Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

বিয়ের পিড়িতে জেফ বেজোস - লরেন সানচেজ

জন্মদিনে রুক্মিণী

মি. অ্যান্ড মিসেস মেসি

নিউইয়র্কে পারসা ইভানা

প্রকৃতির কোলে কৌশানী মুখার্জি

মিষ্টি হাসিতে সাবিলা নূর

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

প্যারিসে রোমান্টিক মুডে মেহজাবীন-আদনান

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

‘কনকা সেরা পরিবার’ সিজন- ৩ চ্যাম্পিয়ন ঢাকার শাহিদিন-ফারহানা পরিবার

ভিডিও
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৯
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
এই সময় : পর্ব ৩৮৩৬
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৬
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬২
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
নাটক : প্রেশারম্যান
নাটক : প্রেশারম্যান
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩০
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০৯:২৩, ০১ মার্চ ২০১৯
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০৯:২৩, ০১ মার্চ ২০১৯
আপডেট: ০৯:২৩, ০১ মার্চ ২০১৯
আরও খবর
‘মা’–একটি শব্দেই পূর্ণতা
দুর্ভাগা তোফাজ্জলের জীবনের সমাপ্তিটাও হলো নিঠুর নির্মমতায়
কেমন বাংলাদেশ দেখতে চাই
জয়ের ঘনঘন বক্তব্য বদলের ব্যাখ্যা দিলেন আলী রীয়াজ
পঞ্চাশোর্ধ্ব পাঠাগারগুলো টিকিয়ে রাখতে কী করা যেতে পারে

সাদাসিধে কথা

একটি সমাবর্তন ভাষণ

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০৯:২৩, ০১ মার্চ ২০১৯
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০৯:২৩, ০১ মার্চ ২০১৯
আপডেট: ০৯:২৩, ০১ মার্চ ২০১৯

ফেব্রুয়ারি মাসের ২৫ তারিখ ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আমি একটা ভাষণ দিয়েছিলাম। পৃথিবীটা কিছু বোঝার আগে খুবই দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। আমি লক্ষ্য করেছি তাই কম বয়সী তরুণ তরুণীদের সাথে কথা বলার সময়ও আমি বিশেষ কয়েকটা বিষয়ে আলাদা ভাবে কথা বলতে শুরু করেছি। এই ভাষণটাতেও একই ব্যাপার ঘটেছে। আমার কথাকে কেউ কোনো গুরুত্ব দেবে কিনা জানি না কিন্তু আমি ভাঙ্গা রেকর্ডের মত বলেই যাচ্ছি। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের কয়েক হাজার তরুণ তরুণীর সামনে যে কথাগুলো বলেছিলাম সেই কথাগুলো অন্যদেরকেও বলার ইচ্ছে করে। তাই আমার সেই ভাষণটির একটি দুটি লাইন ঘষা মাজা করে এখানে তুলে দিচ্ছি।

আমার প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা

আজকের দিনটি তোমাদের জীবনের খুবই আনন্দের একটি দিন! আমার খুবই ভালো লাগতো যদি আমি এখানে দাড়িয়ে আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সমাবর্তনের সাথে তোমাদের এই অসাধারণ সমাবর্তনটির তুলনা করে কিছু একটা বলতে পারতাম। আমি সেটা করতে পারছি না, তার কারণ আমাদের কোনো সমাবর্তনই হয়নি! সমাবর্তনে কতো আনন্দ হয় আমি জানি না, গাউন পরে সমাবর্তন বক্তার বক্তব্য শুনতে কিংবা বন্ধুর সাথে ছবি তুলতে কেমন লাগে সেটাও আমি জানি না! কাজেই তোমাদের দেখে আমি যেরকম আনন্দ অনুভব করছি, একই সাথে সেরকম একটুখানি হলেও হিংসাও অনুভব করছি!

১.

আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই আজকে আমাকে তোমাদের সামনে কথা বলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্যে। এখানে দাঁড়িয়ে আমার তোমাদের নতুন জীবনের স্বপ্নের কথা বলার কথা। একটি সময় ছিল যখন এই বিষয়টি ছিল অনেক কঠিন কারণ তখন স্বপ্ন দেখার বিশেষ কিছু ছিল না। আজ থেকে প্রায় অর্ধশতাব্দী বছর আগে আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম তখন আমার শিক্ষকেরা আমাকে বলেছিলেন, “বাবারা, তোমরা পড়তে এসেছ খুব ভালো কথা, কিন্তু জেনে রেখো এখান থেকে পাশ করে তোমরা কিন্তু কোনো চাকরী পাবে না, এই দেশে তোমাদের জন্যে কোনো চাকরী নেই, কোনো কাজ নেই!” সেটি ছিল সদ্য স্বাধীন হওয়া যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ। দেশটি তখন যত যুদ্ধ বিদ্ধস্তই হোক না কেন, সেটি কিন্তু ছিল নিজের একটি স্বাধীন দেশ। সেই দেশে যখন ইচ্ছা আমি মাথা উচু করে রাস্তায় হাঁটতে পারব, পাকিস্তান মিলিটারী গুলি করে আমাকে মেরে ফেলবে না, রাজাকার আলবদর ধরে নিয়ে যাবে না। সেই আনন্দটিই আমাদের জন্যে এতো তীব্র ছিল যে চাকরী বা কাজের মত বিষয়ের কোনো গুরুত্বই ছিল না! কাজেই এখন আমি যখন দেখি সরকারী চাকরীতে কোটার জন্যে তরুণ ছাত্র-ছাত্রীরা শুধু রাস্তায় নেমে আন্দোলন করে না, নিজেকে রাজাকার হিসেবে পরিচয় দেয় আমি অবাক না হয়ে পারি না।

আমি তোমাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, আমাদের সেই বাংলাদেশ থেকে তোমাদের বাংলাদেশ কিন্তু অনেক ভিন্ন। আমি আমার ছাত্রজীবন শেষ করে যখন কর্মজীবনে প্রবেশ করি তখন আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ১১০ ডলার। এখন তোমাদের মাথাপিছু আয় ১৭০০ ডলার থেকেও বেশি। (এটি কিন্তু যথেষ্ট নয়, ভিয়েনাম আমাদের পরে আমাদের থেকে খারাপ অবস্থা থেকে শুরু করে আমাদের থেকে অনেক ভালো অবস্থায় পৌছে গেছে!) যুক্তরাজ্যের প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে যে সামনের বছরগুলোতে সারা পৃথিবীর যে তিনটি দেশ খুবই দ্রুতগতিতে প্রবৃদ্ধির হার বজায় রাখবে তার একটি হচ্ছে বাংলাদেশ! কাজেই এখন তোমাদের নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখানো খুবই সহজ, আমার আলাদা করে তোমাদের কিছু বলতে হবে না, শুধু মনে করিয়ে দিতে হবে, ‘এটি তোমাদের বাংলাদেশ, তোমরা যেভাবে চাও সেভাবে এটিকে গড়ে তোলো!’

২.

আমি মঞ্চে দাড়িয়ে তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছি, তোমরাও উজ্জল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছ, এটি অপূর্ব সুন্দর একটি দৃশ্য। কিন্তু এটি কী শুধুই সুন্দর একটি দৃশ্য নাকি তার চাইতে বেশী আরো কিছু? নতুন সহস্রাব্দের শুরুতে পৃথিবীর বড় বড় গুণীজন অনেক ভেবে চিন্তে বলেছিলেন, ‘এখন থেকে পৃথিবীর সম্পদ হচ্ছে জ্ঞান।’ মাঠের ফসল বা তেলের খনি নয়, যুদ্ধাস্ত্রের কারখানা বা ইলেকট্রনিক ইন্ডাস্ট্রিও নয়,  পৃথিবীর সকল সম্পদ থেকেও বড় সম্পদ হচ্ছে জ্ঞান। গত চার বছর পরিশ্রম করে তোমরা সবাই সেই জ্ঞান অর্জন করেছ বলে আজ তোমরা আমার সামনে বসে আছ। যার অর্থ, আমি যখন তোমাদের দিকে তাকাই আমি আসলে একটা জ্ঞান ভাণ্ডারের দিকে তাকাই—সোনার খনি থেকেও মূল্যবান সম্পদের দিকে তাকাই। এই সম্পদের মূল্য কতো? শুধু টাকা বা ডলার দিয়ে এই সম্পদের মূল্য ঠিক করা যাবে না, এটি তার থেকে অনেক বেশী, কারণ এটি নির্ভর করে তোমাদের স্বপ্নের উপর। তোমাদের কল্পনাশক্তির উপর। তোমাদের আগ্রহের উপর, উৎসাহের উপর। তোমাদের পরিশ্রমের উপর। দেশের জন্যে তোমাদের ভালোবাসার উপর।

৩.

ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ একটি খুব সুন্দর কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন প্রত্যেক মানুষের তিনটি করে মা থাকে। একটি জন্মদাত্রী মা, একটি মাতৃভাষা এবং আরেকটি হচ্ছে মাতৃভূমি। এটি ফেব্রুয়ারি মাস, একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের নয়, এখন সারা পৃথিবীর মাতৃভাষা-দিবস। আমাদের মাতৃভাষাটি কতো মধুর সেটি জানতে চাও? খুব সহজ একটা উদাহরণ দিয়ে তোমাদের মনে করিয়ে দিতে পারি। আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের প্রথম লাইনটি হচ্ছে, ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। এর শেষ তিনটি শব্দ দিয়েও একটি বাক্য হতে পারে, সেটি হচ্ছে, ‘আমি তোমায় ভালোবাসি’। এই তিনটি শব্দ দিয়ে পারমুটেশান করে সব মিলিয়ে আমরা ছয়ভাবে বাক্যটি লিখতে পারি:

 আমি তোমায় ভালোবাসি আমি ভালোবাসি তোমায় তোমায় আমি ভালোবাসি

তোমায় ভালোবাসি আমি ভালোবাসি আমি তোমায় ভালোবাসি তোমায় আমি!

তোমরা কী লক্ষ্য করেছ, এই ছয়টি বাক্যের প্রতিটি কিন্তু শুদ্ধ বাক্য?

এবারে ইংরেজীর সাথে তুলনা করি?  I Love you এটাকে কী অন্য কোনোভাবে বলা সম্ভব? I you love? Love I you কিংবা Love you I? কিংবা You I love? You love I? চেষ্টা করে দেখো, মূল বাক্যটি ছাড়া অন্য কোনোটি কিন্তু গ্রহণযোগ্য নয়! এই ছোট উদাহরণটি দিয়েই কিন্তু তোমরা বুঝতে পারবে, আমাদের মাতৃভাষা কতো সাবলীল, কতো ছন্দময়। (সে কারনে মনে হয় বাঙ্গালী তরুণ তরুণীদের মাঝে কবি সবচেয়া বেশী!) এরকম অনেক উদাহরণ দেয়া সম্ভব। তোমরা নিজেরাই সেগুলো খুঁজে বের করতে পারবে। ইংরেজী ভাষার আগ্রাসনে আমরা যখন ব্যতিব্যস্ত, তখন ভাষার মাসে প্রিয় মাতৃভাষার জন্যে কী আমরা একটুখানি ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারি না?

আমাদের আরেকজন মা হচ্ছে আমাদের মাতৃভূমি। তোমরা জান এই মাতৃভূমি কেউ এমনি এমনি আমাদের হাতে তুলে দেয়নি, অনেক মূল্য দিয়ে এটি আমাদের কিনতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর লন্ডন টাইমস লিখেছিল, ‘যদি রক্ত স্বাধীনতার মূল্য হয়ে থাকে তাহলে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ মূল্যে স্বাধীনতা কিনেছে’। সেই মাতৃভূমি হচ্ছে আমাদের আরেকটি মা। আমার জন্মদাত্রী মা যদি বৃদ্ধা হয়, অশিক্ষিতা হয়, অসুন্দর হয়, সাধাসিধে হয় তবুও তাকে ফেলে যেরকম একজন কমবয়সী স্মার্ট সুন্দরী মহিলাকে আমরা মা ডাকি না, দেশের বেলাতেও সেরকম। আমার দেশটি যদি দরিদ্র হয়, দুঃখী হয়, সাধাসিধে হয়, দুর্নীতিতে জর্জরিত হয়, তারপরও আমি আমার নিজের দেশ ছেড়ে আরেকজনের ঐশ্বর্যশালী, চকচকে, জৌলুসে ভরা একটি দেশকে নিজের মাতৃভূমি বলে গ্রহণ করে ফেলি না। আমাদের মা’দের প্রতি আমাদের দায়িত্ব আছে, আমরা কী নিজেদের জিজ্ঞেস করতে পারি, আমি কি আমার মায়ের সেই দায়িত্ব পালন করেছি? আমার জন্মদাত্রী মা, আমার মাতৃভাষা এবং দেশ মাতৃকা?

