রাস্তায় নামলে ইউনূস সাহেব ২৪ ঘণ্টা থাকতে পারবেন না : গয়েশ্বর

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এই সরকারের জনগণের ম্যান্ডেট নাই। আজকে দেশ বাঁচাতে, গণতন্ত্রের স্বার্থে সবাই এক টেবিলে বসতে পারছি। আজকে ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ দেব। আজকে যারা এক টেবিলে বসছি, হয়তো ইতিপূর্বে একটা টেবিলে বসিনি। উনি আমাদের এক টেবিলে বসতে সহায়তা করছেন। অনেকই চেষ্টা করেছেন, বলেছেন, আমরা মৌলবাদীদের আশ্রয়দাতা, মদদদাতা। অনেকের সাথে আলাপ হয়েছে আমরা বুঝাইতেই পারি না।
তিনি বলেন, বিএনপির একটি ন্যাশনালিস্ট পার্টি। আমাদের সাথে তাদের ট্যাগ করে লাভ নেই। তাদেরকে তাদের মতো করে থাকতে দাও। জাতীয়বাদী শক্তির সঙ্গে সোশ্যাল ইকোনমি, আর ক্যাপিট্যাল ইকোনমি— বাম-ডানের এটাই তো পার্থক্য। এর বেশি কিছু না। একটা ন্যাশনালিস্ট পার্টির কাছে মৌলবাদী যেমন, যারা প্রগতিশীল বাম রাজনীতি করেন তাদের কাছেও মৌলবাদী তেমনই। এটা ড. ইউনূস সাহেব বিভেদ করে ফেলছে। মৌলবাদীদের এক করে ফেলছে ক্ষমতায় থাকার জন্য।
আজ রোববার (১৫ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে ‘দেশ বাঁচাও বন্দর বাঁচাও আন্দোলন’। বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদার সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান ও দেশ বাঁচাও বন্দর বাঁচাও আন্দোলনের মূল সমন্বয়ক শাহাদাত হোসেন সেলিম।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, পৃথিবীতে যে শক্তিকে সন্তুষ্ট করতে চান, সারা পৃথিবীতে মৌলবাদীদের জন্মদাতা, মদদদাতা ক্ষমতা প্রত্যাশীরা। তারা রাজাদের জন্মদাতা, আবার তারাই রাজাদের শেষ করে। আজকে আমাদের যে নতুন সংকট বলা হচ্ছে, আমি এটাকে সংকট মনে করি না। আমাদের সুর, তাল, লয় যখন এক, আমাদের দমাবে কে? সেই শক্তি কার আছে?
তিনি আরও বলেন, ইউনূসের জন্য কান্না করতে করতে চোখের পানি দিয়ে রাস্তায় রাস্তায় বন্যা বয়ে দেবে, যাতে ইউনূস সাহেব হেঁটে বিমানবন্দর না যেতে পারে। এমনটা হয়েছে নাকি? হয়েছে নাকি? হয়নি।
আলোচনার টেবিলে উপস্থিত নেতাদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যারা এই টেবিলে আছি, ঘুরে ফিরে সব দলের সবার মত একই, কথা এক। আমরা যদি বলি, আগামীকাল রাস্তায় নামব, আমর মনে হয়, ইউনূস সাহেব ২৪ ঘণ্টা থাকতে পারবেন না। এই বিবেচনায় আমরা এখানেই সমাপ্ত করতে চাই। আমরা চাই ইউনূস সাহেব সফল হউক। ড. ইউনূসের সফল মানেই জুলাই আন্দোলনের সফলতা। আজকে যারা ১১ দিনের আন্দোলনে মুকুট চায়, তাদেরকে অনেক আগেই জনগণ মুকুট দিয়ে দিয়েছে।
সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমাদেরকে শাণিত ভাষায় কথা বলার সুযোগটা দিয়েন না। আমরা কিন্তু কাপুরুষ না। আমরা কিন্তু লড়াই করার মধ্য দিয়ে আসছি।
এলিডিপির মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটুর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, আমজনতা পার্টির সাধারণ সম্পাদক তারেক রহমান প্রমুখ।