জোয়ারের পানিতে ৪ কিলোমিটার রাস্তা ভেঙে জনদুর্ভোগ

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচর। এই দ্বীপের একমাত্র পাকা সড়কটি জোয়ারের পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। যা এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টি ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে তীব্র জোয়ারের স্রোতে উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নের একমাত্র ইটের রাস্তাটি ভেঙে যায়।
আজ রোববার (২৭ জুলাই) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গত শুক্রবার সকালে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বেশকিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। তীব্র জোয়ারের স্রোতে উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নের একমাত্র ইটের রাস্তাটি ভেঙে যায়। ফলে এক প্রান্তের সঙ্গে অন্য প্রান্তের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ, রোগী ও জরুরি সেবার ওপর প্রভাব পড়েছে। এর আগে গত ২৯ মে নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের স্রোতে ঢালচর ইউনিয়নের মাঝের চর খাল এলাকার কাঠের ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে চর তারুয়া সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত রাস্তার প্রায় দুই কিলোমিটার ভেঙে যায়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের দিকে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি ইটের রাস্তা (এইচবিবিকরণ) করা হয়। ২০১৩ সালে নির্মাণ করা ঢালচরের এই ইটের রাস্তাটি বেড়িবাঁধ না থাকায় বারবার জলোচ্ছ্বাসের কারণে ভেঙে যায়। এ ছাড়া জোয়ার ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অবকাঠামোগত সমস্যা বেড়েই চলেছে এই চরে। এতে হতাশায় পড়েছে এ চরের বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইসমাইল বলেন, আমাদের একমাত্র রাস্তাটি স্রোতে ভেঙে গেছে। এখন আমাদের চলাচলে কষ্ট হচ্ছে। আমরা চাই রাস্তাটি দ্রুত মেরামত হোক।
চরের আরেক বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বলেন, কয়েক বছর ধরে ঢালচরে নদীভাঙন থামছেই না। নদী ভাঙন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। ঢালচরবাসীর দাবি রাস্তাটি মেরামত না হলে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করবে। রাস্তাটি নালায় পরিণত হবে। বিগত সরকারের আমলে এই চরে তেমন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। চরের বাসিন্দাদের প্রয়োজন আশ্রয়কেন্দ্র, উঁচু কিল্লা, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু কিছুই নেই এখানে। মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। চরটিতে নেই বেড়িবাঁধ। ফলে একটু জেয়ারেই প্লাবিত হয় নিম্নাঞ্চল। দুর্ভোগ পোহাতে হয় চরের বাসিন্দাদের।
চরফ্যাশন উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জি. এম. ওয়ালিউল ইসলাম বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানির স্রোতে ঢালচরের ইটের রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তাটি মেরামতের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশনা শারমিন মিথি বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঢালচরের আবকাঠামো ক্ষতির মুখে পড়ে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে রাস্তাটি মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।