Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

সুইমিংপুলে ভাবনা

ভিকারুননিসায় শিক্ষার্থীদের উল্লাস

উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা

স্টাইলিশ পারসা ইভানা

অন্য এক তানজিন তিশা

স্নিগ্ধ নাজনীন নিহা

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এনটিভিতে উৎসবের আমেজ

জুলাই অভ‍্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি

রোমান্টিক শহরে মেহজাবীন

বিয়ের পিড়িতে জেফ বেজোস - লরেন সানচেজ

ভিডিও
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৭
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৬৯
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৬৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৫
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৫
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৯
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৯
এই সময় : পর্ব ৩৮৪৫
ধা নাটক : কাজিনস পর্ব ০৩
ধা নাটক : কাজিনস পর্ব ০৩
আলোকপাত : পর্ব ৭৮১
আলোকপাত : পর্ব ৭৮১
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩৪
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩৪
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৯৬
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৯৬
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২৬
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২৬
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:২৮, ২৩ অক্টোবর ২০১৫
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:২৮, ২৩ অক্টোবর ২০১৫
আপডেট: ০০:২৮, ২৩ অক্টোবর ২০১৫
আরও খবর
‘মা’–একটি শব্দেই পূর্ণতা
দুর্ভাগা তোফাজ্জলের জীবনের সমাপ্তিটাও হলো নিঠুর নির্মমতায়
কেমন বাংলাদেশ দেখতে চাই
জয়ের ঘনঘন বক্তব্য বদলের ব্যাখ্যা দিলেন আলী রীয়াজ
পঞ্চাশোর্ধ্ব পাঠাগারগুলো টিকিয়ে রাখতে কী করা যেতে পারে

সাদাসিধে কথা

ইন্টারনেটের কানাগলি

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:২৮, ২৩ অক্টোবর ২০১৫
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:২৮, ২৩ অক্টোবর ২০১৫
আপডেট: ০০:২৮, ২৩ অক্টোবর ২০১৫

১.
প্রায় বিশ বছর আগে আমি যখন প্রথমবার দেশে ফিরে এসেছিলাম তখন যে বিষয়গুলো নিয়ে ধাক্কা পেয়েছিলাম তার একটি ছিল টেলিফোন। আমেরিকায় সবার বাসায় টেলিফোন এবং সেই টেলিফোন নিখুঁতভাবে কাজ করে, আমাদের দেশে টেলিফোন বলতে গেলে কোথাও নেই, আর যদিও বা থাকে সেগুলো কখনোই ঠিকভাবে কাজ করে না। তারপরও যার বাসায় টেলিফোন আছে তাদের অহঙ্কারে মাটিতে পা পড়ে না! তবে তার একটা যন্ত্রণাও আছে, আশপাশের সব বাসা থেকে লোকজন টেলিফোন করতে চলে আসে। যারা একটু ছোটলোক ধরণের মানুষ তারা টেলিফোনের ডায়ালের অংশটুকুতে তালা মেরে রাখত, টেলিফোন রিসিভ করা যেতো কিন্তু টেলিফোন করা যেতো না! শুধু যে টেলিফোন ছিল না তা নয়, মনে হয় টেলিফোনের তারও ছিল না কারণ, একই টেলিফোনের তার দিয়ে একাধিক মানুষ কথা বলত এবং তার নাম ছিল “ক্রস কানেকশান।” প্রায়ই টেলিফোন করতে গিয়ে আবিষ্কার করতাম ইতোমধ্যে সেই টেলিফোনে অন্য কেউ কথা বলছে। তখন অনুরোধ করা হতো, ‘‘ভাই আপনারা টেলিফোনটা একটু রাখেন, আমরা একটু কথা বলি।” অবধারিতভাবে অন্য দুইজন বলত, “আপনারা রাখেন আমরা কথা বলি!” ঝগড়াঝাঁটি মান-অভিমান সবই হতো।

শুধু যে বাসায় টেলিফোন ছিল না তা নয়, পাবলিক টেলিফোনও বলতে গেলে ছিল না। আমার মনে আছে আমাদের ক্যাম্পাসে শুধু একাডেমিক বিল্ডিংয়ের সামনে একটা কার্ড ফোনের বুথ ছিল। টাকা দিয়ে কার্ড কিনে সেই কার্ড ঢুকিয়ে ফোন করতে হতো। প্রায় সময়েই ফোনের কানেকশন হতো না কিন্তু টেলিফোন বুথ নির্দয়ভাবে কার্ড থেকে টাকা কেটে নিতো! দুই পক্ষই দুই পাশ থেকে হ্যালো হ্যালো বলে চিৎকার করছি কেউ কারো কথা শুনছি না কিন্তু এই ফাঁকে ঠিকই কার্ড থেকে পুরো টাকা উধাও হয়ে গেছে!

