মানুষের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হচ্ছে না : আসাদুজ্জামান রিপন

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, ‘ইতোমধ্যে এই সরকারের ১০ মাস পার হয়ে গেছে। মানুষের মনে সংস্কারের যে আকাঙ্ক্ষা, সেই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সংস্কার নিয়ে অত্যন্ত ধীরগতিতে আলোচনা হচ্ছে। ঐকমত্য কমিশন মতানৈক্য কমিশনে পরিণত হয়ে যাচ্ছে।’
আজ শনিবার (২১ জুন) বিকেলে ফরিদপুরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে ফরিদপুর বিভাগের বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
বিএনপিনেতা আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যে পৌঁছাবে, সেখানে দুঃখজনকভাবে আমরা লক্ষ করছি, ঐকমত্য কমিশনের মিটিংগুলোতে হইচই হচ্ছে, সেখানে বিভ্রান্তি হচ্ছে, বয়কট হচ্ছে। ঐকমত্য কমিশন কেন যেন মতানৈক্য কমিশনে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের এজেন্ডার বাইরে অনেকগুলো এজেন্ডা নিয়ে এসেছে। এতগুলো এজেন্ডা বাস্তবায়নের কাজ ওই কমিশনের না।’
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘বাংলাদেশের চারটি প্রদেশ হবে কিনা, সেটা কি ঐক্যমত কমিশনের কাজ? আমাদের দেশ একটি ছোট্ট রাষ্ট্র, এই রাষ্ট্রের চারটি প্রদেশ হলে নানা সমস্যা তৈরি হবে। আর এসব কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদ ও বিরোধ তৈরি হচ্ছে।’
এ সময় ড. আসাদুজ্জামান রিপন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের প্রতি আহ্বান রেখে বলেন, যেসব এজেন্ডা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছানো গেছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করেন। আর অন্য যেগুলো রয়েছে, সেগুলো পরবর্তী সরকারের হাতে ছেড়ে দেন। কারণ, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, এটি চলতেই থাকবে।
এ সময় দলের নতুন সদস্যভুক্তির বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘যে যা-ই বলুক না কেন আওয়ামী লীগ আর ফিরে আসবে না। কিন্তু সেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের লোকেরা যেন দলে অনুপ্রবেশের সুযোগ না পায়, সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি ফরিদপুর বিভাগ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিঙ্কু বলেন, ‘অনেকেই পছন্দ করে না, অনেকের গা জ্বলছে, কেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হলো লন্ডনে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের প্রধানের সঙ্গেই তো অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান বসেছেন, সংস্কারসহ নির্বাচনের বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য। সুতরাং, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল, যে রাজনৈতিক দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, জেল খেটেছে। আর সেই দলের রাজনৈতিক দলের প্রধানের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করবে, গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা করবে, সেটাই সবচেয়ে স্বাভাবিক ঘটনা।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আলহাজ্ব জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া বলেন, ‘দলের সদস্য নেওয়ার ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে, যাতে কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের দোসরা দলের ভেতর ঢুকে যেতে না পারে।’
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আলহাজ্ব জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক, মো. সেলিমুজ্জামন সেলিম, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা, সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপনসহ ফরিদপুর জেলা ও মহানগর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন। এতে বৃহত্তর ফরিদপুরের বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে নেতারা নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।