জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি ৪ লাখ মানুষ
যমুনাসহ শাখা নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে যমুনার পানি বেড়ে বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বলে জানিয়েছে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর ফলে জেলার সাতটি উপজেলার চার লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা গেছে, টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্রতিদিনই যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ শাখা নদীর পানি বেড়ে নদী তীরবর্তী এলাকা ছাড়াও বিস্তির্ণ জনপদে ছড়িয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে জামালপুর সদর, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার অন্তত ৪০টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার প্রায় চার লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও নলকূপ বন্যার পানিতে তলিয়ে দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকট।
এদিকে, প্রথম দফার বন্যায় পাওয়া ত্রাণ সহায়তা ফুরিয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বন্যা দুর্গতরা সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও বিভিন্ন উচু বাঁধ, সেতু ও সড়কে আশ্রয় নিয়েছে। দুর্গত এলাকার বেশিরভাগ জায়গায় স্থানীয় ও আঞ্চলিক সড়কে বন্যার পানি উঠে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে, গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে মেলান্দহ উপজেলার খাসিমারা গ্রাম থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে ইসলামপুর উপজেলার বামনা গ্রামে বরযাত্রী নিয়ে ফেরার পথে যমুনার শাখা নদীতে বলিয়াদহ ডেবরাইপেচ ব্রিজের গার্ডারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ৩০ থেকে ৩৫ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা ডুবে যায়। এ সময় সবাই সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও চারজন নিখোঁজ হয়। পরে স্থানীয়রা বিদুৎ আক্তার নামের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে মৃত অবস্থায় এবং দুজনকে অহত অবস্থায় উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আলফি নামের ১০ বছরের এক শিশু নিখোঁজ রয়েছে।
ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
নিহত বিদুৎ আক্তার পূর্ব বামনা গ্রামের ফলটু মিয়ার মেয়ে ও নিখোঁজ আলফি একই গ্রামের আবদুল মিয়ার মেয়ে।