Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

রোমান্টিক শহরে মেহজাবীন

বিয়ের পিড়িতে জেফ বেজোস - লরেন সানচেজ

জন্মদিনে রুক্মিণী

মি. অ্যান্ড মিসেস মেসি

নিউইয়র্কে পারসা ইভানা

প্রকৃতির কোলে কৌশানী মুখার্জি

মিষ্টি হাসিতে সাবিলা নূর

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

প্যারিসে রোমান্টিক মুডে মেহজাবীন-আদনান

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

ভিডিও
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৭
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৭
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩০
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৩
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬২
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
এই সময় : পর্ব ৩৮৩৬
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২০
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২০
গানের বাজার, পর্ব ২৩৭
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:০৩, ০৭ এপ্রিল ২০১৭
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:০৩, ০৭ এপ্রিল ২০১৭
আপডেট: ০০:০৩, ০৭ এপ্রিল ২০১৭
আরও খবর
‘মা’–একটি শব্দেই পূর্ণতা
দুর্ভাগা তোফাজ্জলের জীবনের সমাপ্তিটাও হলো নিঠুর নির্মমতায়
কেমন বাংলাদেশ দেখতে চাই
জয়ের ঘনঘন বক্তব্য বদলের ব্যাখ্যা দিলেন আলী রীয়াজ
পঞ্চাশোর্ধ্ব পাঠাগারগুলো টিকিয়ে রাখতে কী করা যেতে পারে

সাদাসিধে কথা

প্রোগ্রামিংয়ের আনন্দ : স্কুলের ছেলেমেয়েরা

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:০৩, ০৭ এপ্রিল ২০১৭
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:০৩, ০৭ এপ্রিল ২০১৭
আপডেট: ০০:০৩, ০৭ এপ্রিল ২০১৭

আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, মাস্টার্সে পড়ি। আমাদের স্যাররা একদিন ঠিক করলেন আমাদের কম্পিউটার শেখাতে হবে। শুনে আমরা খুবই উত্তেজিত, কম্পিউটারের নাম শুনেছি, কখনও দেখিনি, সত্যি কথা বলতে কী, জিনিসটা দেখতে কেমন, সেটা নিয়ে কোনও ধারণাও নেই।

মাঝে মাঝে কাউকে কাউকে দেখেছি, বিশাল কম্পিউটার ‘প্রোগ্রাম’ ঘাড়ে করে নিয়ে যাচ্ছেন শুনে যারা অবাক হচ্ছেন, তাদের বলছি, তখন কম্পিউটার প্রোগ্রামিং করার জন্য সেটা কার্ডে পাঞ্চ করতে হতো, প্রোগ্রামটা কম্পিউটারে চালাতে হলে সেই কার্ডগুলো নিয়ে যেতে হতো। যার প্রোগ্রাম যত বড় তার কার্ডের বান্ডিল তত বিশাল! সেগুলো আসলেই ঘাড়ে করে নিয়ে যেতে হতো।

যাই হোক, আমাদের ক্লাসের দশজনকে একদিন স্ট্যাটিস্টিকেল ব্যুরো কিংবা এই ধরনের কোনো একটি প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানে একজন কম্পিউটারের ওপর একটা লেকচার দিলেন তারপর এক বান্ডিল কম্পিউটার কার্ড কোথায় জানি ঠেসে দিলেন, কার্ডগুলো ঘ্যাচঘ্যাচ করে কোথায় জানি অদৃশ্য হয়ে গেল। খানিকক্ষণ পর তিনি জানালেন প্রোগ্রামটা সাফল্যের সঙ্গে ‘রান’ করেছে। কী ঘটেছে কী হয়েছে আমরা কিছুই বুঝতে পারলাম না।

আমি উঁকিঝুঁকি মেরে ঘরের ভেতরে কম্পিউটার নামক বস্তুটা দেখার চেষ্টা করলাম, বিশাল ঘরের বাইরে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, ভেতরে কী আছে জানি না। তাই কম্পিউটার নামক বস্তুটা আর নিজের চোখে দেখা হলো না, তাতে আমাদের কোনও ক্ষতি হলো না। কম্পিউটারের ওপর জ্ঞান অর্জন করে খুবই গম্ভীরভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্রছাত্রী হিংসাতুর দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকিয়ে রইলো!