৪.

আমাকে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা নিশ্চয়ই ভেবেছেন আমি তোমাদের নতুন জীবনের সন্ধিক্ষণে কিছু উপদেশ দিতে পারব। আমি সেটা কতোটুকু পারব জানি না। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতার কিছু অংশ তোমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারি। যে বিষয়গুলো শেখার জন্যে আমার চুলে পাক ধরা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে তোমরা অনেক কম বয়সেই সেই অভিজ্ঞতার কথা জানতে পারবে, তুমি তোমাদের নিজের জীবনে সেটি ব্যবহার করবে কি করবে না সেটা তোমাদের নিজেদের ব্যাপার!

আজ থেকে প্রায় দুই যুগ আগে কার্নেগী মিলন ইউনিভার্সিটিতে হার্বাট সাইমন নামে একজন অনেক বড় মানুষের সাথে আমার সময় কাটানের সুযোগ হয়েছিল। তোমরা যারা তাঁর নাম শুনেছ তারা জানো, তিনি ১৯৭৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। আজকাল ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ নামে যে শব্দটি আমরা সারাক্ষণ শুনতে পাই তিনি প্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। আমার দীর্ঘজীবনে আমি যে কয়জন অস্বাভাবিক বুদ্ধিমত্তার মানুষ দেখেছি তিনি ছিলেন তার একজন। তাঁর সাথে কথা বলার সুযোগটি ছিল আমার জন্য একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা। অনেক কথার মাঝে তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাটি ছিল কিন্তু খুবই বিচিত্র, যেটা আজকে এখানে আমি তোমাদের বলতে চাই।

যে সময়ের কথা বলছি তখনো ইন্টারনেটের প্রচলন হয়নি, ই-মেইল মাত্র ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। আমরা সবাই তখন ই-মেইল নিয়ে খুব উত্তেজিত, যে চিঠিটি পৌঁছাতে আগে এক সপ্তাহ লেগে যেতো সেটি এখন মুহূ্র্তে চলে যাচ্ছে, উত্তেজিত না হয়ে উপায় কী? আমি অবাক হয়ে আবিস্কার করলাম হার্বাট সাইমন কিন্তু ই-মেইল নিয়ে মোটেও উত্তেজিত নন তিনি বরং খানিকটা বিরক্ত! তিনি বললেন হঠাৎ করে সবাই আমাকে ই-মেইলে রাজ্যের তথ্য পাঠাতে শুরু করেছে! আমার যখন প্রয়োজন হবে আমি তখন সেই তথ্য খুঁজে নেব কিন্তু অন্যেরা কেন না চাইতেই আমাকে অপ্রয়োজনীয় তথ্য পাঠাবে? আজ থেকে বিশ বছর আগে মানুষেরা তখনো তথ্য দিয়ে ভারাক্রান্ত হতে শুরু করেনি কিন্তু হার্বাট সাইমন তখনই বিপদটি টের পেয়েছিলেন, তিনি নিজের মত থাকতে চান, অন্যেরা কেন তার নিজের স্থানটুকুতে নাক গলাবে?

