সর্ষের ভেতরে ভূত রেখে সংস্কার হবে না : সালাহউদ্দিন

সর্ষের ভেতরে ভূত রেখে সংস্কার হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় সালাহউদ্দিন আহমেদ এ মন্তব্য করেন।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বলেছি, আপনার (প্রধান উপদেষ্টা) উপদেষ্টা পরিষদ সংস্কার করুন। আপনার উপদেষ্টা পরিষদ নিরপেক্ষ নয়। এখানে দুজন ছাত্র উপদেষ্টা বসে আছেন, তাঁরা একটা দলের। আরেকজন উপদেষ্টা এখন বাংলাদেশ উদ্ধার করতে এসেছেন। তাঁর বিতর্কিত ভূমিকার কারণে বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আর কী পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন জানি না।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কয়েকজন ফ্যাসিবাদের দোসর আপনার উপদেষ্টাদের মধ্যে আছেন। সংস্কার করুন, নাম বলতে চাই না—বিব্রত হবেন। সর্ষের মধ্যে ভূত রেখে আপনি সংস্কার সংস্কার করেন তাহলে সংস্কার হবে না।
সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, কিছু সংস্কার এক সপ্তাহ থেকে এক মাসের মধ্যে করা সম্ভব। যদি আপনি না পারেন আমাদের বলেন। যে সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হবে সেসব সাংবিধানিক সংস্কার নির্বাচিত সংসদেই করতে হবে। এটাই হলো আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য। সংস্কার সংস্কার বলে আপনারা মুখে ফেনা তুলছেন কয়টা সংস্কার করেছেন?
সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, কোন বিভাগে কোন আইনে সংস্কারগুলো আপনারা আনতে চান? যেগুলো নির্বাহী আদেশে সম্ভব ওইসব করে দেন। জুডিশিয়ারি সংস্কার তো প্রায় হয়েই গেছে।
জাপানের প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, শুনছি আজকে নাকি একটা বক্তব্য দিয়েছেন আমাদের প্রধান উপদেষ্টা। তিনি নিক্কেই ফোরামের আমন্ত্রণে বিদেশে গেলেন। উনি অবশ্য দেশে কম কথা বলেন। বিদেশে গেলেই সাক্ষাৎকার দেন বেশি। ওখানে উনি বলেছেন যে, মাত্র একটি মাত্র দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে। যদি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হয় তাহলে নাকি খুব তাড়াহুড়া করে সংস্কার করতে হবে—এটা তার বক্তব্য।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সংস্কারের এসব বাহানা করে নির্বাচনকে বিলম্বিত করবেন না। জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করবেন না। গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টির মতো কোনো সুযোগ দেবেন না। দয়া করে আমাদের এখানে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে জাতীয় ঐক্য আছে সেই জাতীয় ঐক্যকে আমাদের ইস্পাত কঠিন সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সেই বাংলাদেশে আমাদের নেতা তারেক রহমান।
সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন,আমাদের ভবিষ্যৎ রাজনীতি কী হবে সে বিষয়ে তারেক রহমান কর্মসূচি প্রণয়ন করে ফেলেছেন। কীভাবে স্বাস্থ্য কার্ড দিবেন, কীভাবে একটা খাদ্যের জন্য রেশন কার্ড ভিত্তিক ফ্যামিলি কার্ড দিবেন, মেধাবীদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করবেন, কৃষকদের আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব—এসব কর্মসূচি প্রণীত হয়ে গেছে। কিন্তু সবকিছু নির্ভর করছে নির্বাচিত সরকারের ওপর। আমাদের ৩১ দফায় আমরা বলেছি।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বক্তব্য দেন।