ঈদের বাজারে রমরমা জার্সির কেনাবেচা

রাজধানীর বিপনী বিতানগুলোতে ঈদের কেনাকাটা জমে উঠলেও পিছিয়ে নেই ফুটবলপ্রেমীদের জার্সি কেনা। হঠাৎ করেই জার্সি বিক্রি বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে বিক্রেতারা। তবে দাম একটু বেশি মনে হওয়াতে অস্বস্তি প্রকাশ করেও জার্সি কিনছেন ফুটবলপ্রেমীরা।
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার কয়েকটি দোকান ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের দুই শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান (২২) ও ইমতিয়াজ মোল্লা (২৩) এসেছেন নিউমার্কেটের জার্সির দোকানে। দল সমর্থনকে কেন্দ্র করে জার্সি কিনতে এসেও বন্ধুসুলভ কথা কাটাকাটি চলছে।
এদের ভেতরে নামজুল হাসান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিশ্বকাপ এসেই গেছে দরজায়। আগামী কাল ঈদ কাটাতে গ্রামের বাড়ি চলে যাব। জার্সি ছাড়া কি আর বাড়িতে যাওয়া যায়! আজ এলাম কিনতে। তবে দাম একটু বেশিই মনে হচ্ছে। ৫০০ টাকা দিয়ে আর্জেন্টিনার একটি জার্সি কিনলাম।’
এদিকে ইমতিয়াজ মোল্লা ব্রাজিলের সমর্থক। এখনো জার্সি কিনতে পারেননি। তবে ঘুরে ঘুরে দেখছেন তিনি। এর মধ্য নাজমুল ইমতিয়াজকে লক্ষ করে বলে উঠলেন, ‘জার্সি কেনা বাদ দিয়ে চল সেভেন আপ খাই।’ শুনেই তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠা মোল্লা বলে উঠলেন, ‘কাপটা নিয়েই তোকে সেভেন আপ খাওয়াব!’ এরপরে ইমতিয়াজ বলেন, ‘জার্সি কিনেই ফিরবো আজ। তবে দোকানীরা সুযোগ বুঝে দাম বেশি নিচ্ছেন। কিন্তু কী আর করার। ছোট ভাই আর আমার জন্য দুটো জার্সি কিনব আজ।’
মোতাহের চৌধুরী নামের একজন এসেছেন জার্মানির জার্সি কিনতে। তিনি বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই জার্মানির সাপোর্ট করি। ঈদের কেনাকাটা করতে এলাম নিউ মার্কেটে। একেবারে জার্সিটাও কিনে নিয়ে যাব ভাবছি।’
মায়ের দোয়া গার্মেন্টের জার্সি বিক্রেতা দীপন হোসেন শুভ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে খুব বেশি বিক্রি হচ্ছে জার্সি। ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার জার্সিই মূলত বেশি বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন মোটামুটি ৪০ হাজার টাকার বেশি জার্সি বিক্রি হচ্ছে। আর্জেন্টিনার জার্সি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ ভাগ, ব্রাজিলের ৩৫ ভাগ আর বাকি দলগুলোর ১০ ভাগ।’
তিনি আরো বলেন, ‘হঠাৎ করে বিক্রি বেড়ে যাওয়াতে সাপ্লাইও ঠিক মতো পাচ্ছি না। যেমন গতকাল আর্জেন্টিনার জার্সি শেষ হয়ে গিয়েছিল। তবে আজ আবার অল্প সংখ্যক এনেছি। এবার চাহিদা আনেক। এর আগেও কখনো এমন দেখিনি।’
আল্লাহুর দান নামের পাশের একটি জার্সির দোকানের বিক্রেতা রাজু আহম্মেদ বলেন, ‘ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে জার্সি। আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের জার্সিই বেশি বিক্রি হচ্ছে। মোট জার্সির ভেতরে ব্রাজিলের ৪৫ ভাগ এবং আর্জেন্টিনার ৪০ ভাগ জার্সি বিক্রি হচ্ছে। এরপরে তৃতীয় স্থানে জার্মানির জার্সি বিক্রি হচ্ছে ১০ ভাগ। বাকি ৫ ভাগ অন্য দলগুলোর জার্সি বিক্রি হচ্ছে।’
নিউ মার্কেটের মোতালেব ফ্যাশানের দোকানী মো. হাসিব বলেন, ‘আমাদের মূলত টি-শার্টের দোকান। তবে কয়েকদিন থেকে টি-শার্টের চেয়ে বেশি জার্সিই বিক্রি হচ্ছে। দোকানের মালিক বলেছেন আরো বেশি করে জার্সি তুলতে।’