শত কোটি টাকা নিয়ে ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ এমডির পালানোর গুঞ্জন, ওয়েবসাইট বন্ধ

দেশের অন্যতম অনলাইন এয়ার টিকিট বুকিং প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’-এর ওয়েবসাইট হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার গ্রাহক ও টিকিট বিক্রেতা এজেন্সি চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রায় শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিক দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
শনিবার (২ আগস্ট) সকাল থেকে ওয়েবসাইটটি অকার্যকর দেখা গেলে মতিঝিলে ফ্লাইট এক্সপার্টের কর্পোরেট অফিসে ভিড় জমান ভুক্তভোগীরা। কেউ ৮০ লাখ, কেউবা ২০-৩০ লাখ টাকা খুইয়ে দিশেহারা অবস্থায় সেখানে ছুটে আসেন।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, তারা ফ্লাইট এক্সপার্ট থেকে লাখ লাখ টাকার টিকিট কিনেছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে মোবাইলে ইস্যুকৃত টিকিটের রিফান্ড মেসেজ আসতে শুরু করে, যা শতাধিক ভুক্তভোগীকে বিপাকে ফেলেছে। যেসব ট্রাভেল ও হজ এজেন্সি ফ্লাইট এক্সপার্ট থেকে টিকিট কিনে বিক্রি করত, তারাও ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারছেন না বা তাদের টিকিট ও ওয়ালেটে জমা টাকার পরিমাণও দেখতে পারছেন না।
যদিও প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা ইস্যু করা টিকিটের রিফান্ড না করার আশ্বাস দিয়েছেন, তবে অন্য এজেন্সি থেকে ইস্যু করা টিকিটের ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারেননি। এ সময় কর্মকর্তারা গত রাতে কোম্পানির এমডির গোপনে দেশত্যাগের বিষয়টি স্বীকার করেন।
ফ্লাইট এক্সপার্টের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সিইও সালমান বিন রশিদ শাহ সায়েম। তিনি সহকর্মীদের উদ্দেশে লিখেছেন, তিনি একটি ‘পরিকল্পিত বিশ্বাসঘাতকতার’ শিকার হয়েছেন ও এর পেছনে 'সাঈদ হোসেন ও সাকিব' নামে দুজন জড়িত। তার অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবারের (৩১ জুলাই) মিটিংয়ে তারা সমস্ত দায় তার ওপর চাপিয়ে দেন ও তাকে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার সুযোগও দেওয়া হয়নি। তিনি আরও জানান, শনিবার সকালে তারা প্রায় তিন কোটি টাকা তুলে নেন ও তারপর কোম্পানির কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। দায় চাপানো ও হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তার জন্য ‘ছুটিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন' এবং 'এভাবে সরে যাওয়া তার উদ্দেশ্য ছিল না’ বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে মতিঝানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, প্রতিষ্ঠানটির মালিকের দেশত্যাগের ব্যাপারে থানায় একটি প্রাথমিক অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তবে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ জানানো হয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।