ময়ামারি গ্রামের মনিরুল ইসলাম, আব্দুর রহমান ও লম্বাটোলা পোলাডাঙ্গার আব্দুল হামিদ নিজ নিজ জমিতে সাম্মাম চাষ করছেন। এছাড়া শামীম, জাহাঙ্গীরসহ মোট ১২ জন কৃষক মিলে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে সাম্মাম ফলাচ্ছেন, যা এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
সাম্মাম ফল সুগন্ধযুক্ত, খেতে মিষ্টি ও এটি গ্রীষ্মকালের একটি জনপ্রিয় ফল। মূলত সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে এই ফলটির চাষ বেশি হয়ে থাকে। বিভিন্ন দেশে একে রক মেলন, সুইট মেলন বা মাস্ক মেলন নামেও ডাকা হয়।
কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় হতো, কিন্তু সাম্মাম চাষ করে অনেক বেশি লাভের আশা করছি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, সাম্মাম চাষ করতে গিয়ে কৃষি অফিসের কাছ থেকে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সবসময় সহযোগিতা পেয়েছি। বছরে একই জমিতে চারবার ফসল ফলানো যাবে বলে এই চাষ শুরু করেছি।
দর্শনার্থী জামিল হোসেন বলেন, এই ফল অনেক জনপ্রিয়, তাই দেখতে এসেছি। দেখে আমারও চাষে আগ্রহ হয়েছে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহায়তা দিচ্ছি। সাম্মাম চাষে লাভ বেশি, খরচ কম। সাম্মাম চাষে ১ বিঘা জমিতে ৫০ হাজার টাকা খরচ হলেও ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সুলতান আলী জানান, এই ফল সব ধরনের মাটিতে চাষ করা গেলেও বেলে মাটিতে সবচেয়ে ভালো ফলন হয়। এটি শরীর হাইড্রেট রাখে, চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়, ক্যানসার ও প্রদাহের ঝুঁকি কমায়, হজম শক্তি বাড়ায় এবং শরীরের ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করে। এছাড়া মার্কেটে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে।