সাভারে শিল্পনগরীতে জমি বরাদ্দের দাবি
সাভারে চামড়া শিল্পনগরীতে চামড়া শিল্প খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান ও শ্রমিকদের আবাসনের জন্য জমি বরাদ্দের দাবি জানানো হয়েছে।
রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আজ সোমবার ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত চামড়াশিল্প সংশ্লিষ্ট সমন্বয় কমিটির এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।
মানববন্ধনে চামড়া সংশ্লিষ্ট ১০টি সংগঠনের প্রায় চার হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেয়।
সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম বলেন, ‘দেশের চামড়াশিল্প খাত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী দ্বিতীয় খাত। প্রায় ৭০ বছরের পুরানো এ সেক্টরকে পরিবেশবান্ধব স্থানে স্থানান্তর করা হলে উৎপাদন ও রপ্তানি আরো বাড়বে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ট্যানারি স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জন্য কোনো পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। নতুন শিল্পনগরীতে সরকারিভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা নেই।’
আবুল কালাম আরো বলেন, ‘চামড়াশিল্পের উন্নয়ন ও পরিবেশবান্ধব শিল্পনগরী তৈরিতে এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আগে বসবাসের জমি দিতে হবে। শুধু ট্যানারি শিল্প স্থনান্তর করলেই তা পরিবেশবান্ধব হবে না। এর পরিবেশ আন্তর্জাতিকমানের না হলে রপ্তানির ক্ষেত্রে লাভজনক হবে না। চামড়াশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জন্য ৫০ একর জমি বরাদ্দ দিতে হবে। এ দাবি আদায় না হলে ট্যানারি বন্ধসহ কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে।’
সংগঠনের সদস্য সচিব সুজাউল করিম নিপু বলেন, ‘চামড়া সেক্টর একটি বিশাল পরিবার। শুধু বড় ট্যানারির মালিকদের জন্য জায়গা বরাদ্দ দিয়ে এ খাতকে বাঁচানো যাবে না। লেদার কেমিক্যাল ব্যবসায়ী, লেদার অ্যান্ড গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স, লেদার কেমিক্যাল আমদানিকারক, চামড়া রপ্তানিকারক, লেদার ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলজিস্টসহ হাজার হাজার লোক জড়িত। তাদের বাদ দিয়ে শুধু ট্যানারিগুলোকে নতুন চামড়া শিল্পনগরীতে জমি বরাদ্দ দিয়ে সরকার অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে। পরিবেশবান্ধব নগরি গড়তে চামড়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহযোগী সংগঠনগুলোকেও জমি বরাদ্দ দিতে হবে।’
মানববন্ধনে নেতারা জানান, শ্রমিককর্মীদের বাসস্থান, তাদের সন্তানদের শিক্ষা, চিকিৎসা, বিনোদনসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত ছাড়া ট্যানারিগুলোর উৎপাদন কাজ চলবে না। এ ছাড়া চামড়া শিল্প সংশ্লিষ্টদের স্থানান্তর ও পরিবেশবান্ধব না হলে ট্যানারি স্থানান্তরে সুফল আসবে না। তাদের ছাড়া ট্যানারিগুলোও চলতে পারবে না।
বক্তারা বলেন, চামড়া শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতি, কেমিক্যাল সমিতি, কেমিক্যাল আমদানিকারক সমিতি, চামড়া প্রক্রিয়াজাত ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, চামড়াপণ্য তৈরি ও রপ্তানিকারকসহ কয়েকশ প্রতিষ্ঠানের স্থানান্তর প্রয়োজন। হাজারীবাগের সাড়ে ৩০০ ট্যানারির মধ্যে ১৫৫ ট্যানারিকে হেমায়েতপুরে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সংগঠনের জন্য জমি বরাদ্দ বা কোনো দিকনির্দেশনা নেই।
রাজধানী ও বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ রোধে ২০০৩ সালে হাজারীবাগ থেকে সাভারের হেমায়েতপুরে ট্যানারি স্থান্তান্তরের কাজ শুরু হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ে অধীনে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে ২০০ একর জায়গায় ১১৫টি শিল্পপ্লট নিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে নতুন চামড়া শিল্পনগরী।