এর কিছুদিন পর আমি পিএইচডি করার জন্য আমেরিকায় চলে গিয়েছি।  যে নিউক্লিয়ার ফিজিক্স ল্যাবরেটরিতে কাজ করি সেখানে প্রথমবার সত্যিকারের কম্পিউটার দেখতে পেলাম। দেয়াল ঘিরে এক মানুষ সমান উঁচু ঘরের একমাথা থেকে অন্যমাথা জুড়ে বিশাল কম্পিউটার! সেখানেও কার্ড পাঞ্চ করে প্রোগ্রামিং করতে হয়, আমিও প্রোগ্রামিং শুরু করেছি দেখতে দেখতে আমারও বিশাল বিশাল কার্ডের বান্ডিল জমা হতে শুরু করলো!

বছর খানেক পরে ঘরের এক মাথা থেকে অন্য মাথাজুড়ে থাকা বিশাল কম্পিউটার সরিয়ে নতুন একটা কম্পিউটার বসানো হলো, সেটা আকারে অনেক ছোট, স্টিলের আলমিরার সাইজ। কম্পিউটারের ঘরটা ফাঁকা ফাঁকা লাগতে থাকে। শুধু তাই না কার্ড পাঞ্চ করার যন্ত্র কার্ড রিডার সব উধাও হয়ে গেলো। এখন আমাদের রুমে রুমে ছোট ছোট টেলিভিশনের মতো মনিটর সঙ্গে একটা কী বোর্ড দেওয়া হলো। আমরা নিজেদের রুমে বসে কম্পিউটারে প্রোগ্রাম চালাতে পারি, দেখে নিজেরাই হা হয়ে গেলাম। দূর থেকে মানুষজন এই প্রযুক্তি দেখার জন্য আমাদের ল্যাবরেটরিতে আসতে থাকল।

আমি তখন আমার পিএইচডির জন্য কাজ করছি, মাঝে মাঝেই কম্পিউটারে কাজ করতে হয়, সে সময় হঠাৎ আবিষ্কার করলাম আমার প্রফেসর আমাদের গ্রুপের জন্যই একটা কম্পিউটার কিনে ফেলেছেন। একেবারে খেলনার মতো কম্পিউটার টেবিলের ওপর রাখা যায়, দেখে আমি হতবাক হয়ে গেলাম। আমি সেটাতে কাজ করি, যে ক্যালকুলেশন করার জন্য মাথার চুল ছিঁড়ে ফেলেছি সেটা এখন চোখের পলকে করে ফেলা যায়।

একদিন ল্যাবরেটরিতে কিছু একটা কাজ হচ্ছে আমি ঢুকতে পারছি না, কম্পিউটারে কাজ করতে পারছি না। উপায় না দেখে কম্পিউটার আর মনিটরটা একটা ট্রলির ওপর তুলে ঠেলে ঠেলে আমার অফিসে নিয়ে যাচ্ছি, আমার একজন প্রফেসর কিছুক্ষণ হা করে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো, তারপর বললো, ‘আমি নিজের চোখে এই ঘটনাটি দেখছি! বিশ্বাস হচ্ছে না!’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কী বিশ্বাস হচ্ছে না?’ প্রফেসর বললো, ‘একজন মানুষ আস্ত কম্পিউটার এক ঘর থেকে আরেক ঘরে নিয়ে যাচ্ছে! কী অবিশ্বাস্য ঘটনা!’

কিছুদিন পর সেই অবিশ্বাস্য ঘটনা থেকেও অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটলো। শুনতে পেলাম স্টিভ জবস নামের একজন মানুষ তার ‘অ্যাপেল’ কোম্পানি থেকে ম্যাকিন্টশ নামে একটা কম্পিউটার তৈরি করেছে সেটা হাতে করে নেওয়া যায়। শুধু তাই না, সেই অবিশ্বাস্য যন্ত্রটি অনেক ডিসকাউন্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কাছে বিক্রি করা হবে।

