মাইক্রোবাস খালে পড়ে নিহত ৭, শোকস্তব্ধ স্বজন ও প্রতিবেশীরা

আড়াই বছর পর ওমান থেকে দেশে ফিরে আসেন প্রবাসী বাহার উদ্দিন। তাকে নিতে পরিবারের ১১ সদস্য মাইক্রোবাসযোগে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। বিমানবন্দর থেকে ফেরার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাসটি সড়কের পাশে খালে পড়ে যায়। এতে পরিবারটির ৪ নারী ও ৩ শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
আজ বুধবার (৬ আগস্ট) ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে নোয়াখালী বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের পূর্ব বাজার এলাকায় লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এর আগে, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে বাহার উদ্দিনকে আনার জন্য পরিবারের সদস্যরা মাইক্রোবাসযোগে বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন।
বেঁচে ফেরা প্রবাসী বাহার উদ্দিনের বাবা আব্দুর রহিম জানান, ‘চোখে ঘুম নিয়ে মাইক্রোবাস চালাচ্ছিল চালক রাসেল। বারবার গাড়ি থামিয়ে বিশ্রাম নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল, কিন্তু চালক একটুও থামেননি। এর আগে কুমিল্লায়ও তারা দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে এসেছিলেন। কিন্তু বাড়ি থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে ঘুমিয়ে পড়া চালকের নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলে গাড়িটি সড়কের পাশে খালে পড়ে যায়। গাড়িটি ধীরে ধীরে ডুবছিল। সেই সময় চালককে গাড়ির লক খুলতে বললেও তিনি তা করেননি। নিজেই গাড়ির কাঁচ নামিয়ে বের হয়ে পালিয়ে যান এবং কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করেননি।’
দুর্ঘটনা থেকে বাহার উদ্দিন, তার বাবা আব্দুর রহিম, শ্বশুর ইস্কান্দার মীর্জা, ভাবি সুইটি ও শ্যালক রিয়াজ বের হতে পেরেছেন। কিন্তু বাহারের স্ত্রী কবিতা আক্তার (২৪), মেয়ে মীম আক্তার (২), মা মুরশিদা বেগম (৫০), নানী ফয়জুন নেছা (৭০), ভাতিজি রেশমা আক্তার (৯), লামিয়া আক্তার (৮) ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী আক্তার (২৫) সেখানেই আটকা পড়ে নিহত হন। নিহতরা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী এলাকার কাশারি বাড়ির বাসিন্দা।
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন ভূঁইয়া জানান, চালকের ঘুমিয়ে পড়ার কারণে গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। কয়েকজন যাত্রী বের হতে সক্ষম হলেও সাতজন গাড়ির ভিতরে আটকা পড়ে নিহত হন। তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।