Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

সুইমিংপুলে ভাবনা

ভিকারুননিসায় শিক্ষার্থীদের উল্লাস

উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা

স্টাইলিশ পারসা ইভানা

অন্য এক তানজিন তিশা

স্নিগ্ধ নাজনীন নিহা

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এনটিভিতে উৎসবের আমেজ

জুলাই অভ‍্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি

রোমান্টিক শহরে মেহজাবীন

বিয়ের পিড়িতে জেফ বেজোস - লরেন সানচেজ

ভিডিও
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮৩
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮৩
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৯
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৯
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৫
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৫
এনটিভি'র নিমন্ত্রণে : পর্ব ১০
এনটিভি'র নিমন্ত্রণে : পর্ব ১০
আলোকপাত : পর্ব ৭৮১
আলোকপাত : পর্ব ৭৮১
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩৪
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩৪
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৭
নাটক : শেষ গান
নাটক : শেষ গান
কোরআনুল কারিম : পর্ব ১২
কোরআনুল কারিম : পর্ব ১২
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
১০:৫৮, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
১০:৫৮, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫
আপডেট: ১০:৫৮, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫
আরও খবর
২১ পেরিয়ে অবিচল এনটিভি
ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই শ্রেয়াসকে থামালেন ইবাদত
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, সব খাতেই চাপ বাড়বে
পদ্মায় আটকে দাদিকে শেষ দেখা দেখতে পারিনি

সাদাসিধে কথা

বাজিয়ে যাই ভাঙা রেকর্ড

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
১০:৫৮, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
১০:৫৮, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫
আপডেট: ১০:৫৮, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫

বেশ কয়েক বছর আগে আমার একজন তরুণের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। সে আমার পা ছুঁয়ে সালাম করে বলল, 'আমি অমুক।' বলা বাহুল্য, আমি তার নাম শুনে তাকে চিনতে পারলাম না। তখন তরুণটি বলল, 'আপনি আমার বাবাকে চিনতে পারেন। নকল করার সময় ধরে ফেলেছিলেন বলে একটা ছাত্র চাকু মেরে আমার বাবাকে খুন করে ফেলেছিল।'  

সঙ্গে সঙ্গে আমি তরুণটিকে চিনতে পারলাম। তার শিক্ষক বাবার হত্যাকাণ্ডের খবরটি খবরের কাগজে ছাপা হয়েছিল। নকল ধরার জন্য একজন শিক্ষককে খুন করে ফেলার ঘটনাটি শুধু আমার নয়, সারা দেশের সব মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়েছিল। একজন ছাত্র যখন পরীক্ষায় নকল করা শেখে এবং সেটাকে তার অধিকার মনে করে, তখন সেটা খুবই বিপজ্জনক হতে পারে।

