শিক্ষা ও গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান অর্থ উপদেষ্টার

অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শিক্ষায়, গবেষণায় ও অভিযোজ্য প্রযুক্তিতে আরও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে; যাতে কৃষির ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হয়। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (এনএসইউ) অনুষ্ঠিত তৃতীয় কৃষি-জৈবপ্রযুক্তি যুব ফোরামের উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
ফোরামটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে এনএসইউ, ওআইসি কমস্টেক ও ইসলামিক অর্গানাইজেশন ফর ফুড সিকিউরিটি (আইওএফএস)।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এ জন্য আমি আমাদের জিনোম বিজ্ঞানীদের ধন্যবাদ জানাই। কৃষিতে পুষ্টি, স্থিতিশীলতা ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে জীবপ্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
অনুষ্ঠানে নীতি নির্ধারক, শিক্ষাবিদ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জৈবপ্রযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এনএসইউ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এম এ কাশেম, চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার, সদস্য বেনজীর আহমেদ ও ইয়াসমিন কামাল বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
আইওএফএস’র সহকারী মহাপরিচালক রাষ্ট্রদূত খুসরভ নোজিরি বিশেষ বক্তব্য দেন। অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন ওআইসি কমস্টেকের কো-অর্ডিনেটর জেনারেল অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী ও বাংলাদেশের জন্য কমস্টেক ফোকাল পার্সন অধ্যাপক ড. হাফিজুর রহমান।
সভায় এনএসইউর উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল হান্নান চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন ও এনএসইউর কোষাধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক আব্দুর রব খান বক্তব্য দেন।
রাষ্ট্রদূত খুসরভ নোজিরি বৈশ্বিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তা একটি সম্মিলিত চ্যালেঞ্জ। এই ফোরাম যুব বিজ্ঞানীদের জ্ঞান ভাগাভাগি ও নেটওয়ার্ক তৈরি করার সুযোগ দেয়। জনসাধারণের বিশ্বাস অর্জনের জন্য জিনোম প্রযুক্তি নিরাপদ, স্বচ্ছ ও নৈতিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।’
অধ্যাপক ড. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘জৈবপ্রযুক্তি কৃষি ও পুষ্টি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন পথ খুলে দিতে পারে। আমাদের যুব সমাজকে এ যাত্রার নেতৃত্ব দিতে হবে ও জ্ঞানকে বাস্তব সমাধানে রূপান্তর করতে হবে।’
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তা আজকের বিশ্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। এই সমস্যা মোকাবেলার জন্য আমাদের যুবকদের সঠিক সরঞ্জাম, আধুনিক প্রযুক্তি ও সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন, যাতে তারা বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে বাস্তব সমাধানে রূপান্তর করতে পারে।’
এনএসইউ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার বলেন, কৃষি মানবসভ্যতার মূল ভিত্তি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আজকের বিশ্বে বড় চ্যালেঞ্জ। উদ্ভাবনের মাধ্যমে আমরা কৃষকদের জন্য টেকসই সমাধান তৈরি করে দীর্ঘমেয়াদি খাদ্য স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারি।
সভাপতির বক্তব্যে এনএসইউর উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্য নিরাপদ ও টেকসই হতে হবে। জিনোম এডিটিং একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। ছাত্র ও যুব গবেষকদের অন্তর্ভুক্ত করে আমরা একটি প্রজন্মকে তৈরি করছি যারা খাদ্য নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে প্রস্তুত।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন উপ-উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) আবদুর রব খান। তিনি বলেন, ‘আজকের সংলাপ কেবল একটি অনুষ্ঠান নয়, এটি অর্থবহ সহযোগিতার নতুন পথ খুলেছে। একাডেমিয়া ও আন্তর্জাতিক সংস্থা একসঙ্গে কাজ করলে বাস্তবসম্মত সমাধান উদ্ভাবন সম্ভব।’
দুই দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে (১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর) বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সেশনের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে তুরস্ক, মালয়েশিয়া, আজারবাইজান, পাকিস্তান, কাজাখস্তান ও অন্যান্য দেশের বক্তারা অংশগ্রহণ করছেন।
আন্তর্জাতিক এই কর্মশালাটি কৃষি-জৈবপ্রযুক্তিতে জ্ঞান ভাগাভাগি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।