রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না চামড়াশিল্পে
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপের পাশাপাশি বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বেড়েছে ব্যাপকভাবে। তাই এ সময়ে ইতিবাচক হারে বেড়েছে প্রক্রিয়াজাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানিও।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাবে, বাংলাদেশ গত অর্থবছরে ১১৬ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করেছে। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ১১ কোটি ডলার হলেও রপ্তানি হয়েছে নয় কোটি ডলারের পণ্য।
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রায় না পৌঁছানোর বিষয়ে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পরিবেশদূষণের কারণে বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য বিদেশি ক্রেতারা কিনতে চাইছেন না।
নানা কারণে চামড়াশিল্পে ধস নেমেছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহিন আহমদ বলেন, ‘রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা কিন্তু আমরা ফুলফিল করতে পারব না। বিভিন্ন সমস্যার কারণে রিলোকেশন, অর্থ সংকট সবকিছু মিলে বৈশ্বিক-অর্থনৈতিক মন্দাসহ চামড়াশিল্পে একটা ধস নেমেছে।’
ফরচুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান এম আবু তাহের এনটিভিকে বলেন, ‘হাজারীবাগের হ্যাজার্ডাস পরিবেশে আমরা চামড়া প্রস্তুত করছি। কাজেই কোনো ব্র্যান্ড বায়ার, বড় বায়ার তারা আমাদের এখানকার চামড়া দিয়ে জুতাও কিনতে রাজি না, চামড়া কিনতে রাজি না। ফলে গত বছরে আমরা যে চামড়া কিনেছি, তার ৬০ পারসেন্ট চামড়া এখনো আমাদের কাছে রয়ে গেছে।’
চলতি অর্থবছরে মোট ১২২ কোটি ডলারের চামাড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তবে বড় এই লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে হলে পরিবেশগত মানদণ্ড মানা, কার্যকর বাজারজাতকরণ কৌশল গ্রহণসহ বেশ কিছু প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘হাই ভ্যালুর যে মার্কেটগুলো, যেখানে পরিবেশের মানদণ্ডগুলো ভোক্তার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, সেই জায়গায় আমাদের পণ্যকে আমরা পৌঁছাতে পারছি না। পরিবেশগত মানদণ্ড মেনে চলার ক্ষেত্রে সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো আসছে, এটিকে দ্রুতগতিতে মোকাবিলা করা এবং একটি কমপ্লায়েন্ট ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে পুরো চামড়াশিল্পকে উন্নীত করা, এটি আমাদের একটা আবশ্যক করণীয় ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক। কিন্তু এ জন্য শিল্পটিকে হতে হবে পরিবেশবান্ধব। তাই কাঙ্ক্ষিত রপ্তানি প্রবৃদ্ধির জন্য উন্নত বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী শিল্পটিকে পরিবেশবান্ধব করাটাই এ মুহূর্তে শিল্পসংশ্লিষ্টদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।