এ মুহূর্তে আমার সেই ঘটনাটি মনে পড়ছে এবং আমি এক ধরনের তীব্র হতাশায় দীর্ঘশ্বাস ফেলছি। মাত্র কয়েক বছর আগেও পরীক্ষায় নকল করা বিষয়টি বলতে গেলে ছিল না। এক-দুজন নকলবাজ আর খুনি প্রায় একই পর্যায়ের অপরাধী ছিল। আমার মনে হয়, এ সরকারের আমলে শিক্ষার নামে এ দেশের যত বড় সর্বনাশ হয়েছে আর কখনও এত বড় সর্বনাশ হয়নি। পরীক্ষায় আগেও কখনো কখনো ঢালাওভাবে বড় ধরনের নকল হয়েছে; কিন্তু কখনো শিশুদের সেই নকল উৎসবের শামিল করা হয়নি। মাত্র পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এ দেশের প্রায় ৩০ লাখ ছেলেমেয়ে পিএসসি ও ২০ লাখ ছেলেমেয়ে জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। আমরা সবাই জানি, এই পরীক্ষাগুলো এখন আর সত্যিকারের পরীক্ষা নয়—এগুলো এখন এক ধরনের প্রহসন, বড়জোর উৎকট রসিকতা। ছোট ছোট শিশু বড়দের মতো নকল করা শেখেনি। তাই তাদের নকল করতে সাহায্য করার জন্য শিক্ষকরা এগিয়ে আসছেন। তাদের উত্তর বলে দিচ্ছেন, কাগজে উত্তর লিখে একজন একজন করে সবাইকে ধরিয়ে দিচ্ছেন। অন্যায় এবং অপরাধকর্মে একজন শিশুর হাতেখড়ি হয়ে যাচ্ছে এবং সেই হাতেখড়িটা হচ্ছে শিক্ষাকে উপলক্ষ করে। আমরা জানি, এই পরীক্ষাগুলোতে ঢালাওভাবে সবাই পাস করে যাবে। নানা ধরনের যাচাই জরিপ এবং গবেষণা করে দেখা গেছে, এই বয়সী ছেলেমেয়েদের যখন যেটুকু জানা দরকার, ছেলেমেয়েরা তার ধারেকাছে নেই। অর্থাৎ পরীক্ষাগুলো আসলে ছেলেমেয়েদের মূল্যায়ন করতে পারে না। তাহলে এত হৈচৈ করে, এত বড় দক্ষযজ্ঞ করে, সবাইকে এত কষ্ট দিয়ে কেন খামাখা এই পরীক্ষাগুলো নেওয়া হয়? সবচেয়ে বড় কথা, এ দেশের শিশুদের অন্যায় করতে শেখানো ছাড়া এই পরীক্ষাগুলো নিয়ে কী লাভ হচ্ছে?

আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে যাঁরা খোঁজখবর রাখেন, তাঁরা এই বিষয়গুলো জেনে কখনো হতাশা অনুভব করেন, কখনো ক্ষুব্ধ হয়ে যান। আমার জন্য বিষয়টি আরো অনেক বেশি বেদনাদায়ক। কারণ, আমি একই সঙ্গে অপরাধবোধে ভুগতে থাকি। এই সরকার যখন জোট সরকারকে নির্বাচনে হটিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে, তখন শিক্ষা নিয়ে নানা ধরনের পরিকল্পনা করার সময় দেশের অনেক বড় শিক্ষাবিদদের সঙ্গে আমাকেও ডেকেছিল। আমাকে সরকার কিংবা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যখন যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আমি আমার সাধ্যমতো সেই দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি (বড় বড় মিটিংয়ে অন্য সবাই ঢাকা শহরের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতেন। আমাকে যেতে হতো সিলেট থেকে ট্রেনে-বাসে-গাড়িতে)। আমাদের দেশের শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটিতেও অন্য অনেকের সঙ্গে আমিও একজন সদস্য ছিলাম। আমি মনে করি, আমাদের দেশের জন্য সেই শিক্ষানীতিটি যথেষ্ট চমৎকার একটা শিক্ষানীতি ছিল; কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে সেই শিক্ষানীতির ওপর আমাদের না জানিয়ে কাঁচি চালানো হয়েছে। আমরা যে খসড়া শিক্ষানীতিটি মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছিলাম, সেখানে মাত্র দুটি পাবলিক পরীক্ষার কথা বলা হয়েছিল। যে শিক্ষানীতিটি গ্রহণ করা হয়েছে, সেখানে কীভাবে জানি তিনটি পাবলিক পরীক্ষার কথা চলে এসেছে। যদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আমলারাই এত শিক্ষাবিদ থেকে বেশি জানেন-বোঝেন এবং তাদের ইচ্ছামতো পাবলিক পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে দিতে পারেন, তাহলে কেন এত শিক্ষাবিদকে একটা শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে দিলেন? সবচেয়ে মজার কথা হচ্ছে, শিক্ষানীতিতে তিনটি পাবলিক পরীক্ষার কথা বলা হলেও আমরা সবাই জানি, এ দেশের ছেলেমেয়েদের একটি নয়, দুটি নয়, এমনকি তিনটিও নয়, চার-চারটি পাবলিক পরীক্ষা দিতে হয়! যাঁরা এই সিদ্ধান্তগুলো নেন আমার কেন জানি মনে হয়, তাঁদের ছেলেমেয়েরা আমাদের দেশের মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থায় লেখাপড়া করে না। তারা সম্ভবত ইংরেজি মাধ্যমের ও-লেভেল কিংবা এ-লেভেলে পড়াশোনা করে। তাই সাধারণ ছেলেমেয়েদের দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণার কথা তাঁরা কোনোদিন টের পান না। কিংবা সেটা নিয়ে মাথা ঘামান না।

পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় ছোট শিশুদের নকল করতে শেখানোই যে আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার একমাত্র সমস্যা, তা কিন্তু নয়। আমরা সবাই জানি, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস এখন মোটামুটি নিয়মিত ঘটনা হয়ে গেছে। মাত্র কিছুদিন আগে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। সরকার তোতা পাখির মতো বলে গেছে যে, আসলে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। আমাদের দেশের বড় বড় শিক্ষাবিদ নিজেদের উদ্যোগে তদন্ত করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, আসলেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে; কিন্তু তাতে উনিশ-বিশ কিছু হয়নি। ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্নে যারা পরীক্ষা দিয়েছে, তারাই সবার আগে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছে। যারা সারা বছর মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করেছে, দুর্বৃত্তরা তাদের এ দেশে তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে দেয়নি। কম বয়সী ছেলেমেয়েদের জীবনের শুরুতে এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতাটুকু তাদেরকে যে হতাশার দিকে ঠেলে দিয়েছে, তার দায়িত্ব কে নেবে? এ দেশে পদ্মা ব্রিজ তৈরি হচ্ছে, এ দেশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানো হবে, এ দেশে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি হবে; কিন্তু যে ছেলেটি বা মেয়েটির জীবনের সব স্বপ্ন এ দেশ কেড়ে নিয়েছে, তার কাছে এর কোনো গুরুত্ব নেই। আমাদের এ দেশটি গড়ে তুলবে নতুন প্রজন্ম, এখন যারা শিশু-কিশোর-কিশোরী কিংবা তরুণ-তরুণী তারা যদি এখন বুঝে যায়—এ দেশে সততার মূল্য নেই, এ দেশ আসলে অসৎ অপরাধী দুর্বৃত্তের, তাহলে তারা কোন আশায় ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকবে! একটি দেশের সরকার যে এত অবহেলায় একটা জাতির ভবিষ্যৎকে পা দিয়ে ধুলোয় মাড়িয়ে দিতে পারে, সেটি নিজের চোখে দেখেও আমার বিশ্বাস হয় না।

যখন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় না, তখনও কি পরীক্ষা ভালো হয়? না, আমরা এখন সেটিও দাবি করতে পারি না। আমাদের দেশে লেখাপড়া নিয়ে যে বাণিজ্য হয়, সে রকম বাণিজ্য বুঝি আর কোথাও হয় না। দেশে যখন সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি শুরু হয়েছিল, ঠিক তখনই সৃজনশীল গাইডবই বের হতে শুরু করল। এর থেকে বড় রসিকতা আর কী হতে পারে? দেশে যখন এ রকম ঘটনা ঘটে, তখন সাধারণত সংবাদমাধ্যম বিষয়টি নিয়ে হৈচৈ শুরু করে। বিষয়টি দশজনের চোখে পড়ে, দুর্বৃত্তরা তখন পিছিয়ে যায়। আমাদের দেশে সেটি কখনো হবে না। কারণ এ দেশের যত বড় বড় পত্রিকা রয়েছে তারা নিজেরাই তাদের পত্রিকায় গাইডবই ছাপিয়ে যাচ্ছে। দেশে গাইডবই বেআইনি; কিন্তু যখন সবার সামনে পত্রিকাগুলো তাদের পত্রিকায় দিনের পর দিন গাইডবই ছাপিয়ে যাচ্ছে, তখন তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার একটি মানুষও খুঁজে পাওয়া যায় না।

