‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে সময় বাড়াতে ব্যবসায়ীদের উদ্যোগ নিতে হবে’

শুধু সরকারের জন্য অপেক্ষা না করে ব্যবসায়ীদের নিজ নিজ জায়গা থেকে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সময় বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, এত অল্পসময়ে শুধু সরকারের পক্ষে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সময় বাড়ানো প্রায় অসম্ভব।
আজ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন ও বাংলাদেশের প্রস্তুতি’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফের সভাপতি দৌলত আক্তার মালা।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আপনারা (ব্যবসায়ীরা) আপনাদের জায়গা থেকে বায়ারদের মাধ্যমে আমদানিকারক দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যান। শুধু ইউকে কিংবা কয়েকটি দেশে সমর্থন দিয়ে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন থামানো সম্ভব নয়। বায়ারদের মাধ্যমে তাদের দেশের সরকারের সমর্থন আনতে আপনাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যান।
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পথে বাংলাদেশ নেপাল ও লাওস থেকে ভালো অবস্থানে আছে জানিয়ে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, এখন কোনো ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। এই দুই দেশ যদি গ্র্যাজুয়েশন পেছানোর আবেদন করে, তাহলে বাংলাদেশও আবেদন করতে পারবে। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের একার পক্ষে সম্ভব না। ব্যবসায়ীদের নিজ উদ্যোগে প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে সময় বাড়াতে উচ্চ মানের লবিং করতে হবে। এটি ছাড়া এত অল্পসময়ের উদ্যোগে কোনোভাবেই সময় বাড়ানো সম্ভব হবে না।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটি (অস্ট্রেলিয়া) ইমেরিটাস প্রফেসর হিসেবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে তিনি বলেন, আমি আজ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করতে আসিনি। একজন গবেষক হিসেবে আমার গবেষণা তুলে ধরতে এসেছি। আমার দীর্ঘদিনের একটা সার্ভে আমি তুলে ধরব।
ওই সার্ভেতে আনিসুজ্জামান চৌধুরী দেখান, বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের জন্য নেপাল, লাওসসহ অনেক দেশের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিগত সরকারের সময়ে অনেক ভুয়া ও ম্যানিপুলেটেড তথ্য দিয়ে এই এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পথে এসে দাঁড়িয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন দেশের অর্থনীতি অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে রপ্তানি জট দূর হয়েছে, ন্যাশনাল ক্রেডিট রেটিং মূল্যায়ন শুরু হয়েছে, বন্ডেড সুবিধা, এগ্রিকালচারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। এখন আমরা যে অবস্থায় আছি তা অনেক দেশের তুলনায় ভালো।
কোরিয়া, ভিয়েতনাম, জিম্বাবুয়ের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, অতীতে অর্থনৈতিকভাবে এই দেশগুলো বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে পতিত হয়েছিল। কিন্তু তারা এলডিসি সুযোগ না নিয়ে নিজেরাই সফল হয়েছে। বাংলাদেশও চ্যালেঞ্জ নিলে সফল হতে পারবে বলে বিশ্বাস করি।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, বিজিএমইএ সভাপতির পক্ষে সংগঠনটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এনামুল হক খান, বিকেএমইএ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজের (বাপি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মোস্তাফিজুর রহমান, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজ প্রমুখ।