করোনা : ফোন করলেই বাসায় যাবে গণস্বাস্থ্যের অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক
করোনার ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বাসায় বাসায় গিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। প্রাথমিকভাবে রাজধানীর নির্বাচিত কিছু এলাকায় প্রাথমিকভাবে এই চিকিৎসার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ‘ভ্রাম্যমাণ করোনা চিকিৎসা সেবা’ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম অনলাইনে যুক্ত হয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় গণস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়, করোনা রোগীর বাসা থেকে ফোন করলেই হাসপাতাল সুবিধাসম্বলিত অ্যাম্বুলেন্সসহ সেখানে চলে যাবেন গণস্বাস্থ্যের চিকিৎসক দল। গণস্বাস্থ্যের ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিমের চিকিৎসাসেবা পেতে ০১৭০৯-৬৬৩৯৯৪ ও ০৯৬০২১১১৯৪০ এই দুটি নম্বরে ফোন করতে হবে। এ ছাড়াও সিওডিসিরেড এসওএস (CodcRed SOS) অ্যাপসের মাধ্যমেও এই সুবিধা পাওয়া যাবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র জানায়, আজ থেকেই ঢাকার ভেতরে এই সেবা দেওয়া হবে। প্রথমে এই সেবা দেওয়ার জন্যে ঢাকার ধানমন্ডি, কলাবাগান, পুরান ঢাকা ও মিরপুর এলাকাকে নির্বাচন করা হয়েছে। আপাতত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই সেবা দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে তিনটি দল এই সেবা প্রদান করবে।
আইসিইউ সুবিধাযুক্ত অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রতিটি দলে থাকবেন সিনিয়র ও জুনিয়র চিকিৎসক, নার্স, প্যাথলজি টেকনোলজিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্ট ও স্বেচ্ছাসেবক। দলটির সঙ্গে যাবে একটি মোটরসাইকেল এবং পোর্টেবল এক্সরে মেশিন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আরও জানায়, গণস্বাস্থ্যের ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম যে ওষুধ দেবে, তার জন্যে কোনো টাকা নেবে না। এ ছাড়া করোনা পরীক্ষাসহ অন্যান্য যেসব পরীক্ষা করা হবে, সেগুলোর প্রায় অর্ধেক মূল্য নেবে প্রতিষ্ঠানটি।
ভ্রাম্যমাণ করোনা চিকিৎসা সেবার উদ্বোধন করে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ এটা। এটা যদি ঠিকমতো পরিচালনা করা যায়, সাধারণ মানুষ খুব উপকৃত হবে। করোনা পরিস্থিতিতে অনেক মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে না, পেলেও সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ এই সেবা যদি ভালোভাবে দেওয়া যায় মানুষের উপকার হবে।’
‘যুদ্ধে জিততে হবে, জিতব’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘করোনা মোকাবিলা করতে হলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা লাগবে। না হলে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। আর হতাশ হলে চলবে না, এ যুদ্ধে আমাদের জিততে হবে; আমরা জিতব।’
এ সময় চীনের টিকার কথা উল্লেখ করে এই চিকিৎসক বলেন, ‘বছরখানেক আগেই চীনের করোনা ভ্যাকসিন বাংলাদেশে ট্রায়ালের অনুমোদন দিতে বলেছিলাম। কিন্তু ওইসময় তারা সেটা শোনেনি। তারা যখন আসছিল তখন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখানে সরকারের ইচ্ছার বড় অভাব আছে। তাছাড়া সরকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এমন কিছু ব্যক্তিকে বসিয়েছে তারা কখন কী বলে তার কোনো ঠিক থাকে না।’
দেশে এখন পর্যন্ত অক্সিজেনের সংকট হয়তো দৃশ্যমান হয়নি তবুও অক্সিজেনের অভাবেও মানুষ মারা যাচ্ছে দাবি করে গণস্বাস্থ্যের এই ট্রাস্টি বলেন, ‘একটা ছোট আকারের অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করতে ৩০ কোটি টাকার মতো প্রয়োজন। সরকারের পক্ষ থেকে এই অর্থ খরচ করা কোনো বিষয় না। হাসপাতালগুলোকে এই অর্থ অনুদান হিসেবে দিলে তারা নিজেরাই প্রয়োজন অনুযায়ী অক্সিজেন উৎপাদন করে নিতে পারে। এক বছর ধরে এই কথাগুলো সরকারকে বলেও কিছু হলো না।’