লক্ষ্মীপুরে টানা বৃষ্টিতে ১৫ কোটি টাকার ফসল-মাছের ক্ষতি

আষাঢ়ের শেষে টানা বৃষ্টিতে লক্ষ্মীপুর জেলার বিস্তীর্ণ সবজি ক্ষেত ও আমনের বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক ও মৎস্যচাষিরা। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, সবজি ও মাছ মিলিয়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সদর উপজেলার সুতারগোপ্টা, ভবানীগঞ্জ, পিয়ারপুর ও মিয়ার বেড়ি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এসব এলাকা সবজি উৎপাদনের মূল কেন্দ্র হওয়ায় ক্ষতির মাত্রাও বেশি। কৃষকরা শসা, পটল, বরবটি, পুঁইশাক, ঢেঁড়স, বেগুন, আগাম বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন বর্ষাকালীন সবজি চাষ করেছিলেন। তারা আগাম ফসল বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু বৃষ্টিতে সেই স্বপ্নে পানি ঢেলে দিয়েছে।
জেলায় এবার প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে অধিকাংশ ক্ষেতই পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি ১১০০ হেক্টর আমনের বীজতলার মধ্যে অন্তত ৫০০ হেক্টর বীজতলা নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
মৎস্য খাতেও ক্ষতির চিত্র ভয়াবহ। টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে জেলার প্রায় ৫০০ পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এতে করে আনুমানিক ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে লাভের আশায় সবজি চাষ করেছিলাম। কিন্তু কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেছে। সরকার যদি প্রণোদনা না দেয়, তবে না খেয়ে থাকতে হবে।
একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিরা জানান, গত বছরের বন্যার ক্ষতি এখনও পুষিয়ে উঠতে পারিনি। এবার আবার সব মাছ ভেসে গেছে। অধিকাংশই ধারদেনা করে চাষ করেছিলাম, এখন কীভাবে তা শোধ করবো সেই চিন্তায় দিন কাটছে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমাম হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে সবজি ও আমনের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তালিকার পর তাদের পুনর্বাসন ও প্রণোদনা দেওয়া হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, এবারের টানা বৃষ্টিতে ৫০০ পুকুর বা ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।