ভারতে যাওয়ার পথে সীমান্তে শিশুসহ আটক ৩৫
অবৈধ পথে ভারতে যাওয়ার সময় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বালারহাট সীমান্তে নারী-শিশুসহ ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজন তাদের আটক করে।
খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ও বিজিবি এসে ওই বাড়িতে পাহারায় রাখে। আজ বুধবার সকাল ১১টার দিকে সবাইকে নিজ নিজ এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের বাড়ি খুলনা, সুনামগঞ্জ ও বাগেরহাট জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায়।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, অটোবাইকযোগে বালারহাট বাজার হয়ে সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল লোকজন। বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহ হলে অটোবাইক আটক করে জানতে পারে দালালরা তাদের ভারতে নিয়ে যেতে এ পথে এনেছে। পরে নারী-শিশুসহ ৩৫ জনকে বালারহাট বাজার সংলগ্ন নুর ইসলাম নুরুর বাড়িতে নেওয়া হয়। সবাই ক্ষুধার্ত ছিল। পরে তাদের খাওয়ানো হয়। রাতেই বিজিবির বালারহাট ক্যাম্পে ও ফুলবাড়ী থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে রাত ১২টার দিকে পুলিশ ও বিজিবি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
আটককৃতদের বাড়ি খুলনা সদর, মোড়েলগঞ্জ, জিয়ানগর, সুনামগঞ্জ, বাগেরহাট ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলায়।
এদের মধ্যে শামিম নামের একজন ও তার স্ত্রী জেসমিনকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন আটক স্বজনরা।
আটক লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে তাদের বাবা-মাসহ স্বজনরা দিল্লিতে রয়েছেন। তাদের সঙ্গে ঈদ করতে দালালদের সঙ্গে ভারতে যাওয়ার চুক্তি করে রোববার তারা সীমান্তে আসে। কিন্তু কাঁটাতার পার হওয়ায় সুযোগ না পাওয়ায় দালালরা তাদের একাধিক বাড়িতে রাখে। তারা আরো জানায়, খলিশাকোঠাল ও বালাতাড়ি সীমান্ত দিয়ে তাদের ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য দুই দেশের সীমান্তের দালালচক্র জনপ্রতি চার হাজার টাকা করে নেয়।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, তারা সীমান্ত এলাকার বাইরে আটক হয়েছে। তাদের যার যার নিজ গন্তব্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবির অধীন শিমুলবাড়ী কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার দীনেশ চন্দ্র বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে আটক লোকজনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নাগেশ্বরী বি-সার্কেলের পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান জানান, উদ্ধার হওয়া লোকজনের ২১ জন পুরুষ, ৮ জন নারী ও ছয় শিশু রয়েছে। তাদের কাছ থেকে লিখিত বক্তব্য নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও জানান, তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং পুলিশ, বিজিবি ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেন। সবার পরামর্শে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের।