এনসিসি গঠনে কিছু বামপন্থি সংগঠনের অবস্থান রহস্যজনক : গাজী আতাউর

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, ‘মৌলিক সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলো একমত না হলে প্রয়োজনে গণভোটে যেতে হবে। জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনে বামপন্থি কিছু সংগঠনের অবস্থান আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হয়েছে।’
আজ বুধবার (১৮ জুন) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আজকের বৈঠকে বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, কিছু রাজনৈতিক সংগঠন যারা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বকীয়তা, স্বাধীনতা ও শক্তিশালীকরণের কথা বলতেন এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ওপরে নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপ বন্ধের কথা বলতেন তারাও আজকে এনসিসি (জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল) গঠনের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। কেউ কেউ বলতে চাইছেন, এটা এখন গঠন না করে পরে গঠন করা যেতে পারে। বিশেষ করে বামপন্থি কিছু সংগঠন এমন অবস্থান নিয়েছে। বিষয়টি আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হয়েছে।’
গাজী আতাউর বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারই শুধু নয়, বরং স্বাধীনতার পর অতীতের সব সরকারই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত ও দলীয়করণ করেছে। সেটা রোধ করার জন্যই এনসিসির প্রস্তাব করেছে সংবিধান সংস্কার কমিটি। এনসিসি নির্বাহী বিভাগের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ করবে না, বরং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সদস্য নিয়োগে কাজ করবে। বাংলাদেশের অতীত বিবেচনায় দেশকে ভবিতব্য স্বৈরতন্ত্রের কবল থেকে রক্ষা করতে এনসিসি জরুরি। সেজন্য ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আগেই লিখিতভাবে এর প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল। আজকেও আমরা তা পুনর্ব্যক্ত করেছি। তবে এনসিসির কাঠামোর মধ্যে রাষ্ট্রপতির অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আমরা ভিন্ন মত দিয়েছি।’
ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘এনসিসি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য ও প্রধান নিয়োগে রাষ্ট্রপতির কাছেই প্রস্তাব দেবে। তাই রাষ্ট্রপতি নিজেই এনসিসির অংশ হলে সেটা বেমানান হয়। রাষ্ট্রপতিকে এনসিসির বাইরে এই কারণেও রাখা দরকার যেন এনসিসির কোনো বিষয়ে সমস্যা হলে অন্তত রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়া যায়। তবে প্রধান বিচারপতি অথবা বিচার বিভাগ থেকে একজন এনসিসির সদস্য করার ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন মতামত দিয়েছে।’
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘এনসিসি নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। যারা দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে অনাগ্রহী তারাই কেবল এনসিসি নিয়ে দ্বিমত করতে পারে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এনসিসির কার্যপরিধির মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিয়োগের ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করে। এটা নির্বাহী বিভাগের হাতে থাকতে পারে।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আজকের বৈঠকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দুই যুগ্ম মহাসচিব অংশ নিয়েছেন। সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সঙ্গে ছিলেন আরেক যুগ্মমহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।