আমার বয়স কম ছিল, খানিকটা গোঁয়ারের মত এতো বড় একজন মানুষের সাথে তর্ক করে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম যে নেটওয়ার্কিং বিশাল একটা ব্যাপার, তথ্যের অবাধ প্রবাহ হচ্ছে সভ্যতার চিহ্ন, আমাদের এটা গ্রহণ করতে হবে। হার্বাট সাইমন আমার কথাকে কোনো গুরুত্ব দেননি, হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন—আজ প্রায় পঁচিশ বছর পরে হঠাৎ করে আমি হার্বাট সাইমনের সেই কথাগুলোর মর্ম বুঝতে শুরু করেছি। আমাদের চারপাশে তথ্য প্রযুক্তির অতিকায় দানবেরা—ফেসবুক, গুগল, মাইক্রোসফট, আমাজন, কিংবা আপেল—আমাদের সবাইকে তাদের নেটওয়ার্কে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে! ইন্টারনেটের কানাগলিতে আমাদের একাধিক প্রজন্ম পুরোপুরি হারিয়ে গেছে। চারপাশে শুধু তথ্য আর তথ্য। প্রয়োজন থাকুক আর নাই থাকুক, হয় আমি সেই তথ্য দিচ্ছি না হয় সেই তথ্য নিচ্ছি। আমার নিজের সম্পর্কে আমি যতটুকু জানি তথ্য প্রযুক্তির অতিকায় প্রতিষ্ঠানগুলো তার চাইতে অনেক বেশি জানে। সোস্যাল নেটওয়ার্ক নামের বিচিত্র এক মাদকে সবাই আসক্ত। ডাইনিং টেবিলে বসে ছোট ছেলেটি সিগারেট খেলে বাবা মায়েরা চমকে উঠেন, কিন্তু স্মার্ট ফোনে ফেসবুকে মগ্ন হয়ে থাকলে তারা কিছুই মনে করেন না, যদিও দুটোর মাঝে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই, দুটিই কিন্তু আসক্তি। একবার আক্রান্ত হলে দুটোর আরোগ্যের জন্যে একই ধরণের নিরাময় কেন্দ্রে যেতে হয়।

কাজেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবার জন্যে বিষয়টি আমি তোমাদের হাতেই ছেড়ে দিচ্ছি। তোমরা কী স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ, নোটবুক এবং টেলিভেশনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকবে, নাকি তোমার পাশে বসে থাকা রক্ত মাংশের টগবগে জীবন্ত একজন মানুষের চোখের দিকে তাকাবে? আমার আজকের বক্তব্য থেকে তোমরা যদি একটা মাত্র বাক্য মনে রাখতে চাও, তাহলে আমার এই বাক্যটি মনে রেখো: ‘তোমরা যত ইচ্ছা প্রযুক্তিকে ব্যবহার কর, কিন্তু প্রযুক্তি যেন কখনো তোমাদের ব্যবহার করতে না পারে।’

৫.

তোমরা বাংলাদেশের একটি সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বের হতে যাচ্ছ। তোমরা কী লক্ষ্য করেছ তোমার বিদ্যাপীঠটিকে বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়? একটি গ্রামের নয়, একটি শহরের নয়, একটি বিভাগের নয়, এমনকি একটি দেশেরও নয়—এটি সারা বিশ্বের একটি বিদ্যালয়। ইংরেজিতে এই বিদ্যাপীঠটি আরো বেশি ব্যাপক, ইউনিভার্সিটি—অর্থাৎ পুরো ইউনিভার্স বা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বিদ্যাপীঠ। এই নামকরণটি কিন্তু শুধু শুধু করা হয়নি, যখন একটি বিশ্ববিদ্যালয় কল্পনা করা হয় সেখানে কিন্তু সংকীর্ণতার কোনো স্থান নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হতে হয় সত্যিকার অর্থে সারা বিশ্বের নাগরিক। দেশ, কাল, ধর্ম, বর্ণ, জাতি, সম্প্রদায় এরকম কোনো বিভেদ লালন করে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কিংবা ছাত্রী হওয়া যায় না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কিংবা ছাত্রী হিসেবে তুমি নিজেকে সারা পৃথিবীর সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র কিংবা ছাত্রী হিসেবে কল্পনা করে নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়ে তোমরা নিশ্চয়ই আরো একটি বিষয় লক্ষ্য করেছ, এটি কিন্তু একটি ট্রেনিং সেন্টার নয়। প্রয়োজনীয় কিছু বিষয়ে কিছু দক্ষতা তোমাদের শিখিয়ে দেয়াই যদি উদ্দেশ্য হতো তাহলে অনেক কম সময়ে তোমাদের সেগুলো শিখিয়ে পড়িয়ে নেয়া যেতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল উদ্দেশ্য তোমাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে শেখানো। লিবারেল আর্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে তোমাদের জন্যে এই কথাটি অন্যদের থেকে আরো অনেক বেশি সত্যি।

