তারেক রহমান এদেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর প্রতীক : ডা. জাহিদ

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এদেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর প্রতীক বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটি সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। আজ শনিবার (২১ জুন) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এনআরএফ)’ এর উদোগে ‘রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমানের নেতৃত্ব ও বর্তমান বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন রুনু।
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর দেওয়া যৌথ বিবৃতি নিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সমালোচনার প্রতি ইঙ্গিত করে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সাহেব ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব কথা বলেছেন। আচ্ছা বলেন তো, আপনারা প্রতিদিন যমুনাতে যান, যমুনা থেকে বের হওয়ার পরে আপনারা আপনাদের মতো কথা বলেন আর প্রেস সচিব প্রেস সচিবের মতো ব্রিফিং করে। এটা মধ্যে কোনো দোষ নাই। দোষ কোথায়? তারেক রহমান সাহেব সাথে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবের মিটিংয়ের পরে প্রেস ব্রিফিংটা কেন? আপনারা করেন প্রতিদিন, ওইটার দোষ নাই। আর একটা বাংলা ভাষা বলতে চাই না ওটা বললে অনেকে ব্যাঙ্গ করবেন।’
‘আয়নায় চেয়ারাটা দেখবেন, তারেক রহমান শুধু একটি মানুষ নয়, তারেক রহমান এদেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর প্রতীক। তারেক রহমান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জ্যেষ্ঠ সন্তান, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তান। তারেক রহমান খুঁজলেই পাওয়া যায় না’, যোগ করেন ডা. জাহিদ হোসেন।
ডা. এ জেড এম জাহিদ আরও বলেন, ‘তারেক রহমান নিজের যোগ্যতা বলে আজকে দেশের শুধু বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে যারা বিশ্বাস করে শুধু তাদেরকে নয়, বিএনপিকে নয়, গণতন্ত্রকামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আজকে উনি নেতৃত্বের আসনে প্রতিষ্ঠিত।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তারেক রহমানকে নিয়ে আপনারা নিজেদের সঙ্গে তুলনা করলে মানুষ হাসে এবং আড়ালে আঁচলের তলায় মুখ লুকান। কথা বলেন, আপনাদেরটা বলেন, কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু, তারেক রহমানের সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস কথা বলবেন কি বলবেন না আপনারা বললে, জাতি বিব্রত। আরে ভাই, জাতির হোল সেলার কি আপনারা নিয়েছেন? ১৮ কোটি মানুষের দায়-দায়িত্ব কে নিয়েছে? নির্বাচন হয়েছে? নির্বাচিত তিনশ প্রতিনিধি আছে যে, তারা নির্বাচিত প্রতিনিধি।’
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আপনারা কথা বলেন, আপনারা বলেন, আপনাদের দল এই মিটিংয়ের যৌথ ঘোষণায় বিব্রত হয়েছে, সেটা বলতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন, সবসময় জাতিকে নিয়ে টান দেবেন না। জাতিকে নিয়ে টান দিতে হলে কিন্তু হিসাব-কিতাব ভিন্ন হতে পারে।’
বিএনপিনেতা ডা. জাহিদ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের নাম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, এই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সভা হয়েছে। সভা হওয়ার আগের ও পরের অবস্থা দেখেন, এই দেশের মধ্যে অনেক ধরনের বিশৃঙ্খলা কমে গেছে, শান্তি-শৃঙ্খলায় মানুষের মধ্যে আশা জেগেছে, একটা নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যেটি অনেকে অনেকভাবে প্রলম্বিত করতে চায়।’
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের নেতা (তারেক রহমান) বলেছিলেন, ডিসেম্বরে, তার পরবর্তিতে শুনলাম ফেব্রুয়ারিতে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে জনগণের অধিকার জনগণকে ফেরত দেওয়ার মধ্যেই আগামীর বাংলাদেশ গড়ার শক্তি নিহিত আছে।’
জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘কোনো অবস্থাতে এটিকে যদি প্রলম্বিত করার চেষ্টা করা হয় আর বিএনপিকে নিয়ে বারে বারে কথা বলার চেষ্টা করা হয়...। আজকে অনেকে অনেক কথা বলেন। ভাই আমরা পেছনের দিকে তাঁকাতে চাই না, আমরা জিয়াউর রহমানের দল, আমরা খালেদা জিয়ার দল, আমাদের নেতা তারেক রহমান… আমরা ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
বিএনপিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি প্রশ্ন রেখে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আসেন, কথা বলেন—আগামী দিনে আপনার ম্যান্ডেট কী? আমাদের ম্যান্ডেট ৩১ দফা। আপনার ম্যান্ডেট কী?’
ডা. জাহিদ বলেন, ‘ওইগুলো নিয়ে আলোচনা করেন, জনগণের সামনে যান, জনগণ যেটি ভালো, সেটি গ্রহণ করবে, যাকে ভালো মনে করবেন না তাকে আস্তকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত করবে। জনগণের শক্তিতে কেন বিশ্বাস করেন না? কেন নিজেরা নিজেরা মনে করেন, আপনারা কয়েকজন লোক যা বলবেন সেটিই বাস্তবায়ন হবে। জনগণকে তার ক্ষমতা প্রয়োগ করার সুযোগ দেন।’
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘৩১ দফা বিএনপি দিয়েছে, আপনারা আপনাদের দফা দেন। জনগণের কাছে যান, জনগণ যাকে গ্রহণ করবে, যাকে দায়িত্বে দেবে, ইনশাল্লাহ আগামীর বাংলাদেশে তারাই নেতৃত্ব দেবে, তারাই গড়ে তুলবে।’
এনআরএফের আহ্বায়ক সৈয়দ আবদাল আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনসহ অন্যান্যরা।