করলা চাষে মিরপুরের কৃষকদের ভাগ্য বদল

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় করলা (তিত করলা) চাষে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। চলতি মৌসুমে উৎপাদন ও বাজারদর ভালো থাকায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় বাজারে করলার চাহিদা বেড়েছে, পাশাপাশি সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
উপজেলার আমলা, ছাতিয়ানডাঙ্গা, তালবাড়িয়া ও পোড়াদহ ইউনিয়নে গত তিন বছরে করলা চাষ প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে। এখানকার উঁচু জমি, প্রাকৃতিক সেচ এবং জৈব সারের ব্যবহারে করলা চাষ লাভজনক হয়ে উঠেছে।
আমলা ইউনিয়নের কৃষক মিলন হোসেন জানান, আগে ধানের চাষ করলেও লোকসানে পড়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ২০২১ সালে কৃষি অফিসের একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে করলা চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি দুই বিঘা জমিতে করলা চাষ করে বছরে দেড় লাখ টাকার মতো আয় করছেন। উৎপাদন খরচ হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা।
মিলন হোসেন জানান, প্রতিদিন তার ক্ষেতের করলা স্থানীয় বাজারে পাইকারদের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে। এখন করলার পাইকারি দাম প্রতি কেজি ২৫-৩০ টাকা। খুচরায় ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের মতে, করলা একটি গ্রীষ্মকালীন ফসল, যা কম পানিতে টিকে থাকে এবং উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। মিরপুরের মাটি ও আবহাওয়া করলা চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ফলন ভালো হচ্ছে। এখানকার করলা ঢাকাসহ কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, রাজবাড়ীর বাজারে সরবরাহ হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামী মৌসুমে মিরপুরে অন্তত ২০০ হেক্টর জমিতে করলা চাষের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া সবজি সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়েও ভাবা হচ্ছে।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, করলা চাষে মিরপুরের সম্ভাবনা অনেক। আমরা কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ, বালাই নিয়ন্ত্রণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করছি।