চীনের ওপর শুল্কারোপের সময়সীমা কেন বাড়ালেন ট্রাম্প?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো চীনের ওপর শুল্ক আরোপের সময়সীমা ৯০ দিনের জন্য বাড়িয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত চীনের পণ্যের ওপর উচ্চতর শুল্ক আরোপ স্থগিত থাকবে। দুই দেশের বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ প্রশমিত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর আলজাজিরার।
গত মে মাসে জেনেভায় দুই দেশের মধ্যে ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিত করার চুক্তি হয়। এই চুক্তির ফলে চীনা পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমে ৩০ শতাংশে আসে ও মার্কিন পণ্যের ওপর চীনা শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমে ১০ শতাংশে নেমে আসে। এই চুক্তি নবায়নের ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য স্বাভাবিক থাকবে।
ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে আর্থিক বাজারগুলোতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। জাপানি ও অস্ট্রেলিয়ান শেয়ার বাজার রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে, তেলের দামও বেড়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই নমনীয়তার পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি থাকলেও উভয় দেশই একে অপরের ওপর গুরুত্বপূর্ণ পণ্য সরবরাহের জন্য নির্ভরশীল। চীনের মতো বড় অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হলে তা মার্কিন অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, ট্রাম্পের জন্য ইউক্রেন যুদ্ধ ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা সামলানোর এই মুহূর্তে চীনের সঙ্গে সরাসরি দ্বন্দ্বে জড়ানো কঠিন।
লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সের অধ্যাপক থমাস স্যাম্পসন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখে। তিনি মনে করেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বিচ্ছিন্ন করার ব্যাপারে ওয়াশিংটনে একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত রয়েছে।

এই শুল্ক স্থগিতাদেশের পর ট্রাম্প অক্টোবরের শেষের দিকে এশিয়া প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া ভ্রমণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যেখানে তার চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৈঠকটি দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের পথ খুলে দিতে পারে।
তবে, অধ্যাপক স্যাম্পসন মনে করেন, আমেরিকার দুই প্রধান রাজনৈতিক দলেরই একটা বিষয়ে মিল আছে— তা হলো, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক কমিয়ে আনা। তার মতে, এমনকি যদি অন্য কোনো প্রেসিডেন্টও ক্ষমতায় আসেন, তাহলেও যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে এই উত্তেজনা সহজে শেষ হবে না।