জোয়ারের পানিতে তলিয়েছে সুন্দরবন

নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা। কোথাও সাড়ে তিন ফুট, আবার কোথাও আড়াই ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে বনাঞ্চল প্লাবিত হলেও বন্যপ্রাণী বা বনভূমির বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির জানান, শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরের জোয়ারে স্বাভাবিকের তুলনায় পানি বেড়ে আড়াই থেকে সাড়ে তিন ফুট উচ্চতা পর্যন্ত পৌঁছায়। এতে করমজল, জোংড়া, মরাপশুর, হাড়বাড়ীয়া, ঘাগরামারী ও লাউডোব এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করে। পাশাপাশি সাড়ে তিন ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে হিরণপয়েন্ট, কটকা ও কচিখালী এলাকার বনাঞ্চলও পানিতে তলিয়ে যায়।
আজাদ কবির বলেন, বনের ভেতরে যেখানে-সেখানে পানি উঠলেও বড় ক্ষতির শঙ্কা নেই। কারণ বনে ৪০টি টাইগার টিলা রয়েছে, যেগুলো তুলনামূলক উঁচু এবং বন্যপ্রাণীরা স্বাভাবিকভাবেই এইসব উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়। ফলে বাঘ, হরিণ, বন্য শুকরসহ অন্যান্য প্রাণীরা নিরাপদেই থাকে।
তিনি আরও জানান, ভাটার সময় অর্থাৎ দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার ব্যবধানে পানি নেমে যাওয়ায় প্রাণীদের ঝুঁকি থাকে না। তাছাড়া সুন্দরবনের অভ্যন্তরে থাকা ৮৮টি মিষ্টি পানির পুকুরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। কারণ এসব পুকুরের পাড় উঁচু হওয়ায় লবণাক্ত জোয়ারের পানি সেখানে ঢোকেনি।
জোয়ার বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, অমাবস্যা ও পূর্ণিমার সময় স্বাভাবিকভাবেই নদ-নদীতে পানি বাড়ে। কিন্তু এবার অমাবস্যার গোনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নিম্নচাপের প্রভাব। ফলে পানির উচ্চতা আরও বেড়েছে। সাধারণত গরমকালে দিনের জোয়ার বেশি হয়, রাতের জোয়ার কম। শীতকালে এর ঠিক উল্টো।
এদিকে, নিম্নচাপের জেরে মোংলার পশুর নদীর তীরবর্তী ফসলি জমি, ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তবে ভাটার সময় পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় এ এলাকায় বড় ধরনের ক্ষতি বা দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।