নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জন্য আমাদেরও ধৈর্য ধরতে হবে : আমীর খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘নির্বাচনের ব্যাপারে (রমজানের আগে) একটা জাতীয় ঐকমত্য আছে। এটা সবারই মতামত, এ জায়গাতে কোথাও দ্বিমত আছে বলে মনে করি না। নিশ্চয়ই কোনো এক সময়ে আগামী দিনে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে (নির্বাচনের) দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে। এটার জন্য আমাদেরও একটু ধৈর্য থাকতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো ডায়াস ফেরেস বিএনপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটি ও চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটি সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশেষ সহযোগী উপদেষ্টা কমিটি সদস্য শামা ওবায়েদ।
বৈঠকের পর আমীর খসরু সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বাংলাদেশের কৃষি, প্রাণিসম্পদ, রাজনীতি ও ফুটবল খেলার উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে কীভাবে পারস্পারিক সহযোগিতা ও সম্পর্ক আরও উন্নত করা যায়, সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনের ব্যাপারে (রমজানের আগে) একটা জাতীয় ঐকমত্য আছে। এটা সবারই মতামত, এ জায়গাতে কোথাও দ্বিমত আছে বলে মনে করি না। এখানে সবাই ঐকমত্য। বিভিন্ন কারণে এই জায়গাটায় আমরা এসেছি এবং জাতীয় ঐকমত্য পোষণ করেছি। লন্ডনে বৈঠকের পর জাতি অত্যন্ত আনন্দিত। সবার মধ্যে একটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। এই জায়গাটার মধ্যে কোনো অসুবিধা আমি দেখছি না। আর দিনক্ষণ যেটা, সেটা নির্বাচন কমিশন ডিক্লেয়ার করবে। সেটা তো আর সরকার বলতে পারবে না, আমরাও বলতে পারব না। নির্বাচনের তারিখ নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে আসবে এবং আমরা সেটার জন্য অপেক্ষা করব। নিশ্চয়ই কোনো একটা সময়ে আগামী দিনে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একটা দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে। তো এটার জন্য একটু আমাদেরও তো ধৈর্য থাকতে হবে, তাই না? একদম অস্থিরতার মধ্যে সারাক্ষণ থাকলে তো হবে না। একটু তো ধৈর্য ধরতে হবে। একটু সহনশীল হতে হবে। আমাদের মধ্যে আস্থারও একটা ব্যাপার আছে। আমরা যদি একেবারে আস্থাহীন হয়ে যাই, একদম অস্থিরতার মধ্যে থাকলে তো সমস্যা। এটা কোনো জাতির জন্য কাম্য না। আমরা সঠিক পথে যাব, জাতি অবশ্যই একটা গণতান্ত্রিক পথে চলছে। আমরা সেটা সমাধান করতে পারব। একটা সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরে আসবে, অতটুকু আস্থা আমাদের সবাইকে রাখতে হবে।’
সরকারের তরফ থেকে নির্বাচন কমিশনকে কোনো বার্তা দেওয়া যায় কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএনপিনেতা আমীর খসরু বলেন, ‘নিশ্চয়ই। এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কথা হবে এই ব্যাপারে। এটা তো খুবই স্বাভাবিক। এটা তো রুটিন ব্যাপার, তাই না। সুতরাং, আমরা সবাই একটু ধৈর্য ধরে সময় দেই। লন্ডনে যে বৈঠক হয়েছে, এটা আমার মনে হয় জাতির জন্য একটা বড় ধরনের একটা ইতিবাচক ঘটনা ঘটেছে। আমরা ওইটাকে সেইভাবেই দেখি। আমরা এর মধ্যে কোনো ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ করে আমাদের ভবিষ্যৎ, সামনে চলার পথ বিঘ্নিত করা ঠিক হবে না। আমি মনে করি, খুবই সুষ্ঠ একটা বিবেচনাপ্রসূত আলাপ আলোচনা, কথাবার্তা, সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা একটু ধৈর্যসহ এগোতে থাকি। সবকিছু সমাধান আগামী দিনে হবে এবং সময়মতো দেশে নির্বাচন হবে। দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। জনগণের যে ভোটাধিকার, মানবাধিকার, তার মালিকানা ফিরে পাওয়া, যার জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করেছি আমরা, সময়মতো হয়ে যাবে। দেশ সেদিকেই যাচ্ছে, সেটা আমরা বিশ্বাস করি।’
বিএনপিনেতা ইশরাক হোসেনের শপথ পড়ানো প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, ‘আইনগতভাবে কোর্টের রায় হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও আসছে। সুতরাং, সবাই অপেক্ষায় আছে। আমরা দেখি, সরকার কী সিদ্ধান্ত দেয়। একটু অপেক্ষা করি, একটু ধৈর্য ধরি। নিশ্চিতভাবে সরকার আইনের শাসনে বিশ্বাস করে। আমরা সবাই বিশ্বাস করি। সুতরাং, আমরা একটু ধৈর্য ধরি। আগামী দিনে বিএনপি বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একটা বড় পরিবর্তন আনতে চায়। বিএনপি জাতীয় স্বার্থে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং জাতীয় স্বার্থের জায়গাতে ঐকমত্যের ওপর জোর দিচ্ছে।