এখন সেই সময়কার কথা মনে হলে নিজেরাই আপন মনে হাসি। আমার মনে হয় এখন প্রায় সবার বাসাতেই যতজন মানুষ তার থেকে বেশি টেলিফোন। একসময় টেলিফোন দিয়ে আমরা শুধু কথা বলতাম, এখন যতই দিন যাচ্ছে টেলিফোনে কথা বলা কমে অন্য কাজকর্ম বেড়ে যাচ্ছে। আমরা টেলিফোনে এস.এম.এস পাঠাই ইংরেজিতে বাঙলা লিখে। সবার এমন অভ্যাস হয়ে গেছে যে, আমি রীতিমত আতঙ্কে থাকি যে, কোনো এক বই মেলায় আমি দেখব কেউ একজন ইংরেজিতে বাংলা লিখে একটা বই বের করে ফেলেছে! আমজনতাকে অবশ্যি সে জন্যে দোষ দেয়া যায় না, আজকাল দেখছি সরকারও ইংরেজিতে বাংলা লিখে নানা ধরণের বিজ্ঞপ্তি পাঠাচ্ছে। আমার মনে হয় টেলিফোনে এস.এম.এস পাঠানোর পরপরই যে কাজটা করা হয় সেটি হচ্ছে ছবি তোলা। কয়েকজন মানুষ একত্র হয়ে গল্প গুজব করছে চা নাস্তা খাচ্ছে- এই পরিচিত সামাজিক দৃশ্যের মাঝে অবধারিতভাবে এখন নূতন একটি দৃশ্য যোগ হয়েছে, সেটি হ্েছ একজন তার মোবাইল বের করে ছবি তুলছে। এক সময় মানুষ যত্ন করে ছবি তুলতো, যেন সেলফি নামক ছবি তোলার এই বিচিত্র পদ্ধতি আবিষ্কৃত হওয়ার পর যত্ন করে ছবি তোলার বিষয়টাই উঠে গেছে। (সেলফি ছবি তোলায় যে একটা সামাজিক মান মর্যাদার বিষয় আছে আমি সেটা জানতাম না। একজন কমবয়সী ছেলে আমার সাথে সেলফি তুলতে চাইতেই কাছে দাঁড়ানো একজন বড় মানুষ এই “বেয়াদবি” করার জন্যে তাকে রীতিমত ধমক দিয়ে বসেছিলেন!”)

কথা বলা এবং ছবি তোলা ছাড়াও এই টেলিফোনে আরো অসংখ্য কাজ করা যায়, আমার মনে হয় না আমি তার তালিকা লিখে শেষ করতে পারব। শুধু তাই নয় আমি যে কয়টি লিখতে পারব আমার ধারণা পাঠকেরা তার থেকে অনেক বেশি লিখতে পারবেন! টেলিফোনে যে কয়টি কাজ করা যায় তাতেই সন্তুষ্ট থাকারও প্রয়োজন নেই আমি আমার ছাত্রদের দিয়ে আমার জন্যে পরীক্ষা নেয়ার একটা “অ্যাপ” তৈরি করিয়ে নিয়েছি। এম.সি.কিউ ধরনের পরীক্ষা নেয়ার পর ছাত্র ছাত্রীরা উত্তরটা আমাকে এস.এম.এস করে পাঠায়, আমার টেলিফোন উত্তরটা যাচাই বাছাই করে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় কতো পেয়েছে সাথে সাথে সেটাও তাদেরকে জানিয়ে দেয়া যায়। এখন আমার পরীক্ষা নিতে ক্লান্তি নেই, আমার ধারণা যে কোনোদিন আমার ছাত্রছাত্রীরা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসবে!

