জুলাই ঘোষণাপত্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানাল বিএনপি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’কে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। আজ বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানান। এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার দেশের ধ্বংসপ্রাপ্ত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোকে নতুন করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল অধ্যাপক ইউনূস যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করেছেন, বিএনপি তাকে স্বাগত জানাচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রূপান্তরের কাজ শুরু হবে। এর ফলে একটি সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে সত্যিকারের প্রগতিশীল বাংলাদেশ নির্মাণ প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে। তিনি এই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সব রাজনৈতিক দল, ছাত্র, কৃষক, শ্রমিকসহ সকল স্তরের জনগণ এবং শহীদ, আহত ও পঙ্গু হওয়া ব্যক্তিদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানান।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষ এক ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পরিকল্পিতভাবে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিল। তিনি অভিযোগ করেন, বিগত সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিল।
বিএনপির মহাসচিব জানান, এই সংগ্রামের কারণে বিএনপির প্রায় ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের সাজা দিয়ে ৬ বছর কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল, যিনি গত ৫ আগস্ট মুক্তি পেয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অনেক শীর্ষ নেতাকেও মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষের সেই সংঘবদ্ধ আন্দোলন ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে চূড়ান্ত রূপ নেয়, যার ফলে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এই অভ্যুত্থানের ফলে মানুষের মনে আবারো এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আশা সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব জানান, লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বৈঠকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, বিএনপি তাকেও স্বাগত জানায়। বিএনপি মনে করে, এই ঐতিহাসিক ঘোষণা দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠবে এবং গণতন্ত্রের পথকে সুগম করবে।
মির্জা ফখরুল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এবং সংশ্লিষ্ট সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে, দ্রুত রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারের বাকি কাজগুলো সম্পন্ন হবে।