ভোক্তার করের বোঝা বাড়বে

সহজে আদায়যোগ্য মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) এককভাবে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে সব ভোক্তার ওপর করের বোঝা বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি হোসেন খালেদ।
গতকাল বৃহস্পতিবার আগামী অর্থবছরের (২০১৬-১৭) প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ সময় ডিসিসিআই কার্যালয়ে অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতা শোনেন ডিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও ব্যবসায়ী নেতারা। এর পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হোসেন খালেদ এ কথা বলেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
প্যাকেজ ভ্যাট পুনর্বহাল রাখায় প্রধানমন্ত্রী,অর্থমন্ত্রীকে ডিসিসিআইর পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়।
ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে লক্ষ্য অর্জনে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে অর্জিত বিনিয়োগ ২১ দশমিক ৭৮ শতাংশকে ২৭ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, বন্দর ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের পাশপাশি বিনিয়োগ-সংক্রান্ত নীতিমালার সংস্কার আবশ্যক।’
ডিসিসিআই সভাপতি আরো বলেন, ‘২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৩ হাজার ৪০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশ কম। বিদ্যুৎ খাতে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয়ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই। তা ছাড়া বিদ্যুতের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা দরকার।’
‘আগামী অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৫ শতাংশ। সরকার এ ঘাটতি বাজেট মেটাতে গিয়ে ব্যাংক উৎস থেকে ৩৮ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।’
‘২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ ৭৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা থাকলেও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দুই লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৩৭ শতাংশ বেশি।’
হোসেন খালেদ বলেন, ‘সহজে আদায়যোগ্য ভ্যাট থেকে এককভাবে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ক্রয়ে পরোক্ষ করের বোঝা সব ভোক্তার ওপর পড়বে। কারণ, ভ্যাট থেকে ৭২ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও শুল্ক থেকে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’
প্রাতিষ্ঠানিক কর কমানোকে স্বাগত জানিয়ে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক কর কমানোয় তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য খাতে রপ্তানি বাড়বে। তবে গ্যাস-বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ পর্যাপ্ত হলেও এ প্রকল্পগুলো বস্তবায়নে আরো মনোযোগী ও সতর্ক হতে হবে।’