এ দেশের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে আমার এক ধরনের যোগাযোগ আছে; কিছু একটা অঘটন ঘটলেই তারা আমার কাছে সেটা নিয়ে অভিযোগ করে। তাই যখন সৃজনশীল গাইডবই বের হতে শুরু করল এবং শিক্ষকরা সেই গাইডবই থেকে প্রশ্ন তুলে দিয়ে তাদের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা নিতে শুরু করলেন, তখন ছেলেমেয়েরা আমার কাছে নানাভাবে অভিযোগ করতে শুরু করল। আমি তখন তাদের বলেছি, স্কুলের পরীক্ষা একজন শিক্ষক গাইডবই থেকে প্রশ্ন তুলে দিতেই পারেন এবং একজন ছেলে বা মেয়ে গাইডবই মুখস্থ করে সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সেই শিক্ষকের কাছে ভালো নম্বর পেয়েও যেতে পারে; কিন্তু তাতে কিছু আসে যায় না। কারণ যে পরীক্ষাগুলো তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, সেই পরীক্ষায় কখনোই কোনো গাইডবই থেকে কোনো প্রশ্ন দেওয়া হবে না। গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষকরা সেই প্রশ্নগুলো প্রথমবারের মতো তৈরি করবেন এবং পৃথিবীর কেউ আগে সেই প্রশ্নগুলো দেখবে না। কাজেই গাইডবই মুখস্থ করে কখনোই সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাবে না। সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইটা মন দিয়ে পড়তে হবে, তার বিষয়বস্তুটা বুঝতে হবে। কাজেই গাইডবই নামক এই কুৎসিত বিষয়টা একটা ছেলে বা মেয়ের জীবনে কোনো ভূমিকা রাখবে না।

ঠিক তখন একটা ভয়ানক ঘটনা ঘটল। আমি দেখতে পেলাম পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নগুলো গাইডবই থেকে নেওয়া শুরু হয়েছে। সৃজনশীল পরীক্ষার মতো এত সুন্দর একটা পরীক্ষা পদ্ধতি মুহূর্তের মাঝে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধূলিসাৎ করে দিল। সৃজনশীল পদ্ধতি শুরু করার আগে ছেলেমেয়েরা শুধু পাঠ্যবই মুখস্থ করত। এখন তারা পাঠ্যবই এবং একাধিক গাইডবই মুখস্থ করে। একটা ছেলে বা মেয়ের সৃজনশীলতা যাচাই করার আর কোনো উপায় থাকল না!

এখানেই যদি শেষ হয়ে যেত তাহলেও একটা কথা ছিল; এখানেই কিন্তু শেষ নয়। সারা পৃথিবীতে স্কুলে কিংবা কলেজে ছেলেমেয়েরা ক্লাস করে, সেখানে শিক্ষকরা পড়ান। আমাদের দেশে শিক্ষকরা ক্লামরুমে পড়ান না, তারা প্রাইভেট পড়ান, একসঙ্গে অনেককে নিয়ে ব্যাচে পড়ান। একেকটা ব্যাচে কোনো একটা ঘরে অনেক ছেলেমেয়ে গাদাগাদি করে থাকে এবং শিক্ষকরা আন্তরিকভাবে তাদের পড়ান। কারণ পড়ানোর জন্য তারা ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা নেন। আমি সাংবাদিক নই, তাই অনুসন্ধান করে একজন শিক্ষক ঘণ্টাখানেকের মাঝে কত টাকা কামাই করে ফেলেন, সেটা বের করতে পারব না। কিন্তু যারা ব্যাচে পড়ে তারা বলেছে, টাকার পরিমাণ ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা হতে পারে! আমি যতদূর জানি, বেশিরভাগ শিক্ষকই নাকি এ রকম; কিন্তু এখনও একজন-দুজন শিক্ষক আছেন যারা প্রাইভেট পড়ান না, ব্যাচে পড়ান না। তারা সত্যিকারের শিক্ষকের মতো ক্লাসরুমে এসে পড়ান। এসব শিক্ষকের জীবন খুব কষ্টের, ভালো স্কুল-কলেজে তারা টিকতে পারেন না। তাদের শক্তিশালী সহকর্মীরা তাদের মফস্বলে বদলি করে দেন।

