আলোকিত তরুণদের প্রতিফলন হোক সিনেট রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনে
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/12/28/photo-1514447452.jpg)
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সজ্জিত, সাংস্কৃতিক রাজধানী ও দেশের অন্যতম প্রধান শিক্ষাঙ্গন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কলকাকলিতে মুখর থাকে সারা বছর। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরজুড়েই থাকে দর্শনার্থীদের আনাগোনা। আর শীতের সময়ে বাড়তি মাত্রা যোগ করে সুদূর সাইবেরিয়াসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা নানা প্রজাতির অতিথি পাখির কিচিরমিচির। এ জন্য শীতের সময়ে দর্শনার্থীদের সমাগম বেড়ে যায় বহুগুণে।
কিন্তু এ বছর বিশেষ কারণে ছয় দিনের নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়াতে আসা ইচ্ছুক সৌন্দর্যপ্রেমী মানুষেরা। কারণ, এরই মধ্যে ৩০ জুন ২০০১-এ মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া দীর্ঘ ১৬ বছর পর আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটদের সিনেট নির্বাচন। এ কারণে ২৫ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বেড়ানো, শিক্ষা সফর, যেকোনো ধরনের শুটিংসহ সব ধরনের কাজে দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়।
দীর্ঘ সময় পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে নতুন রূপ। আর দেশ ও দেশের বাইরে থেকে গ্র্যাজুয়েটদের সমাগমে মুখর হতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সেজেছে ১১৯ প্রার্থীর নানা রঙের ব্যানার, ফেস্টুন আর পোস্টারে। সম্মানিত গ্র্যাজুয়েট ভোটাররা এই ১১৯ জনের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে নেবেন তাঁদের পছন্দের আগামী দিনের ২৫ জন সিনেটরকে। তাঁরা প্রতিনিধিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী দিনের নীতিনির্ধারণে।
‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল জোট’-এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির ও কৃষক লীগের সভাপতি মো. মোতাহার মোল্লা। ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল গ্র্যাজুয়েট মঞ্চ’-এর নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম এ মতিন ও জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল আলম। অন্যদিকে বিএনপিপন্থীদের জাতীয়তাবাদী প্যানেল থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম সেলিম, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ ও সৈয়দ আবদাল আহমদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেসক্লাব। এ ছাড়া ৪৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিযোগিতা করছেন এই নির্বাচনে।
মেধাবী ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচনে যুক্ত হয়েছে প্রচারণার বহুমুখী মাধ্যম। যেহেতু গ্র্যাজুয়েট ভোটাররা ছড়িয়ে রয়েছেন সমগ্র বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, তাই ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়ার সুযোগের পাশাপাশি এসএমএস, ভয়েস মেইল, ফোন দিয়ে ভোট চাওয়া, ফেসবুকে প্রচারণাসহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যামে প্রচারণাই প্রাধান্য পাচ্ছে এবারের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটদের সিনেট নির্বাচনে। এরই অংশ হিসেবে আজ ২৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল জোট’ প্যানেল আয়োজন করেছে এক প্যানেল পরিচিতি সভা।
নির্বাচিত প্রার্থীদের মেধার প্রতিফলন, যোগ্যদের চিন্তা ও বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তই সিনেটের আগামী পথচলাকে করবে আরো গতিশীল—এমনটাই মনে করছেন গ্র্যাজুয়েট ভোটাররা।