সালিশি বৈঠকে তালাক, দুই ঘণ্টা পরই প্রেমিককে বিয়ে

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সালিশি বৈঠকে স্বামী তালাক দেওয়ার দুই ঘণ্টা পর পরকীয়া প্রেমিককে বিয়ে করেছেন এক নারী (২৫)। গতকাল বুধবার (২৫ জুন) উপজেলার দক্ষিণ হিরন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনায় ঝড় বইছে।
জানা গেছে, তিন বছর আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ওই নারী। এক সন্তানের মা হন তিনি। স্বামী প্রায়ই বাড়ির বাইরে থাকতেন। এ সুযোগে পরকীয়ায় জড়ান। গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) দিনগত রাতে ওই নারীর ঘরে এসে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় পরকীয়া প্রেমিক। আপত্তিকর অবস্থায় দুজনকে আটক করে ঘরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে বাড়ির লোকজন।
পরদিন বুধবার সালিশি বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে এলাকার জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গের চাপের মুখে স্বামী-স্ত্রীর তালাক হয়। এই তালাকের দুই ঘণ্টা পর পরকীয় প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর সকলের কাছে তারা দোয়াও চেয়েছেন।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খান চমন-ই-এলাহী বলেন, ‘এভাবে তালাক দেওয়ার দুই ঘণ্টা পর বিয়ে দেওয়া আমার জানামতে শরিয়ত ও আইন সম্মত হয়নি। এ ধরনের সালিশ-দরবার যারা করেন, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা উচিত।’
উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কোটালীপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রতন সেন কংকন বলেন, ‘নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, খুনসহ বিভিন্ন ধরনের সালিশ অযোগ্য অপরাধও এখন কোটালীপাড়ায় সালিশ-দরবারের মধ্যে ফয়সালা হচ্ছে। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগী সঠিক বিচার পায় না বলে আমি মনে করি। তাই এ ধরনের সালিশ অযোগ্য অপরাধ যে সকল জনপ্রতিনিধি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ সালিশ-দরবারের মাধ্যমে ফয়সালা করে থাকেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
এ বিষয়ে কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’