আমি শুনে মোটামুটি খেপে গেলাম, ঠিক করলাম যেভাবেই হোক সেটা কিনতে হবে। পিএইচডি স্টুডেন্টদের মাসিক বেতন খুবই কম। কষ্ট করে কোনোমতে খেয়ে-পরে থাকা যায়। কিন্তু ততদিনে বিয়ে করে ফেলেছি আমার স্ত্রীও আমার সঙ্গে পিএইচডি করছে সে কিভাবে কিভাবে আমার জন্য কিছু ডলার ম্যানেজ করলো এবং সেটা দিয়ে আমি ম্যাকিন্টশ নামের সেই কম্পিউটারটা কিনে আনলাম। সেই থেকে আমার জীবনটা অন্যরকম হয়ে গেলো।

প্রথম যেদিন নিজের হাতে তৈরি করা ফন্টে সেই কম্পিউটারের স্ক্রিনে বাংলা লেখা দেখতে পেলাম আমি সেই দিনটির কথা কোনোদিন ভুলতে পারব না। একজন মানুষের জীবনে একেবারে নিজের জন্য ব্যক্তিগত একটা কম্পিউটারের বড় একটা কিছু হতে পারে বলে আমার জানা নেই, সৃষ্টিশীল কাজের জন্য এর থেকে বড় কিছু আমার জীবনে পাইনি!

মজার কথা হচ্ছে, এখন যারা ডেস্কটপ কিংবা ল্যাপটপ ব্যবহার করে তারা নিশ্চয়ই আমার সেই ম্যাকিন্টশ কম্পিউটারের কথা শুনে হাসতে হাসতে মারা যাবেন। সেই কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম, লেখালেখির জন্য ওয়ার্ড প্রসেসর এবং ছবি আঁকার জন্য একটি সফটওয়্যার সবকিছু থাকতো একশ’ আটাশ কিলোবাইটের একটি ফ্লপি ডিস্কে! (না, আমি মেগাবাইট লিখতে গিয়ে ভুল করে কিলোবাইট লিখে ফেলিনি! আসলেই একশ’ আটাশ কিলোবাইট। সেই ফ্লপি ডিস্কে তারপরও কিছু জায়গা রাখা হতো নিজের কাজ কর্ম রাখার জন্য)!

২.

এতক্ষণ যে কথাগুলো লিখেছি সেটা হচ্ছে ভূমিকা। এখন আসল কথায় আসি। দেশের সবাই জানে কি না জানি না, আমাদের দেশে হাইস্কুলের ছেলেমেয়েদের জন্য কম্পিউটারের প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ‘প্রতিযোগিতা’ বিষয়টা আমার খুব পছন্দের বিষয় না, কারণ, প্রতিযোগিতার অর্থ হচ্ছে অন্যদের কোনোভাবে পিছনে ফেলে নিজে সামনে এগিয়ে যাওয়া। প্রতিযোগিতা মানেই হচ্ছে এক ধরনের স্বার্থপরতা!

কিন্তু ছেলেমেয়েদের কোনো ধরনের সৃষ্টিশীল কাজে ডেকে আনার জন্য এর থেকে কার্যকর অন্য কোনও উপায় আমার জানা নেই। আমরা যখন প্রথম এই দেশে গণিত অলিম্পিয়াড শুরু করেছিলাম, তখনও  কল্পনা করিনি এত সাড়া পাব, এত ছেলেমেয়ে অংশ নেবে। আমি নিজে যদি কখনও এই ধরনের অলিম্পিয়াড বা প্রতিযোগিতায় উপস্থিত থাকি তাহলে সারাক্ষণই ছেলেমেয়েদের বোঝাই প্রতিযোগিতাটা আমাদের মূল উদ্দেশ্য নয়, আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে একটা উৎসব।

যাই হোক, হাই স্কুলের ছেলেমেয়েদের এই প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতাটাও মোটামুটিভাবে একটা উৎসবের মতো। সিলেট এলাকায় এই উৎসবটির আয়োজন করা হয়েছিল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঠিক তখন সিলেট এলাকায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান হচ্ছে, সারাশহরে এক ধরনের টেনশন। শত শত ছেলেমেয়েদের নিয়ে এরকম অনুষ্ঠান না করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উপদেশ দিচ্ছে, তার মাঝে শত শত মেয়ে সময়মতো হাজির হয়ে গেছে।

আয়োজক আমাদের বিভাগের তরুণ শিক্ষকরা, তারা আমাকে ডেকে নিয়ে গেলো স্কুলের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলার জন্য। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রক্তচক্ষু না দেখার ভান করে আমি ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক কথা বলেছি। তারা আমাকে যে কথাগুলো বলেছে সেই কথাগুলো সবাইকে জানানোর জন্য এই বিশাল ইতিহাস লিখতে বসেছি!

