আস্থাহীনতা থাকলেও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব : টিআইবি
আস্থাহীনতা থাকলেও দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।’
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ সোমবার রাজধানীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে সুশাসন ও শুদ্ধাচার বিষয়ে কার্যপত্র তুলে ধরে টিআইবি। প্রশ্নোত্তর পর্বে ঘুরে ফিরে আসে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে হলে তা নির্দলীয় নাকি দলীয় সরকারের অধীনে হবে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সংবিধান সংশোধনের কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের সুযোগ নেই এটা বাস্তবতা। আর দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কি না, তা নিয়ে আস্থার সংকট রয়েছে। তবে তা পুরোপুরি অসম্ভব নয়।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জনগণ, সব রাজনৈতিক অংশীজনসহ সবার মধ্যে একটা আস্থাহীনতার সংকট আছে, যে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কি না। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু নির্বাচন করা অসম্ভব। যদি পরিবেশটাকে নিশ্চিত করা যায়,রাজনৈতিক দলগুলো যদি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে তাহলে কিন্তু আমরা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন আশা করতে পারি।’ তিনি আরো বলেন, ‘এ সরকারের অধীনে যত নির্বাচন হয়েছে, কোনোটাই গ্রহণযোগ্য হয়নি এটা কিন্তু বলতে পারব না।’
নির্বাচনী ইশতেহারের কার্যপত্রে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলো ইশতেহারে যেসব অঙ্গীকার করে ক্ষমতায় গেলে তার বাস্তবায়ন দেখা যায় না। বিরোধী দলে থাকা রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অঙ্গীকারের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয় না। তাই অঙ্গীকারের কতটা বাস্তবায়িত হয় দেখার ব্যবস্থাও ইশতেহারে থাকা উচিত।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘খুব দুঃখের সাথে বলতে হয় এগুলো শুধু কাগজে পরিবর্তন হয়েছে অনেকক্ষেত্রে। প্রয়োগের ক্ষেত্রে, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ব্যাপক ঘাটতি। যেজন্য আমাদের চ্যালেঞ্জ দ্বিমুখী।’ তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচনী ইশতেহারে যে অঙ্গীকারগুলো করা হয় সেগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না, সেটা পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সেটার ওপর দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য চেষ্টা করা।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘অনেক ইতিবাচক সংস্কারকে ফেলে রাখা হয়েছে তাই নয় তা থেকে পিছিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা। শুধু তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নের জন্য যে সক্রিয়তার দরকার ছিল সেখান যেমন ঘাটতি, একই সঙ্গে এটা যেন বাস্তবায়ন সম্ভব না হয় সেটার জন্য আইন করা হচ্ছে। কাজেই আমরা দ্বিমুখী আচরণের মুখোমুখি।’
আগামী নির্বাচনের ইশতেহারে সংসদ কার্যকর করা, বিচার-বিভাগকে প্রকৃতভাবে স্বাধীন করা, প্রশাসনের নিয়োগ পদোন্নতি রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রাখা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দলীয়ভাবে ব্যবহার না করাসহ বিভিন্ন বিষয় বিষদভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় টিআইবি।