নাটোরে সোনালী আঁশে ফিরছে সুদিন

নাটোরে সোনালী আঁশের দিন ফিরছে। ভালো দাম পাওয়ায় এবং চাহিদা বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা ক্রমেই পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ফলে জেলায় বেড়েছে আবাদি জমি, বেড়েছে উৎপাদনও।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার ২৯ হাজার ৮০৯ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে পাট চাষ হয়েছে ৩০ হাজার ৮৮০ হেক্টরে। এক দশক আগে যা ছিল প্রায় অর্ধেক। ইতোমধ্যে ১৩ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমির পাট কাটা শেষ হয়েছে, উৎপাদন হয়েছে ৪৬ হাজার ৪৯৯ টন। বিঘাপ্রতি গড় উৎপাদন ১১ দশমিক ৬২ মণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চলছে পাট কাটার ধুম। জলাশয়, বিল ও নদীর পাড়ে পাট ভেজানো, আঁশ ছড়ানো, শুকানো ও পাটকাঠি সংগ্রহের কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত নারী-পুরুষ। নারী শ্রমিকদের অংশগ্রহণও চোখে পড়ার মতো। অনেকেই পাটকাঠি নেওয়ার শর্তে আঁশ ছড়ানোর কাজে যুক্ত।
সিংড়ার লাড়ুয়া গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, এবার আষাঢ়-শ্রাবনে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। ফলে সহজেই পাট পচানো গেছে, খরচও কম হয়েছে। বিঘায় ১২ মণ ফলন পাচ্ছি।
বাঁশিলা গ্রামের আরিফুল ইসলাম বলেন, গম বা ডাল তোলার পর আমন মৌসুমের আগে পাট চাষ করলে জমি অনাবাদি থাকে না। আগাম পাট কেটে সহজেই আমন মৌসুম ধরা যায়।
গুরুদাসপুরের নাজিরপুর, সদরের তেবাড়িয়া ও সিংড়ার হাতিয়ান্দহ হাটে আগাম তোলা পাটের কেনা-বেচা জমে উঠেছে। হাতিয়ান্দহ হাটে কৃষক হারান প্রামানিক বলেন, সাড়ে তিন হাজার টাকা মণ দরে পাট বিক্রি করেছি।
নাটোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নীলিমা জাহান বলেন, আমাদের উপজেলায় গড় উৎপাদন বিঘাপ্রতি সাড়ে ১১ মণ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুল ইসলাম খান বলেন, এবার প্রচুর বৃষ্টির কারণে পাট জাগ দেওয়া সহজ হয়েছে। পরিবেশবান্ধব ও বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় দেশে-বিদেশে চাহিদা বাড়ছে। কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন, তাই পাট চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা ও প্রযুক্তি সহায়তা দিয়ে সবসময় কৃষকদের পাশে আছে।