ভেঙে পড়েছে সেতু, সাঁকোই ভরসা

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাউনিয়ারচর এলাকায় ভেঙে পড়া একটি ব্রিজ যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে অবহেলিত যোগাযোগ ব্যবস্থার করুণ চিত্র। নদীর ওপর একমাত্র ভরসার সেই ব্রিজটি কয়েক বছর আগে বন্যায় ভেঙে যাওয়ার পর ১০ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। আপাতত বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি একটি দুর্বল সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন সবাই।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসময় একটি পুরোনো ব্রিজের ওপর দিয়েই চলাচল করত পারের চর, গয়টাপাড়া, গাছ বাড়ি, শান্তির চর, ডিগ্রীরচর, কাজাইকাটা, ইটালুকান্দা, চর ইটালুকান্দা, কাউনিয়ারচরসহ আশপাশের গ্রামের মানুষ। কিন্তু ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর এখন শিশু, বৃদ্ধ, নারী, শিক্ষার্থী, রোগী সবাইকে সেই সাঁকো পার হতে হয়। দুর্বল কাঠামোর সাঁকোটি বর্ষার দিনে আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।
স্থানীয় বাসিন্দা মহিয়েল বলেন, ব্রিজটা ভেঙে যাওয়ার পর সাঁকো দিয়ে কোনোভাবে পার হই। কিন্তু বাচ্চাদের নিয়ে চলাচলে ভয় লাগে। বৃষ্টির দিনে সাঁকো আরও পিচ্ছিল হয়ে যায়, তখন জীবনটা যেন হাতে নিয়ে চলি।
কৃষক আমির হোসেন জানান, আমরা ধান-পাট উৎপাদন করি। কিন্তু ব্রিজ না থাকায় ট্রাক বা ভ্যান আসতে পারে না। মাথায় করে টেনে আনতে হয়। এতে খরচও বাড়ে, সময়ও লাগে বেশি। ঠিকমতো বাজারজাত করতে না পারায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলের উন্নয়ন কার্যত থেমে গেছে। কৃষিপণ্য পরিবহণ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় স্থানীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া-আসায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আবু সাইদ বলেন, বিষয়টি আমরা ইউনিয়ন পরিষদে আলোচনা করেছি এবং উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরে জানিয়েছি। আশ্বাস পেলেও এখনও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
দাঁতভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান এসএম রেজাইল করিম বলেন, অনেকবার উপজেলা মাসিক সভায় ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছে। একটা ব্রিজের অভাবে এই এলাকার মানুষ অনেক কষ্টে চলাচল করছে।
রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী মুনছুরুল ইসলাম জানান, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ব্রিজ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।