তেঁতুলিয়ায় বিদেশি ফল রাম্বুটান চাষে নারীর সাফল্য

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে উচ্চমূল্যের বিদেশি ফল রাম্বুটান চাষে সফলতা পেয়েছেন নারী উদ্যোক্তা সাথী বেগম (৩২)। উপজেলার শাড়িয়ালজোত গ্রামের এই নারী কৃষক তিন বছর আগে রোপণ করা ১৫টি রাম্বুটান গাছের মধ্যে একটিতে এবার ব্যাপক ফলন পেয়েছেন, যা স্থানীয়ভাবে ইতিবাচক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
রাম্বুটান একটি আকর্ষণীয়, রসালো ও সুস্বাদু ফল। পুরো খোসার ওপরে কদম ফুলের মতো শত শত নরম কেশর থাকায় একে অনেকেই ‘চুল বা দাড়ি ওয়ালা লিচু’ বলে থাকেন। দেখতে লিচুর মতো হলেও এটি আলাদা প্রজাতির ফল। রাম্বুটান চিরহরিৎ ও মাঝারি উচ্চতার গাছ, যার উৎপত্তি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায়। ফলটি শর্করা ও ভিটামিন সি-তে ভরপুর।
সাথী বেগম জানান, ২০২২ সালে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এবং ইফাদের অর্থায়নে পরিচালিত ইএসডিও’র ‘উচ্চমূল্যের ফল-ফসলের জাত সম্প্রসারণ ও বাজারজাতকরণ’ প্রকল্পের আওতায় তিনি রাম্বুটানের চারা পান। ১৫টি চারা রোপণের পর এবার তার এক গাছে থোকা থোকা ফল ধরেছে, যা তাকে আশাবাদী করে তুলেছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ওই বছর তেঁতুলিয়া উপজেলার ৩০ জন উদ্যোক্তার মাঝে মোট ৪৮৫টি রাম্বুটান গাছের চারা বিতরণ করা হয়। সাথী বেগম তাদেরই একজন।
ইএসডিও’র প্রজেক্ট ম্যানেজার কল্যাণ মহান্ত জানান, রাম্বুটান গাছে মার্চে ফুল ফোটে, এপ্রিল থেকে কচি ফল আসতে শুরু করে এবং জুলাই-আগস্টে ফল পাকতে শুরু করে। পাকা রাম্বুটান দেখতে লালচে মেরুন রঙের হয় এবং একটি পরিপক্ব গাছ থেকে বছরে ১৫০-২৫০ কেজি পর্যন্ত ফল পাওয়া সম্ভব।
প্রকল্পের ফোকাল পার্সন ও ইএসডিও’র হেড অফ ইনক্লুসিভ মাইক্রোফিন্যান্স মো. আইনুল হক জানান, এই গাছগুলোর চারা আনা হয়েছে ভিয়েতনাম থেকে। এই ধরনের ফল চাষের মাধ্যমে যেমন কৃষকেরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবেন, তেমনি তেঁতুলিয়ার ইকো ট্যুরিজমেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।