বিআরটিএ ভবন ঘেরাও অটোরিকশা চালকদের

রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) সদর দপ্তর ঘেরাও করেছেন ঢাকা জেলার সিএনজি অটোরিকশা চালকরা। আজ রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বিআরটিএ ভবন অবরোধ করে রাখা হয়েছে।
সিএনজি অটোরিকশা চালকদের দাবি, ঢাকা জেলার অন্তর্গত সিএনজিগুলোকে ঢাকা মহানগরে চলতে দিতে হবে এবং এর জন্য কোনো ধরনের মামলা দিতে পারবে না ঢাকা মহানগর পুলিশ।
অবরোধ করা সিএনজি চালকেরা জানিয়েছেন, সকাল থেকে বিআরটিএ ভবনের দুই গেট বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। বেলা ১১টার দিকে দুটি গাড়ি বিআরটিএ ভবন থেকে বের হতে চেষ্টা করলেও বের হতে দেওয়া হয়নি।

সিএনজি চালক নূরুল ইসলাম বলেন, আমরা শুরুতে বিআরটি ভবনের রাস্তার ফুটপাতে অবস্থান নিই সবাই। সোয়া ১২টার দিকে বনানী থেকে ফার্মগেটমুখী সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে উত্তরামুখী সড়কও বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এয়ারপোর্টগামী যাত্রীদের কথা চিন্তা করে আমরা ওই সড়ক ছেড়ে দেই প্রায় ঘণ্টাখানেক পর।
বিকেল ৪টায় সরেজমিনে দেখা যায়, হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলেও সড়ক ছেড়ে যাননি চালকেরা। সে সময় মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়, আপনারা কেউ সড়ক ছাড়বেন না। সড়ক ছাড়লে তাকে বেঈমান হিসাবে ভাবা হবে।
এ সময় সড়ক থেকে আন্দোলনকারীরা সরে না গেলেও কেউ কেউ এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ের নিচে ও পাশে থাকা ফুটওভার ব্রিজের ওপর-নিচে অবস্থান নেন।
এতে করে ফার্মগেটমুখী সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে উত্তরাগামী যানবাহনগুলোও পড়েছে যানজটের কবলে।
মাইকে বলা হয়, কেউ যেন বিআরটি ভবন থেকে বের না হতে পারে। একটা মানুষকেও যেন বের না হতে দেওয়া হয়। এখানে সব স্বৈরাচারের দোসর বসে আছে। পুলিশ প্রশাসন বিআরটিএ ভবনের ভেতরে ঢুকেছে, তারাও যেন বের হতে না পারে। বিআরটিএ চেয়ারম্যানও যেন এখান থেকে বের হতে না পারে।
জানা গেছে, ‘ঢাকা মেট্রো-থ’ সিরিয়ালের মতো ‘ঢাকা-থ’ সিরিয়ালের ৩ হাজার সিএনজি অটোরিকশা চালক ঢাকা মহানগরে তাদের অটোরিকশা চালাতে চান।
চালক নূরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী আমলে মাসিক চুক্তিতে টাকার বিনিময়ে পুলিশ আমাদের গাড়িগুলো ঢাকা মহানগরের মধ্যে ঢুকতে দিতো। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ‘ঢাকা-থ’ সিরিয়ালের গাড়ি মহানগরের মধ্যে ঢুকলে মামলা দেওয়া হয়।
আজ সকাল থেকেই ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিকশা মালিক-শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির অন্তর্গত সিএনজিচালকরা বিআরটিএ ভবনের সামনে একত্রিত হন। তাদের উপস্থিতি বাড়তে থাকলে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে প্রধান সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে মহাখালীগামী সড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তপ্ত রোদের মধ্যে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই পথের সাধারণ যাত্রীরা।

মালিক-শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি জুয়েল মালতীয়া বলেন, আমরা সকাল ১০টা থেকে এখন পর্যন্ত অবস্থান করছি। ঢাকা জেলার ২ থেকে ৩ হাজার গাড়ি (সিএনজি) মহানগরে চালানোর জন্য বারবার স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু বিআরটিএ বারবার আমাদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছে। ২০১৬ সালে আমাদের ২৬টি ইউনিয়ন কেটে নিয়ে ওয়ার্ড বানিয়েছে। মহানগর বড় বানিয়েছে। তাহলে আমরা যাব কোথায়। এখন আমার জায়গায় আমাকে বলে অবৈধ।
জুয়েল মালতীয়া আরও বলেন, আজকে আমরা বিআরটিএ ঘেরাও করেছি। বিআরটিএর একটি লোককেও বাইরে বের হতে দেব না। কারণ, এরাই রাষ্ট্রের দুষ্টু লোক। এরা ঘুষ খেয়ে এ ধরনের কাজ করে।