এ দেশের স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের জীবন খুবই বিচিত্র। তারা কোনো একটি স্কুল কিংবা কলেজের ছাত্র কিংবা ছাত্রী; কিন্তু তাদের লেখাপড়া হয় কোচিং সেন্টারে কিংবা কোনো একজন শিক্ষকের বাসায়। ছাত্র কিংবা ছাত্রীরা এর মাঝে কোনো অস্বাভাবিকতা খুঁজে পায় না। বাবা-মায়েরা এটাকেই নিয়ম বলে মেনে নিয়েছেন। কোচিং সেন্টারগুলোর রমরমা ব্যবসা। যখন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয় তখন মাঝেমধ্যে কোনো কোনো কোচিং সেন্টারের নাম শুনতে পাই। কিছুদিন আগে একটি কোচিং সেন্টারের মালিক আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। সৌজন্যের কথা শেষ করে বললেন, 'আমার একটা কোচিং সেন্টার আছে, সেখানে একটা অনুষ্ঠান করব। আপনাকে প্রধান অতিথি হিসেবে নিতে চাই।'

আমি কিছুক্ষণ তার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বললাম, 'যদি দেশের পকেটমাররা একটা সংগঠন তৈরি করে তাদের বার্ষিক ডিনারে আমাকে প্রধান অতিথি হিসেবে নিতে চায় আমার কি যাওয়া উচিত হবে?'

ভদ্রলোক একেবারে থতমত খেয়ে বললেন, 'না। উচিত হবে না।'

আমি বললাম, 'তাহলে আমারও আপনার কোচিং সেন্টারের অনুষ্ঠানে যাওয়া উচিত হবে না। কারণ আমার কাছে কোচিং সেন্টার আর পকেটমারের সংগঠন মোটামুটি একই ব্যাপার।'

ভদ্রলোক খুবই মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে চলে গেলেন। আমি জানি আমার এই লেখাটা পড়ে দেশের অনেক মানুষ মনঃক্ষুণ্ণ হবেন। বলবেন, 'হতে পারে কোচিং সেন্টার বিষয়টা ভালো না, তাই বলে তাকে পকেটমারের সঙ্গে তুলনা করতে হবে? ছিঃ ছিঃ ছিঃ!'

স্কুল-কলেজের কোচিংয়ের পাশাপাশি ভর্তি কোচিং বলেও একটা অন্য রকম কোচিং আছে। রাস্তাঘাটে, দেয়ালে ভর্তি কোচিংয়ের বিজ্ঞাপন দেখি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দিয়ে ভর্তি কোচিং করা হয়। মেডিকেল কোচিং করার জন্য বাংলাদেশের প্রত্যন্ত শহর থেকে ছেলেমেয়েরা ঢাকা চলে এসে বাসা ভাড়া করে থাকে। অথচ আমরা সবাই জানি, পুরো ব্যাপারটা একটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। পুরো দেশটা কিছু প্রতারকের হাতে আটকা পড়ে আছে।

অথচ কত সহজেই এই পুরো ব্যাপারটার নিষ্পত্তি করা যেত। এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের ভেতর যদি ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নেওয়া যেত, তাহলে চোখের পলকে এই পুরোপুরি অর্থহীন কোচিং ব্যবসার মূল উৎপাটন করে দেওয়া যেত!

