দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে কাজ করছে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি

প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার মধ্যদিয়ে দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করে যাচ্ছে গোপলগঞ্জ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১১ সালের শেষের দিকে ৪০ একর জমির ওপর এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে ২০২০ সালের জুনে তা শেষ হয়। যদিও এর আগে ১৯৯৭ সালে বিআরডিবির একটি প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেওয়াই ছিল এর মূল উদ্দেশ্য। এ প্রকল্পের আওতায় একাডেমি প্রাঙ্গণে দুটি ১০তলা ও দুটি ৬তলা ভবন, ২০০ আসনের আধুনিক অডিটোরিয়াম, পুরুষ ও নারী হোস্টেল, ভিআইপি গেস্টহাউস, পরিচালক বাংলো, অফিস ভবন, প্রদর্শনী কেন্দ্র, ডাইনিং হল, মসজিদ, স্টাফ কোয়ার্টার ও ওয়ার্কশপ নির্মিত হয়েছে।
১০তলা ভবনের ১৯টি ভেন্যুর মাধ্যমে একইসাথে ২ হাজার ৫০০ জন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন। রয়েছে ৫৪০ জনের আবাসনের ব্যবস্থা।
বর্তমানে এখানে গ্রাফিকস ডিজাইন, ফ্রিল্যান্সিং, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, আধুনিক কৃষি, মৎস্য চাষ, ইলেকট্রিক্যাল হাউস ওয়ারিং, প্লাম্বিং, মোবাইলফোন সার্ভিসিং, সেলাই-অ্যামব্রয়ডারি, ব্লক-বাটিকসহ ২০টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
২০১১ থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার বেকার মানুষকে এখানে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
অ্যামব্রয়ডারি ও সেলাই ট্রেডে প্রশিক্ষণ নিতে আসা বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার ঝর্ণা বিশ্বাস, সদর উপজেলার আসমা বেগম ও খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার বিজলী বাছাড় বলেন, আমরা এখানে ১ মাসের জন্য সেলাই প্রশিক্ষণে এসেছি। প্রশিক্ষণ শেষে এলাকায় গিয়ে টেইলার্সের দোকান করে নারী উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। এ ছাড়াও আমরা এলাকায় গিয়ে অন্য নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদেরকে স্বাবলম্বী করতে চাই।
তারা আরো বলেন, এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদের এলাকার অনেক নারীই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। আশা করছি আমরাও প্রতিষ্ঠিত হবো।

পল্লী উন্নয়ন একাডেমির যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ তোজাম্মেল হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, এ প্রতিষ্ঠানটি থেকে এ পর্যন্ত আমরা ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা আয় করেছি। এর মধ্যে কৃষি পণ্য বিক্রি থেকে ২০ লাখ, অডিটোরিয়াম ভাড়া থেকে ৪০ লাখ এবং আবাসন হোস্টেল থেকে ৩ কোটি টাকা আসে। এখানে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির পাশাপাশি পল্লীর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধির জন্য এ পর্যন্ত ৩৬টি সামাজিক ও প্রায়োগিক গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। মাছ চাষ, ভাসমান ধাপে সবজি চাষ, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ও বার্লি চাষ, সমুদ্র উপকূলীয় মহিষ পালনসহ বিভিন্ন উদ্ভাবনী গবেষণা ইতোমধ্যে সাফল্য পেয়েছে।
বর্তমানে অনুমোদিত ১০০টি পদের মধ্যে ৬৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। শূন্য পদে নিয়োগ পেলে একাডেমির কার্যক্রম থেকে আরো আয় বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।