ছেলেমেয়েরা আমাকে বলেছে তাদের অভিভাবকরা মোটেই চায় না যে, তারা কম্পিউটারে প্রোগ্রামিং করা শিখুক। তাদের বাবা মায়েরা চায় ছেলেমেয়েরা কোচিংয়ে, প্রাইভেটে মাথা গুঁজে পাঠ্যবই মুখস্থ করতে থাকুক। কারণ তাদের ধারণা কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিখে কোনও লাভ নেই। বাবা মায়ের ধারণা, জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পাওয়া।

ছেলেমেয়েদের কথা শুনে আমি একই সঙ্গে বিস্ময় এবং আতঙ্ক অনুভব করেছি। এটি কেমন করে সম্ভব যে আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের বাবা মায়েরা এত বড় একটা ভুল ধারণা নিয়ে থাকতে পারেন? আমি বিষয়টা নিয়ে যখন একটু চিন্তা করেছি তখন আমার মনে পড়েছে এই বয়সী ছেলেমেয়েরা আমার কাছে মাঝে মাঝেই আরও অভিযোগ করেছে, তারা বলেছে তাদের বাবা মায়েরা পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য কোনও বই পড়তে দেন না।

আমি তাদের বলি, একজনকে বই পড়তে না দেওয়া আর খেতে না দেওয়ার মাঝে কোনও পার্থক্য নেই। কোনও বাবা মা যদি তার সন্তানকে না খেতে দিয়ে মেরে ফেলতে চান, তখন চুরি করে হলেও কিছু খেয়ে প্রাণটা বাঁচিয়ে রাখার মাঝে যে রকম কোনও দোষ নেই ঠিক সে রকম চুরি করে গোপনে বাথরুমে বসে, গভীর রাতে চাদরের নিচে বাতি জ্বালিয়ে বই পড়ার মাঝে কোনও দোষ নেই। এই দেশের বাবা মায়েরা আমাকে যতই শাপশাপান্ত করুক না কেন, আমি ছেলেমেয়েদের যেকোনও মূল্যে বই পড়ার কথা বলে এসেছি এবং বলে যাব।

কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শেখার বেলাতেও একই কথা বলা যায়। যারা কম্পিউটারে কোনও ধরনের প্রোগ্রামিং করেছে তারা সবাই জানে বিষয়টা আসলে কিছু নিয়ম মেনে যুক্তিতর্ক বা লজিকের সাহায্যে কম্পিউটারকে কিছু নির্দেশ দেওয়া ছাড়া আর কিছু না। যারা কাজটি করে দেখতে দেখতে তাদের যুক্তি বা লজিকমাফিক কাজ করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। কাজটি করার জন্য মস্তিষ্ককে ব্যবহার করতে হয় তাই তাদের মস্তিষ্ক দেখতে দেখতে শাণিত হয়ে যায়।

একটি ছেলে বা মেয়ে যত বেশি তার মস্তিষ্ককে চিন্তা করার জন্য কাজে লাগাবে তার মস্তিষ্ক ততবেশি শাণিত হয়ে উঠবে এটা বোঝার জন্য কাউকে রকেট সায়েন্টিস্ট হতে হয় না। কম্পিউটারের সামনে বসে ফেসবুক করা যতখানি খারাপ, প্রোগ্রামিং করা ঠিক ততখানি ভালো। সবচেয়ে বড় কথা যে ছেলেটি বা মেয়েটি প্রোগ্রামিং করতে শিখে গেছে তার সামনে একটা নতুন জগৎ খুলে দেওয়া হয়েছে। সেই জগতে সে কী করবে কতখানি করবে তার কোনও সীমারেখা বেঁধে দেওয়া নেই।

