শ্রদ্ধা মানুষকে কর্মের মধ্যে অর্জন করতে হয় : বিচারক

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্লাহ এই আদেশ দেন।
এর আগে যাত্রাবাড়ী থানার তদন্ত কর্মকর্তা আসামি এ বি এম খায়রুল হককে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন।
ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আজ রিমান্ড চাওয়া হয়নি। শুধু কারাগারে আটকের আবেদন করা হয়েছে।
কারাগারে আটকের শুনানির সময় পিপি আজিজুল হক দিদার বলেন, ‘খায়রুল হক বিচার অঙ্গনকে কলঙ্কিত করেছেন। তার আমলে গুম, হত্যা ও অনেক মায়ের কোল খালি হয়েছে। তিনি প্রধান বিচারপতি না হলে বৈষম্যবিরোধী হত্যাকাণ্ড ঘটত না। খায়রুল হক খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করেছেন এবং শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।’
পিপি দিদার আরও বলেন, এই আসামির কারণে মানুষ এখন বিচার বিভাগকে সম্মান না করে থুতু মারে। আসামিকে জনগণের সামনে তুলে দেওয়া উচিত ছিল। আমরা ওনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আসামি কোর্টে আসছেন জনগণ জানলে তাকে ‘খবর করে ফেলতো’।
অপর পিপি কালাম খানও খায়রুল হককে ‘হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হওয়ার কারিগর’ এবং বিচার বিভাগকে ‘কলুষিত’করার জন্য অভিযুক্ত করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের পর জনগণ মিষ্টি বিতরণ করেছে।
শুনানি শেষে বিচারক বলেন, আপনারা বিচারকদের সম্মান শ্রদ্ধা করতেন। কিন্তু কিছু বিরূপ কারণে সেই শ্রদ্ধার জায়গা থেকে সরে এসেছে। শ্রদ্ধা মানুষকে কর্মের মধ্যে অর্জন করতে হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমণ্ডির বাসা থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
নথি থেকে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় কাজলা পুলিশ বক্সের সামনে গুলিবিদ্ধ হন কিশোর আব্দুল কাইয়ূম আহাদ। পরে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আবুল হাসান তার দুই পায়ে ব্রাশ ফায়ার করলে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আলা উদ্দিন ৪৬৭ জনকে এজাহারনামীয় আসামি এবং অজ্ঞাতনামা ১ থেকে ২ হাজার জনকে আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন।