মরণফাঁদ বটতলা ব্রিজ, ঝুঁকিতে হাজারো মানুষ

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার জুমারবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব আমদিরপাড়া বটতলা এলাকার একটি ভেঙে পড়া ব্রিজ এখন হলদিয়া ও জুমারবাড়ি ইউনিয়নের মানুষের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত বছরের বন্যায় ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে একটি অস্থায়ী সেতু তৈরি করেছেন, যার ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছেন হাজারো মানুষ।
১৯৯৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে ১৯ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই এটি নড়বড়ে হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে এবং গত বছরের বন্যায় প্রবল স্রোতে ব্রিজটি পুরোপুরি ধসে যায়। এর দুই পাশের মাটিও ভেঙে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
কোনো বিকল্প রাস্তা না থাকায় স্থানীয়রা নিজেদের অর্থায়নে মুষ্টির চাল ও চাঁদা তুলে বাঁশ-কাঠের এই অস্থায়ী সেতুটি নির্মাণ করেছেন। এই সেতু দিয়ে শুধু হেঁটে চলাচল করা যায়। বাইক, সাইকেল বা অটোরিকশা পারাপারের সময় যাত্রীদের নেমে যেতে হয়, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এর ফলে প্রায় প্রতিদিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এই ব্রিজটি দিয়ে ৫০ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা ভয়ে পার হয়, রোগীদের নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয়। কখন যে এই কাঠের ব্রিজ ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে, তা কেউ জানে না।
আরেক বাসিন্দা রহিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ১৯৯৮ সালে নিম্নমানের কাজের কারণেই ব্রিজটি টেকেনি। সময় মতো সংস্কার করা হলে আজ এই দুর্ভোগ হতো না। আমরা দ্রুত নতুন ব্রিজ চাই।
ব্যবসায়ী আফসার মিয়া জানান, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় পণ্য পরিবহণের খরচ অনেক বেড়ে গেছে, যা তাদের ব্যবসায় ক্ষতি করছে। এই ব্রিজটি হলদিয়া ও জুমারবাড়ি ইউনিয়নের অন্তত আটটি গ্রামের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কৃষক এবং রোগীসহ হাজারো মানুষ এই সড়ক ব্যবহার করেন।
সাঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) নয়ন রায় বলেন, বর্তমানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য কোনো বাজেট নেই। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বাজেট পাওয়া গেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।