মস্তিষ্ক ব্যবহার করতে অনেক সময় এক ধরনের পরিশ্রম হয়, অন্যদের কথা জানি না, আমার নিজের বেলায় ঠিক তার উল্টো। ক্লান্তির কারণে যখন আমি কিছুই করতে পারি না, একটি বই পর্যন্ত পড়তে পারি না তখনও কোনও বিচিত্র কারণে আমি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং করতে পারি। আমার জন্য সেটা এক ধরনের বিনোদন।

সেদিন একটি ছেলে আমার কাছে একটা ই-মেইল পাঠিয়েছে। সে লিখেছে তার খুব প্রোগ্রামিং শেখার ইচ্ছে কিন্তু তার বাবা তাকে বলছেন যে সে প্রোগ্রামিং শেখার জন্য ছোট তার এখনও বয়স হয়নি। কথাটি সত্যি নয়, প্রোগ্রামিং শেখার জন্য কোনও বয়সের দরকার হয় না। যারা লিখতে শিখেছে তারাই প্রোগ্রামিং করতে পারবে।

সত্যি কথা বলতে কী, ছোট শিশু যারা এখনও লিখতে শেখেনি তারাও যেন কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে হাতেখড়ি করতে পারে সে জন্য বিশেষ প্রোগ্রামিংয়ের ভাষা তৈরি হচ্ছে, যেখানে বাচ্চারা ছবি বা নকশা জুড়ে জুড়ে প্রোগ্রামিং করতে পারে। এমআইটির মিডিয়া ল্যাবে আমি নিজে সে রকম একটা কাজ দেখে এসেছি!

এত কথা অবশ্য বলারও প্রয়োজন নেই, কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে বয়স যে কোনো বাধা নয় সেটার সবচেয়ে ভালো উদাহরণ আমাদের চোখের সামনে। প্রোগ্রামিং সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে আমাদের দেশের যে প্রতিযোগিরা মেডেল নিয়ে এসেছে তারা ক্লাস নাইনে পড়ে!

শুধু তাই না, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ঘাঘু প্রোগ্রামারদের যখন প্রতিযোগিতা হয়, তখন মাঝে মাঝে এই বাচ্চাদের তাদের সঙ্গে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, তখন অবলীলায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েদের হারিয়ে দিতে পারে! কাজেই বয়স কোনও বাধা নয়।

ছোট ছেলেমেয়েদের উৎসাহ থাকলেই তারা কাজ করতে শুরু করে দিতে পারবে। যারা প্রোগ্রামিংয়ের কিছুই জানে না তারাও যেন একেবারে শূন্য থেকে প্রোগ্রামিং শুরু করতে পারে, সে জন্য চমৎকার কিছু বইও লেখা হয়েছে। কাজেই বিষয়টি আর জটিল নেই। প্রোগ্রামিংয়ে হাতেখড়ি করার জন্য দরকার এরকম একটা বই এবং একটা কম্পিউটার।

৩.

সত্যি কথা বলতে কী, প্রোগ্রামিং করার জন্য এখন কম্পিউটারেরও প্রয়োজন নেই, তার কারণ স্মার্টফোনেও প্রোগ্রামিং করার জন্য ‘কম্পাইলার’ (যেটা ব্যবহার করে কম্পিউটার প্রোগ্রাম লিখে সেটা চালানো হয়) পাওয়া যায়। আমি চালিয়ে দেখেছি; ছোট কী বোর্ডে আমার ভোটকা আঙুল দিয়ে সঠিক অক্ষর স্পর্শ করার জটিলতা ছাড়া আর কোনো সমস্যা হয়নি।

কাজেই বলা যেতে পারে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং করার বিষয়টি এই প্রথম শহরের সচ্ছল পরিবারের গণ্ডি থেকে বের হয়ে প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলেমেয়েদের কাছে পৌঁছে গেছে। আমি মনে করি এই প্রথমবার আমাদের দেশের ‘ডিজিটাল ডিভাইড’ দূর করার একটি সত্যিকারের সুযোগ এসেছে।

