শিক্ষার্থীদের শাটডাউনে অচল বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

৯ দফা দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীদের ডাকা অ্যাকাডেমিক শাটডাউনে অচল হয়ে পড়েছে বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। গতকাল শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই শাটডাউনের কারণে আজ রোববার (২৫ মে) শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অংশ নেননি।
এদিন তারা বিক্ষোভ সমাবেশ, প্রতিবাদী নাটক-গান মঞ্চস্থ করেছে। শিক্ষক-কর্মচারীরাও মৌন সম্মতি জানিয়ে পাঠদানসহ অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন। এর ফলে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকার পাশাপাশি কার্যত প্রশাসনিক কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে বরিশাল সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নের এই কলেজটিতে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে তাদের দাবিগুলো মেনে না নিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এর আগে শনিবার চার ঘণ্টা বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা শাটডাউনের ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থী এনামুল হোসেন ইরান বলেন, কয়েকদিন আগে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী ধ্রুবজিৎ কর্মকার পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার কারণে বহিষ্কৃত হন। এরপর তিনি আত্মহত্যা করেন। কম্বাইন্ড সিস্টেমে পরীক্ষার কারণে সে চাপ সামাল দিতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন বলে ইরান দাবি করেন।
শিক্ষার্থী শুভ সরকার বলেন, ২০১৬ সালের পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত প্রযুক্তি ইউনিটের অধীন সকল কলেজ ও ইনস্টিটিউটে বিদ্যমান ‘কম্বাইন্ড পরীক্ষা পদ্ধতি’ সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এছাড়া গুণগত শিক্ষা ও মূল্যায়ন নিশ্চিত করা হয়নি। এই কম্বাইন্ড একাডেমিক সিস্টেমের জটিলতার কারণে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে একাডেমিক ও মানসিক ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছেন। বিশেষ করে প্রশ্নপত্র প্রণয়নে অবহেলা। অযৌক্তিক মডারেশনের ফলে প্রায়শই সিলেবাসের বাইরে থেকে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হয়। ফলাফল প্রকাশেও বিলম্ব সৃষ্টি হচ্ছে। স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ডিপার্টমেন্টগুলোর জন্য আলাদা আলাদা পরীক্ষা কমিটি গঠনসহ ৯ দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান এই শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- পরীক্ষার সময়সূচি স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানভিত্তিক আলাদা হতে হবে; ব্যবহারিক পরীক্ষা তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে হবে; প্রশ্নপত্র মুদ্রণ ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকেই পরিচালিত হতে হবে; গ্রেডিংয়ে স্বচ্ছতা ও নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে হবে; শিক্ষকদের আচরণে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখাসহ প্রশ্নপত্র অবশ্যই পাঠ্যসূচির মধ্য থেকে করতে হবে।
এছাড়া দ্রুত ফলাফল ঘোষণা নিশ্চিতে ট্যাবুলেশন ও গ্রেডিং কার্যক্রম স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট পর্যায়ে একজন পরীক্ষা সমন্বয়ক নিয়োগ করা।