এক দফা কোনো ব্যক্তি-দল থেকে নয়, জনগণের পক্ষ থেকে ঘোষণা হয়েছিল : নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের ঐতিহাসিক এক দফা কোনো ব্যক্তির পক্ষে নয়, কোনো দলের পক্ষে নয়। কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় নাই, সেদিন এক দফা ঘোষণা করা হয়েছিল বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে।
আজ রোববার (৩ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণার সমাবেশে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আজ ঐতিহাসিক ৩ আগস্ট। ঠিক এক বছর আগে আমরা এই শহীদ মিনারে সমবেত হয়েছিলাম। আপনারাসহ বাংলাদেশের মানুষ, এই ঢাকা শহরের মানুষ নেমে এসেছিল এই শহীদ মিনারে। এই শহীদ মিনার থেকে আমরা ঘোষণা করেছিলাম, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের, সেই ঐতিহাসিক এক দফা। এই এক দফা কোনো ব্যক্তির পক্ষে নয়, কোনো দলের পক্ষে নয়। কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় নাই, সেদিন এক দফা ঘোষণা করা হয়েছিল বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে, বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে, ফলে এক দফার ঘশক হলেন বাংলাদেশের জনগণ, অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা এবং আমাদের শহীদ ভাই ও বোনেরা।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘আমাদের এক দফা ঘোষণার একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ছিল। ওয়ান ইলিভেনের সময় থেকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ভিত্তি তৈরি করা হয়েছিল। ১৫-১৬ বছর বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছিল না, ভোটাধিকার ছিল না। গুম খুন নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। গণহত্যা হয়েছে। সর্বশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলন ২০২৪ এর শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে সন্ত্রাসী, ফ্যাসিস্ট বাহিনী নির্মমভাবে গুলি চালিয়ে আমাদের ভাই-বোনদের শহীদ করেছিল। বাংলাদেশের জনগণ আর মেনে নিতে পারে নাই। তারা দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছিল, একদফা ঘোষণা করেছিল—ফ্যসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের। আমরা দায়িত্ব ও দরদের রাজনীতির ঘোষণা দিয়েছিলাম। এক দফা কোনো ব্যক্তির পক্ষে নয়, কোনো দলের পক্ষে নয়, কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় নাই, সেদিন এক দফা ঘোষণা করা হয়েছিল।’
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা সাম্য ও মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক সুবিচারের ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম, আমরা এমন একটা রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করব, যেখানে স্বৈরতন্ত্র আর কখনোই ফিরে আসবে না, যেখানে ফ্যাসিবাদ আর কখনোই ফিরে আসবে না। ফ্যসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে, বন্দোবস্তের বিলোপ আমরা ঘটাতে পারিনি। আমরা এক বছরেও পারিনি পুরনো সংবিধানকে বাতিল করে নতুন সংবিধান তৈরি করতে। আমরা পারিনি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার যে স্তম্ভ ছিল, দুর্নীতিপরায়ণ অলিগার্ক ব্যবস্থা ছিল, যে লুটেরা অর্থনীতি ছিল, সেই অর্থনীতিকে ভেঙে দিতে। আমরা পাড়ি নাই ফ্যাসিবাদের দোসরদের সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করতে। আমরা পাড়ি নাই সেনাবাহিনীসহ প্রতিষ্ঠানকে জনগণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে। আমরা আমাদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেই আজ আমরা আবার এক বছর এই শহিদ মিনারে সমবেত হয়েছি আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নির্ধারণ করতে।’