হাইস্কুলের ছেলেমেয়েদের প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা আয়োজন করার সময় আমাদের মাথায় রাখতে হয় কয়টি ল্যাবরেটরিতে কয়টি কম্পিউটার আছে, তাই সর্বোচ্চ কতজনকে প্রোগ্রামিং করার সুযোগ দিতে পারব।

সবাইকে সুযোগ দেওয়া সম্ভব হতো না, আমার ধারণা ঠিকভাবে পরিকল্পনা করতে পারলে ইচ্ছে করলে এখন থেকে আমরা যতজন ইচ্ছা ততজনকে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সুযোগ করে দিতে পারবো। ছেলেমেয়েরা শুধু বাসা থেকে তাদের বাবা-মা, বড় ভাই-বোন কিংবা নিজের স্মার্টফোনই নিয়ে হাজির হবে। একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার একটি গিনেস রেকর্ড করাও এখন এমন কিছু কঠিন নয়।

৪.

আমাদের এইচএসসির সিলেবাসে সি প্রোগ্রামিং নামে একটা বিষয় ছেলেমেয়েদের পড়তে হয়। যেহেতু দেশের সব কলেজে কম্পিউটার ল্যাবরেটরি নেই তাই ছেলেমেয়েদের কখনোই সত্যিকার প্রোগ্রামিং করার সুযোগ হয়নি। তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয় লিখিত পরীক্ষা দিয়ে। কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া যে কথা, খেলার মাঠে সাঁতারের পরীক্ষা নেওয়া সেই একই কথা।

পুরো বিষয়টা একটা বিড়ম্বনার মতো। যে খুব সুন্দর নাচতে পারে তাকে যদি আমি বলি, তুমি কাগজে লিখে দাও নাচার সময় হাত পা মাথা চোখ কখন কিভাবে নাড়াও, আমি তোমার নাচটি উপভোগ করব; আমি নিশ্চিত সেই মানুষ জন্মের মতো নাচা ছেড়ে দেবে। এখানেও সেই একই ব্যাপার কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে লিখিত পরীক্ষার কারণে ছেলেমেয়েরা প্রোগ্রামিং সম্পর্কে শুধু যে ভুল ধারণা পাচ্ছে তা নয়, প্রোগ্রামিংয়ের ওপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠছে।

এই প্রথম একটা সুযোগ এসেছে সবাইকে সত্যিকারভাবে প্রোগ্রামিং শিখিয়ে তাদের সৃষ্টিশীলতা একটা নতুন জগতে নিয়ে যাওয়ার। আমাদের ছোট একটি জীবন, সময়টা যদি উপভোগ না করি তাহলে কেমন করে হবে?

লেখক: কথাসাহিত্যিক, শিক্ষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. সাধারণ মানুষের জন্য সিনেমা দেখা এখন বিলাসিতা : আমির খান
  2. মৃগী রোগ ছিল ‘কাটা লাগা’ অভিনেত্রীর, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই হয় মৃত্যু
  3. বলিউডের ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালি আর নেই
  4. আমিরের ‘সিতারে জমিন পর’ সাত দিনে ১০০ কোটি থেকে আর কত দূরে?
  5. ৫০০ টাকায় শুরু করা কপিল শর্মা এখন শো প্রতি নেন ৫ কোটি
  6. ঝিমিয়ে পড়ল আমিরের ‘সিতারে জমিন পার’, আয় কমে কত?
সর্বাধিক পঠিত

সাধারণ মানুষের জন্য সিনেমা দেখা এখন বিলাসিতা : আমির খান

মৃগী রোগ ছিল ‘কাটা লাগা’ অভিনেত্রীর, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই হয় মৃত্যু

বলিউডের ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালি আর নেই

আমিরের ‘সিতারে জমিন পর’ সাত দিনে ১০০ কোটি থেকে আর কত দূরে?

৫০০ টাকায় শুরু করা কপিল শর্মা এখন শো প্রতি নেন ৫ কোটি

ভিডিও
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮৮
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮৮
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
এই সময় : পর্ব ৩৮৩৬
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৭
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৭
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৮
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৮
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬২
নাটক : প্রেশারম্যান
নাটক : প্রেশারম্যান

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x