আজকে তোমরা আমার সামনে বসে আছ কারণ তোমরা সবাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার একটা ধাপ শেষ করেছ। আমি এখন তোমাদের একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে চাই। তোমরা অনেকেই হয়তো তথ্যটি জানো কিন্তু হয়তো পুরোপুরি বিশ্বাস করনি। তথ্যটি হচ্ছে, তোমার এই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সার্টিফিকেটটাই কিন্তু যথেষ্ট নয়, জীবনে সাফল্যের জন্যে এর সাথে আরো অনেক কিছুর প্রয়োজন হয়। তোমরা অনেকেই সেগুলো এর মাঝে শিখে গেছ, যারা শিখনি তারা জীবনে ধাক্কা খেতে খেতে শিখে যাবে। জীবনের জন্যে যদি প্রস্তুতি নিতে চাও তাহলে ব্যর্থতার জন্যে প্রস্তুতি নাও। আমি যদি আমার নিজের জীবনের পিছন দিকে তাকাই আমি অবাক হয়ে দেখি সেখানে সাফল্য বলতে গেলে নেই—বেশিরভাগই ব্যর্থতা! মাঝে মাঝে মনে হয় যেখানেই হাত দিয়েছি সেখানেই ব্যর্থ হয়েছি। ব্যর্থতার মাঝে কোনো আনন্দ নেই, গৌরব নেই কিন্তু এটি জীবনের একটা অংশ। যার জীবনে ব্যর্থতা নেই বুঝতে হবে সে তার জীবনে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেনি। ব্যর্থতা আসবে কিন্তু সেই ব্যর্থতায় হতাশ না হয়ে লেগে থাকাই হচ্ছে জীবন। মনে রেখো, স্বপ্ন সফল হওয়া জীবন নয়, স্বপ্নের জন্যে লেগে থাকা হচ্ছে জীবন। সেই জীবন কিন্তু খুবই ছোট, দেখতে দেখতে তোমার জীবনটুকু শেষ হয়ে যাবে। কাজেই এই ছোট সময়টি যেন অর্থপূর্ণ হয়, আনন্দময় হয় সেটি তোমাকে নিশ্চিত করতে হবে।  আমি আশা করছি জীবনকে পরিপূর্ণ করতে গিয়ে, তোমরা ক্লাশরুমে যেটুকু শিখেছ ক্লাশ রুমের বাইরে শিখেছ তার চাইতে আরো অনেক বেশি।

এই চমৎকার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে একজন চমৎকার পূর্ণাঙ্গ মানুষ হয়ে আজ তোমরা বের হয়ে যাচ্ছ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মশালটি তোমাদের হাতে। আমরা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি দেখার জন্যে, সেই মশালের আলোতে তোমরা কতোটুকু জায়গা আলোকিত করতে পার।

সবার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা।

 

লেখক: অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. মৃগী রোগ ছিল ‘কাটা লাগা’ অভিনেত্রীর, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই হয় মৃত্যু
  2. বলিউডের ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালি আর নেই
  3. আমিরের ‘সিতারে জমিন পর’ সাত দিনে ১০০ কোটি থেকে আর কত দূরে?
  4. ৫০০ টাকায় শুরু করা কপিল শর্মা এখন শো প্রতি নেন ৫ কোটি
  5. ঝিমিয়ে পড়ল আমিরের ‘সিতারে জমিন পার’, আয় কমে কত?
  6. সিনেমার বাজেট ৯০ কোটি, তিন দিনে ৬০ কোটির ঘরে ‘সিতারে জমিন পার’
সর্বাধিক পঠিত

মৃগী রোগ ছিল ‘কাটা লাগা’ অভিনেত্রীর, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই হয় মৃত্যু

বলিউডের ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালি আর নেই

আমিরের ‘সিতারে জমিন পর’ সাত দিনে ১০০ কোটি থেকে আর কত দূরে?

৫০০ টাকায় শুরু করা কপিল শর্মা এখন শো প্রতি নেন ৫ কোটি

ঝিমিয়ে পড়ল আমিরের ‘সিতারে জমিন পার’, আয় কমে কত?

ভিডিও
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৯
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৬
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৭
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৩
নাটক : প্রেশারম্যান
নাটক : প্রেশারম্যান
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬২

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x