তবে টেলিফোনে আজকাল যে কাজটা সবচেয়ে বেশি হচ্ছে সেটি সম্ভবত ইন্টারনেটে বিচরণ! আজকের লেখাটি এই বিষয় নিয়ে এবং এতোক্ষণ আসলে এই কথাটি বলার জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
২.
মূল বক্তব্যে যাবার আগে সবাইকে একটি বিষয় মনে করিয়ে দেয়া যাক, সেটি হচ্ছে জ্ঞান বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির মাঝে পার্থক্য। পরমাণুর কেন্দ্রে যে নিউক্লিয়াস থাকে তার মাঝে বিশাল একটা শক্তি জমা থাকতে পারে এই তথ্যটা হচ্ছে জ্ঞান কিংবা বিজ্ঞান। এই শক্তিটা ব্যবহার করে চোখের নিমিষে রক্ষ লক্ষ মানুষ মেরে ফেলার জন্যে যে নিউক্লিয়ার বোমা তৈরি হয় সেটা হচ্ছে প্রযুক্তি! কাজেই জ্ঞান বিজ্ঞান খুবই চমৎকার বিষয় এর মাঝে কোনা সমস্যা নেই। আমরা কিন্তু কখনোই প্রযুক্তির ব্যাপারে এরকম ঢালাওভাবে সার্টিফিকেট দিতে পারব না। প্রযুক্তির মাঝে যে রকম ভালো প্রযুক্তি আছে ঠিক সে রকম অপ্রয়োজনীয় এমনকি খারাপ প্রযুক্তি আছে! কাজেই নূতন একটা প্রযুক্তি দেখলেই সেটা নিয়ে গদগদ হয়ে যাওয়ার অভ্যাস আমাদের ছাড়তে হবে। যে কোনো নতুন একটা প্রযুক্তি দেখলেই রীতিমত ভুরু কুচকে সেটাকে যাচাই বাছাই করে নেয়া মোটেও প্রাচীন পক্ষীর কাজ নয়, রীতিমত বুদ্ধিমানের কাজ।

এর সবচেয়ে সহজ উদাহরণ হচ্ছে কম্পিউটার। আমাদের সবচেয়ে সস্তা মোবাইল টেলিফোনেও একটা কম্পিউটার আছে আবার যে মহাকাশযানটি সেই প্লুটোর কাছে হাজির হয়ে তার ছবি তুলে পাঠাচ্ছে তার ভেতরেও একটা কম্পিউটার আছে। এই অসাধারণ একটি প্রযুক্তি আসলে আমাদের পুরো সভ্যতাটাকেই নুতন করে সাজিয়ে দিয়েছে। কোনো মানুষ যদি ঠিক করে সে কম্পিউটার ব্যবহার না করেই তার জীবনটা কাটিয়ে দেবে আমার ধারণা তার জীবনটা আক্ষরিক অর্থে আটকে যাবে। অথচ আমি একজন মা’কে জানি যিনি একটি কম্পিউটার দেখলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন কারণ তার সন্তান এটি আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে, কোনো বিশ্রাম না নিয়ে টানা কয়েকদিন একসাথে কম্পিউটার ব্যবহার করে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে মারা গেছে। এটি অত্যন্ত ব্যতিক্রমী এবং নিষ্ঠুর একটি উদাহরণ।

আমরা জানি সারা পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ নিরাপদে কম্পিউটার ব্যবহার করে সবরকম কাজকর্ম করে যাচ্ছে এবং সে জন্যেই এই উদাহরণটি আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। কারণ এটি আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে, খুবই নিরীহ এবং নিরাপদ একটা প্রযুক্তি নিয়ে বাড়াবাড়ি করেও ভয়ঙ্কর একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেলা যায়। এরকম উদাহরণ অনেক আছে।

আমাদের দেশ যেহেতু প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকা একটি দেশ তাই আমরা যে কোনো নূতন প্রযুক্তি দেখলেই একেবারে গদগদ হয়ে যাই। সে কারণে দেশে যখন নূতন কম্পিউটার এসেছে আমরা সেটা আমাদের নূতন প্রজন্মের হাতে তুলে দেবার জন্যে খুবই ব্যস্ত ছিলাম। কম্পিউটারের নামটা দেখেই বোঝা যায় এর জন্ম হয়েছিল “কম্পিউটার” বা হিসেব করার জন্যে কিন্তু এই যন্ত্রটি এতোই বিচিত্র যে এটি দিয়ে কী কাজ করা যাবে সেটি সীমিত হতে পারে শুধু মানুষের সৃজনশীলতা দিয়ে। সৃজনশীলতা যে সবসময় সঠিক রাস্তায় যায় তার কোনো গ্যারান্টি নেই। কাজেই আমরা আবিষ্কার করেছি, এই দেশে নূতন প্রজন্মের কাছে কম্পিউটারের জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ হয়ে গেছে কম্পিউটার গেম! প্রযুক্তির প্রতি আমাদের এতোই অন্ধ বিশ্বাস যে বাবা মা যখন দেখেছেন তাদের ছেলে মেয়েরা সব কাজকর্ম ফেলে দিন রাত কম্পিউটারের মনিটরে মুখ গুঁজে পড়ে আছে তখন তারা দুঃশ্চিন্তিত না হয়ে আহ্লাদিত হয়ে উঠতে শুরু করেছেন! আমি অন্তত একটি শিশুর বাবা মায়ের কথা জানি যারা তার শিশুটিকে কম্পিউটারের উপর নির্ভরশীর হয়ে পুরোপুরি একটি অসামাজিক জীব হয়ে বড় হওয়ার বিষয়টি নিয়ে অহঙ্কার করেন!

