আপনি কি সৃষ্টিশীল?

পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ আছে। এক ধরনের মানুষ সারাজীবন একই কাজ করে যায় আর আরেক ধরনের মানুষ আছে যারা এক কাজ বেশি দিন করতে পারে না। সাধারণত সৃষ্টিশীল মানুষদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কাজে বা নতুন ধরনের কাজে জড়িয়ে পড়ার ঝোঁকটা বেশি দেখা যায়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ তাদের ভুল বুঝে থাকে। শুরুতে সবাই ধরে নেয় তাদের দিয়ে কিছু হবে না, কিন্তু পরে দেখা যায় সাফল্য তাদের পেছনেই ছুটছে। সৃষ্টিশীল মানুষদের কিছু লক্ষণ আছে, যা তাদের বাকিদের থেকে আলাদা করে। সৃষ্টিশীল মানুষের ১০ লক্ষ্মণ জানিয়েছে ক্যারিয়ার-বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্যারিয়ার এডিক্ট ডটকম।
১. একঘেয়েমি
সৃষ্টিশীল মানুষরা সবসময় এই সমস্যায় ভুগে থাকে। প্রথমে সব বিষয়ে তাদের খুব আগ্রহ থাকে। কিছুদিন যাওয়ার পরই তাদের আগ্রহ চলে যায় এবং তারা নতুন ধরনের কাজ খোঁজে থাকে। তাই এক ধরনের কাজ সৃষ্টিশীল মানুষদের পক্ষে বেশিদিন করা একেবারেই অসম্ভব।
২. স্বপ্ন দেখার ব্যারাম
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়- এই কথাটি সৃষ্টিশীল মানুষদের ক্ষেত্রে খাটে। তারা সারাক্ষণ স্বপ্ন দেখতে থাকে। সব স্বপ্ন হয়তো তাদের পূরণ হয় না, কারণ তাদের স্বপ্ন কখনো শেষ হয় না।
৩. শিশুতোষ
সৃষ্টিশীল মানুষদের মধ্যে শিশুতোষ বিষয়গুলো খুব বেশি দেখা যায়। তারা শিশুদের মতো আচরণ করে। অল্পতেই বিরক্ত হয়, চিৎকার চেচামেচি করে আবার কৌতুক শুনে জোরে হেসে উঠে। আনন্দ-বেদনা-উচ্ছ্বাস সব ক্ষেত্রেই তারা বাড়াবাড়ি করে। আবেগী হওয়ার কারণেই এমনটা করে তারা।
৪. তারা ব্যর্থ হয়, কিন্তু আবার চেষ্টা করে
একটা কথা আছে, ‘যখন আপনি মাটিতে পড়ে যান, তখন আপনি হেরে যান না। কিন্তু যখন আপনি উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা বাদ দিয়ে দেন, তখনই আপনি হেরে যান।’ সৃষ্টিশীল মানুষদের ক্ষেত্রে এটা বরাবরই ঘটে। তারা হুট করে কোনো কিছুর পেছনে তাদের সব মনোযোগ দিয়ে বসে। দেখা যায় প্রথমে তা সফল হয় না। কিন্তু তারা হাল ছাড়ার পাত্র নয়। ব্যর্থ হলেও তারা বারবার সফল হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে থাকে।
৫. হৃদয় দ্বারা চালিত
সৃষ্টিশীল মানুষরা বেশির ভাগ সময়ই তাদের হৃদয় দিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। মাথা দিয়ে তারা কম সময়ই চিন্তাভাবনা করে। সবসময় মনের কথা শুনতেই তারা অভ্যস্ত। মন যা চায়, সেটা নিয়েই মেতে থাকে তারা।
৬. সময়জ্ঞান থাকে না
যখন কোনো কাজে মজা পেয়ে যায় তারা তখন তাদের আর সময়জ্ঞান থাকে না। নাওয়া-খাওয়া সব ভুলে সেই কাজের পেছনেই সারা দিন ব্যয় করে। অনেক সময় ঘুমাতেও ভুলে যায় তারা। আর এই ক্ষ্যাপাটে স্বভাবের কারণেই তারা নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পারে।
৭. রাত জেগে কাজ করা
এটা স্বাস্থ্যের জন ভালো না হলেও সৃষ্টিশীল মানুষরা এভাবেই অভ্যস্ত। সবাই যখন ঘুমায় তখন তাদের কাজ শুরু হয় আবার সবাই যখন কাজ করে তখন তারা ঘুমায়।
৮. নিজের কাজ কখনো পছন্দ হয় না
এটাও এক বিড়ম্বনা সৃষ্টিশীল মানুষদের জন্য। তারা কখনোই নিজের কাজে সন্তুষ্ট হতে পারে না। খুব আগ্রহ নিয়ে একটা কাজ শেষ করার কিছুদিন পরই তাদের মনে হবে, কাজটা কিছুই হয়নি। তখন আবারও নতুন কিছু নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে তারা।
৯. চারপাশে খেয়াল রাখে
মাটির একটা ছোট পিপড়া থেকে আকাশের বিশাল বিমান- কোনো কিছুই সৃষ্টিশীল মানুষদের দৃষ্টি এড়ায় না। তারা সবকিছু খুব মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে। বিশেষ করে চারপাশের মানুষ এবং প্রকৃতি, কারণ সেখান থেকেই তারা কাজের অনুপ্রেরণা পায়।
১০. চাকরি করতে পছন্দ করে না
সৃষ্টিশীল মানুষদের দ্বারা কখনো দীর্ঘসময় চাকরি করা সম্ভব না। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পছন্দ করে এবং সেজন্যই আত্মকর্মসংস্থানের চেষ্টা থাকে তাদের মধ্যে। সুযোগ পেলেই চাকরি ছেড়ে নিজের মতো কাজ করা শুরু করার সাহস তারা রাখে, যদিও অনেক সময় সেজন্য তাদের কষ্ট স্বীকার করতে হয়।