‘বাবা আমার মেয়েকে বাঁচাও’

রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সায়েম খান। নিজ ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার পর দুই ছোট বোনকে নিয়ে জাতীয় বার্ন ইউনিটে আসেন তিনি। এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, কীভাবে এই মানবিক কাজটি করেছেন।
সায়েম খান বলেন, ‘আমি কলেজেই ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ। দেখি আগুন জ্বলছে। এতো আগুন যে কাছে যাওয়ার মতো অবস্থা ছিল না। এর মধ্যে একটা বাচ্চাকে এগিয়ে আসতে দেখি। আমাকে দেখে ও বলছিল ভাইয়া আমাকে ধরো। কাছে এগিয়ে যেতেই আমার কাঁধের ওপর পড়ে যায়। ওর আইডি কার্ড আমি আমার কাছে রাখি। রিকশায় উঠে যখন হাসপাতালে রওনা দিই, তখন আরেক আন্টি বলছিলেন বাবা আমার মেয়েকে হাসপাতালে নেও। আমার মেয়েকে বাঁচাও। দু’জনকে রিকশায় নিয়ে উত্তরায় একাধিক হাসপাতাল ঘুরতে থাকি। কোথাও তেমন চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারিনি। এরপর অ্যাম্বুলেন্সে আলবিরাকে নিয়ে জাতীয় বার্ন ইউনিটে আসি।’
আলবিরার মা রওশন ইয়াসমিনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘সায়েম না বাঁচালে আমার মেয়ের কী হতো জানি না। ওকে আগে থেকে চিনি না। স্কুলের বড় ভাই হিসেবে সায়েম যে উদাহরণ তৈরি করেছে তা আমাদের পরিবারের জন্য আশীর্বাদ।’ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) বার্ন ইউনিটের পঞ্চম তলায় চিকিৎসাধীন আলবিরার শরীরে পাঁচ শতাংশ পুড়ে গেছে।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই শিশু আলবিরার মায়ের কাছ থেকে ‘বিদায়’ নিচ্ছিলেন সায়েম। এসময় আলবিরার স্কুলের আইডি কার্ড তার মায়ের হাতে তুলে দেন। সায়েম বললেন, ‘আন্টি এখন বাসায় যাচ্ছি। আবার আলবিরার খোঁজ নিতে আসব।’ এসময় চোখের কোনে অশ্রুসিক্ত আলবিরার মা যেন কুসুমকুমারী দাশের ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতার পঙক্তি উচ্চারণ করছিলেন—
‘আমাদের দেশে সেই ছেলে হবে কবে
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে।’