কম্পিউটার এসে আমাদের অনেক শিশুর জীবনকে মোটামুটি জটিল করে তুলেছিল, ইন্টারনেট আসার পর তার সাথে একটা নূতন মাত্রা যোগ হল!
৩.
ইন্টারনেট সম্ভবত আমাদের এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি। আমার মাঝে মাঝেই মনে হয় যে আমি কতো বড় সৌভাগ্যবান যে নিজের চোখে এই প্রযুক্তিটিকে জন্ম নিতে এবং বিকশিত হতে দেখেছি। আমরা সবাই জানি এক সময় এই দেশের কিছু কর্তাব্যক্তি আমাদের দেশে যেন ইন্টারনেট আসতে না পারে তার জন্যে চেষ্টা করেছিলেন। দেশের তথ্য পাচার হয়ে যাবার ভয়ে তারা সাবমেরিন ফাইবারের যোগাযোগ নিতে রাজী হননি। এই চরিত্রগুলোর নাম এবং পরিচয় জানার আমার খুব কৌতূহল হয়। আমাদের দেশের সংবাদ মাধ্যম তো কতো কিছু নিয়েই কতো রকম ফিচার করে থাকে, দেশকে পিছিয়ে নেয়ার কাজে সবচেয়ে অগ্রগামী এই মানুষদের নাম পরিচয় জানিয়ে একবার একটা ফিচার কেন করে না?

একটা দেশ প্রযুক্তিতে কতোটুকু এগিয়ে আছে তার পরিমাপ করার জন্যে নানারকম জরিপ নেয়া হয়। এর একটা পরিমাপ হচ্ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এবং খুবই স্বাভাবিক কারণে আমাদের এই সংখ্যাটি অন্যান্য দেশের তুলনায় ছিল খুবই কম। ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্যে একটা কম্পিউটার বা ল্যাটপটের দরকার হতো এই দেশের আর কতোজন মানুষের কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপ কেনার ক্ষমতা আছে? শুধু তাই নয়, কম্পিউটার ল্যাপটপের সাথে সাথে ইন্টারনেটের সংযোগের ব্যাপার আছে এবং সবকিছু শেষ হবার পর আমাদের সেই মিলিয়ন ডলার প্রশ্নটি করতে হয়, ইন্টারনেট ব্যবহার করে কী করা হবে?

মোটামুটি একই সময়ে হঠাৎ করে সবগুলো সমস্যার সমাধান হয়ে গেল! ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্যে কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপের দরকার নেই, খুবই স্বল্পমূল্যের স্মার্ট ফোন দিয়েই সেটা করা সম্ভব। ইন্টারনেট সংযোগেরও দরকার নেই অনেক জায়গাতেই ওয়াইফাই আছে। ইন্টারনেট দিয়ে কী করা হবে সেই প্রশ্নটি করা হলে সবাই আমাকে বেকুব বলে ধরে নেবে। এটি কী কোনো প্রশ্ন হতে পারে? অবশ্যই ইন্টারনেট দিয়ে ফেসবুক করা হবে! জরিপ নিয়ে দেখা গেছে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর শতকরা আশিভাগ মানুষ ফেসবুক করে থাকে! ইন্টারনেট এবং ফেসবুক এখন এই দেশে প্রায় সমার্থক শব্দ।

তাই হঠাৎ করে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে সাড়ে চারকোটি হয়ে গেছে জানার পরও আমি কেন জানি উল্লসিত হতে পারছি না, বরং কেন জানি নার্ভাস অনুভব করতে শুরু করেছি। তার কারণ এর বড় একটা সংখ্যা আসলে কম বয়সী কিশোর কিশোরী এমন কী শিশু!

