প্রবাসীকে আনতে গিয়েই প্রাণ গেল একই পরিবারের ৪ নারী ও ৩ শিশুর

ওমান প্রবাসী বাহার উদ্দিনের দেশে ফেরা উপলক্ষে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন তার স্বজনরা। তবে ফেরার পথে এক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল তার স্ত্রী-কন্যাসহ পরিবারের সাত সদস্যকে।
আজ বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে উপজেলার চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের জগদীশপুরে এলে বাহার উদ্দিনের পরিবারকে বহন করা মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খালে পড়ে ডুবে যায়। এ ঘটনায় মাইক্রোবাসে থাকা নারী ও শিশুদের কেউ প্রাণে বাঁচতে পারেনি।
নিহতরা হলেন— বাহার উদ্দিনের নানি মোছা. ফয়জুন্নেসা (৮০), মা মোরশিদা বেগম (৫৫), স্ত্রী কবিতা বেগম (৩০) ও ভাবি লাবনী আক্তার (৩০) এবং মেয়ে মিম আক্তার (২), ভাতিজী রেশমী আক্তার (১০) ও লামিয়া (৯)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিমানবন্দর থেকে মাইক্রোবাসে করে লক্ষ্মীপুরের হাজিরপাড়া ইউনিয়নের চৌপল্লীতে গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন তারা। মাইক্রোবাসটিতে যাত্রী ছিলেন নারী ও শিশুসহ মোট ১১ জন। পথিমধ্যে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে খালে পড়ে যায়। এরপর চালকসহ পুরুষদের পাঁচজন কোনোমতে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারলেও পানির গভীরতা বেশি থাকায় নারী ও শিশুরা আটকা পড়েন।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিমের তথ্য অনুসারে, ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে সকাল ৬টা ৫ মিনিটে চৌমুহনী ফায়ার স্টেশনের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে।
তবে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিস যখন উদ্ধারকাজ শুরু করেছে, ততক্ষণে একে একে নিভে গেছে সাতটি জীবনপ্রদীপ। বাহারের বাবা ছগীর আলী এবং মাইক্রোবাসচালকসহ পাঁচজন আহত হলেও প্রাণে বেঁচে গেছেন। বাকিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাদের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেন চিকিৎসক।
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, পূর্ব চন্দ্রগঞ্জের জগদীশপুরে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে ডুবে যায়। কয়েকজন বের হতে পারলেও বাকিরা ভেতরে আটকা পড়ে মারা যান। তাদের সবাই নারী ও শিশু।
তিনি বলেন, গাড়িটি খাল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটি হাইওয়ে থানা পুলিশ উদ্ধার করে চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানায় রেখেছে।