পুলিশ সদস্য গিয়াস হত্যা মামলা : কিশোর ফাইয়াজকে অব্যাহতি

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১৭ বছরের কিশোর হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ( ২০ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ জুলাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক অব্যাহতির এ আদেশ দেন।
এর আগে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মোল্লা মো. খালিদ হোসেন সংশোধিত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ (এ) ধারায় অর্ন্তবর্তীকালীন প্রতিবেদন দাখিল করেন। বিচারক সেই প্রতিবেদন গ্রহণ করে তাকে অব্যাহতির আদেশ দেন।
অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মামলায় উল্লেখিত ঘটনার সঙ্গে ফাইয়াজের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। যেহেতু মামলাটির তদন্ত শেষ করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, এ কারণে নতুন আইনে ফাইয়াজের অব্যাহতি চেয়ে সংশোধিত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ (এ) ধারায় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। তবে মামলার তদন্ত কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে চলবে।
নথি থেকে জানা গেছে, জন্ম নিবন্ধন অনুসারে, হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজের জন্ম ২০০৭ সালের ১৯ এপ্রিল। ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ঢাকার শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে সে। সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মাতুয়াইল হাসপাতালের বিপরীত পাশে এক পুলিশ সদস্যকে মেরে ঝুলিয়ে রাখার মামলায় ১৭ জন আসামির মধ্যে ১৬ নম্বর আসামি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের নায়েক গিয়াস উদ্দিন (৫৮), পরিবারসহ মাতুয়াইল মাতৃসদন হাসপাতালের বিপরীত পাশে ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করতেন। গত ১৯ জুলাই রাত আনুমানিক ৯টার গণভবনে সরকারি ডিউটি পালনের উদ্দেশ্যে তার ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলযোগে বাসা থেকে বের হন৷ যাত্রাবাড়ী থানার রায়েরবাগ ফুটওভার ব্রিজের উত্তর পাশে আসামাত্রই সাড়ে ৯টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতারা বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে দল দুটির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে উল্লিখিত আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেকে প্ররোচণা ও নির্দেশনায় পরস্পর যোগসাজশে পুলিশ পরিচয় নিশ্চিত হয়ে দেশের নাশকতা সৃষ্টির অংশ হিসেবে তাকে আটক করে। এরপর তাকে ধারালো অস্ত্রের মাধ্যমে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে।
এজাহারে আরও বলা হয়, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রাস্তায় পড়ে গেলে আসামিসহ অন্যান্য আসামিরা লোহার রড, লাঠি দিয়ে পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিনের নাক-কান, মুখমণ্ডল, গলা ও হাত, বুক, পেট, পিঠ, ডান পায়ের হাঁটুর নিচে গোড়ালির নিচে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে ঘটনাস্থলে নির্মমভাবে হত্যা করে। এরপর তাকে রশি দিয়ে ফুটওভার ব্রিজের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। মৃত্যুর পর মৃতদেহ নিয়ে উল্লেখিত আসামিরা ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা পৈশাচিক আনন্দে মেতে উঠে এবং মৃতদেহ গুম করার লক্ষ্যে উলঙ্গ করে তাতে আগুন লাগিয়ে পোড়ানোর চেষ্টা করে।
ওই ঘটনায় রাজধানী যাত্রাবাড়ী থানায় গত ২৪ জুলাই নিহতের ভগ্নিপতি ফজল প্রধান এ মামলাটি দায়ের করেন।