আমি আগেই পাঠকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি যে আমি ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক নেটওয়ার্কের বিশেষজ্ঞ নই। আমি কখনো কোনো ফেসবুক একাউন্ট খুলিনি কিন্তু নানা ধরণের মানুষেরা আমার নামে ভূয়া ফেসবুক একাউন্ট তৈরি করে এতোই ঝামেলা করতে শুরু করেছিল যে আমার ছাত্র এবং তরুণ সহকর্মীরা আমার জন্যে একটা “অফিসিয়াল” ফেসবুক একাউন্ট তৈরি করে রেখেছেন, এর ভেতরে কী ঘটে না ঘটে আমি দেখি না, তাই ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক নেটওয়ার্কের ভেতর কী ঘটে আমি সেটা জানি না।

কিন্তু অবশ্যই আমি সেটা অনুমান করতে পারি। আমি একবার একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সভায় মঞ্চে বসে আছি। আমার পাশে ততোধিক গুরুত্বপূর্ণ একজন মানুষ বসেছেন, হঠাৎ করে তিনি আমাকে বললেন, “একটা সেলফি তুলি?” আমি মাথা নাড়লাম এবং সেই চলমান সভার মাঝখানে তিনি আমার সাথে একটা সেলফি তুলে ফেললেন। আজকাল সেলফি তোলার পর সেটা শেষ হয়ে যায় না, সেটাকে ফেসবুকে দিতে হয় এবং সেই সভার মাঝখানেই তিনি সেটা ফেসবুকে দিয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ পর তিনি আবার আমার দিকে ঝুকে পড়ে ফিস ফিস করে বললেন, “এর মাঝে ঊনত্রিশটি লাইক পড়ে গেছে!”

বলা বাহুল্য আমি চমৎকৃত হলাম লাইকের সংখ্যা দিয়ে নয়, একজন বয়স্ক এবং গুরুত্বপূর্ণ মানুষের এই ছেলেমানুষী আনন্দটি দেখে! যদি একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বয়স্ক মানুষ লাইকের সংখ্যা দেখে এরকম বিমলানন্দ পেতে পারেন তাহলে আমাদের ছোট ছোট কিশোর কিশোরী বা শিশুরা কী দোষ করেছে? তারা কেন ফেসবুকে লাইকের জন্যে লালায়িত হবে না? কাজেই খুবই সংগত কারণে আমাদের দেশের কিশোর কিশোরী এবং শিশুরা এই লাইক কালচারে ঢুকে গেছে। অন্য সব কারণ ছেড়ে দিয়ে শুধু অবিশ্বাস্য পরিমাণ সময় নষ্টের কারণে অসংখ্য অভিভাবক আমার সাথে যোগাযোগ করে সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করতে শুরু করেছেন।

আমাদের দেশে সাড়ে চার কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে তার মাঝে কতোজন অপরিণত বয়সের ছেলে মেয়ে আমরা কী সেটা জানি? এই কমবয়সী ছেলে মেয়েদের জন্যে ইন্টারনেটের জগৎটি কী একটা আলো ঝলমলে আনন্দের জগৎ নাকি প্রতি পদক্ষেপে লুকিয়ে থাকা গ্লানিময় অন্ধকার নিষিদ্ধ জগৎ? একজন শিক্ষিকা তার ক্লাশের ছেলেমেয়েদের ইন্টারনেটের উপকারিতা বোঝানোর জন্যে গুগলে একটা বাংলা শব্দ লিখে সার্চ দিয়েছিলেন, এই শব্দটির মত পূত পবিত্র নির্দোষ এবং নিরীহ শব্দ বাঙলা ভাষায় দ্বিতীয়টি নেই কিন্তু সেই শব্দের সূত্র ধরে ক্লাশের বাচ্চা ছেলেমেয়েদের সামনে মাল্টি-মিডিয়াতে বাঙলা পর্নোগ্রাফির কুৎসিত জগৎ বন্যার পানির মতো এসে  পড়ে। বাক স্বাধীনতার নামে এ ধরণের অমানবিক হিংস্র ওয়েবসাইট যে থাকতে পারে আমি সেটা জানতাম না। যদি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা নিজের অজান্তেই একরম ভয়ঙ্কর ওয়েবসাইটে ঢুকে যেতে পারেন তাহলে কেউ যখন সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করে তখন সে কোথায় গিয়ে হাজির হবে সেটি কী চিন্তা করা সম্ভব?

বিষয়টি যথেষ্ট গুরুতর, খুব কম বয়সে একটা বাচ্চা যদি শিখে যায় যে নিজের ছবি কিংবা নিজের কর্মকা-ের বর্ণনাতে অসংখ্য পরিচিত অপরিচিত মানুষের “লাইক” পাওয়া হচ্ছে জীবনের একমাত্র আনন্দের বিষয় সে তাহলে পুরোপুরি একটা ভুল মানুষ হয়ে বড় হবে। আমরা শিশুদের শৈশব অনেক আগেই কেড়ে নিয়েছি এখন তাদের হাতে তুলে দিচ্ছি প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষদের একটা জগৎ এর চাইতে বড় দায়িত্বহীন কাজ কী হতে পারে?

আমি কোনো সমাধান দেয়ার জন্যে এই লেখাটি লিখতে বসিনি, খবরের কাগজে একটা কলাম লিখে আমি এর সমাধান দিতে পারব আমি সেটা মনেও করি না। তবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বাড়ানোর আগ্রহে আমরা যে আমাদের দেশে অসংখ্য বাচ্চাদের সময়ের আগেই একটা বিপজ্জনক জায়গায় ঠেলে দিয়েছি তাতে কোনো সন্দেহ নাই। আমি মাথায় থাবা দিয়ে হায় হায় করে মাতম করতেও রাজী নই। ইন্টারনেট একটা অবিশ্বাস্য শক্তিশালী প্রযুক্তি, এটাকে দায়িত্ব নিয়ে ব্যবহার করে ম্যাজিক করে ফেলা সম্ভব। আমি তাই সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই পুরো বিষয়টাকে নিয়ে নূতন করে ভাবার সময় হয়েছে। অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার সময় হয়েছে। দেশের বড় বড় হর্তা কর্তাদের সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় হয়েছে। জ্ঞানী গুণী মানুষদের চিন্তা করার সময় হয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ কীভাবে এই সমস্যার সমাধান বের করেছে সেগুলো খুঁজে দেখার সময় হয়েছে।

আমরা শিশুদের শৈশব ফিরিয়ে দিতে চাই। তাদেরকে প্রাপ্ত বয়স্কদের একটা জগৎ উপহার দিতে চাই না। ইন্টারনেটের কানা গলিতে তাদের হারিয়ে ফেলতে চাই না।

২১.১০.২০১৫

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. ‘নেটফ্লিক্স সাহসী গল্প বলতে ভয় পায়, দর্শক বোঝে না’
  2. রোগা হওয়া প্রসঙ্গে কী জানালেন করণ?
  3. প্রিয়াঙ্কার নাকের অস্ত্রোপচার নিয়ে মুখ খুললেন প্রযোজক
  4. বাবা হচ্ছেন রাজকুমার রাও
  5. বক্স অফিসে ৫ দিনে কত আয় করল ‘মেট্রো ইন দিনো’
  6. গৌরীর সঙ্গে লিভইনে আমির, জানালেন ‘মন থেকে আমরা বিবাহিত’
সর্বাধিক পঠিত

‘নেটফ্লিক্স সাহসী গল্প বলতে ভয় পায়, দর্শক বোঝে না’

রোগা হওয়া প্রসঙ্গে কী জানালেন করণ?

প্রিয়াঙ্কার নাকের অস্ত্রোপচার নিয়ে মুখ খুললেন প্রযোজক

বাবা হচ্ছেন রাজকুমার রাও

বক্স অফিসে ৫ দিনে কত আয় করল ‘মেট্রো ইন দিনো’

ভিডিও
এনটিভি'র নিমন্ত্রণে : পর্ব ০৯
এনটিভি'র নিমন্ত্রণে : পর্ব ০৯
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২৬
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২৬
রাতের আড্ডা : পর্ব ১১
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৫
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৫
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৮০
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৮০
কোরআনুল কারিম : পর্ব ১২
কোরআনুল কারিম : পর্ব ১২
আলোকপাত : পর্ব ৭৮১
আলোকপাত : পর্ব ৭৮১
ধা নাটক : কাজিনস পর্ব ০৩
ধা নাটক : কাজিনস পর্ব ০৩
গানের বাজার, পর্ব ২৩৯

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x