আমি যখন এটা লিখছি, তখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা চলছে। বাবা-মায়েরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এক শহর থেকে অন্য শহরে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বেড়াচ্ছেন। সেখানে তাদের থাকার জায়গা দূরে থাকুক, বাথরুমে যাওয়ার সুযোগ পর্যন্ত নেই। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে তারা বাসে ওঠে, সারা রাত জার্নি করে অন্য কোনো অচেনা শহরে গিয়ে হাজির হয়। তাদের খাওয়া নেই, ঘুম নেই, শ্রান্তক্লান্ত-বিধ্বস্ত, তার মাঝে তারা ভর্তি পরীক্ষা দেয়—এর চেয়ে নিষ্ঠুর কোনো ব্যাপার আমার চোখে পড়ে না এবং আমাদের দেশের কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে এই নিষ্ঠুরতাগুলো কারা করছে? করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা, কেন করছেন? শুধু কিছু বাড়তি টাকার জন্য! শুধু বাড়তি কিছু টাকার জন্য! শুধু বাড়তি কিছু টাকার জন্য! (না, একই বাক্য তিনবার লেখাটি কোনো মুদ্রণ প্রমাদ নয়—আমি ইচ্ছা করে লিখেছি, যেন যারা পড়ছে তারা বিষয়টি জানে)।

খুব সহজেই সব বিশ্ববিদ্যালয় মিলে একটি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব। আমদের দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু টাকার লোভ ছেড়ে এ ধরনের একটা ভর্তি প্রক্রিয়ার মাঝে যেতে রাজি নয়, তাই আমরা একবার ছোট দুটি বিশ্ববিদ্যালয় মিলে প্রক্রিয়াটা শুরু করেছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল সবাইকে দেখানো, কাজটি কত সহজ এবং সেটি দেখে পরেরবার হয়তো আরও বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে আসবে। প্রায় সব আয়োজন শেষ করার পরও সেটি করা যায়নি। কারণ এ দেশের বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিল। আমি এ দেশের বামপন্থী রাজনৈতিক দলের নেতাদের, বড় কমিউনিস্টদের খুঁজে বেড়াই জিজ্ঞেস করার জন্য, 'আপনারা না দেশের শোষিত মানুষের কষ্ট লাঘব করার জন্য রাজনীতি করেন! তাহলে এই কম বয়সী কিশোর-কিশোরীরা কী দোষ করেছে? তাদের কষ্ট একটুকু কমানোর জন্য চেষ্টা করা হলে আপনারা কোন যুক্তিতে তার বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন?' আমি এই প্রশ্ন করার জন্য এখনও কাউকে খুঁজে পাইনি।

২. আমি যেহেতু ছোটদের জন্য লেখালেখি করি। তাই ছোট ছেলেমেয়ে আমার কোনো লেখা দেখলেই এটা তাদের জন্য লেখা মনে করে সেটা পড়ে ফেলার চেষ্টা করে বলে শুনেছি। আমার এই লেখাটাও যদি তাদের চোখে পড়ে যায় এবং তারা যদি এটা পড়ে ফেলে, তাহলে তাদের খুব মন খারাপ হবে। কারণ এই পুরো লেখাটিতে এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের লেখাপড়া নিয়ে একটি ভালো কথা লেখা হয়নি। এ দেশের লেখাপড়ার ব্যাপারে বলার মতো ভালো কথা একটিও নেই—সেটা তো সত্যি নয়। যেমন এ দেশের প্রায় ৩০ লাখ ছেলেমেয়ে পিএসসি পরীক্ষা দেয় এবং তার মাঝে ছেলেমেয়ে প্রায় সমান সমান। সত্যি কথা বলতে কি, ছেলে থেকে মেয়েদের সংখ্যা একটু বেশি। জেএসসি পরীক্ষা দেয় প্রায় ২০ লাখ, এসএসসি পরীক্ষা দেয় ১৫ লাখ এবং এইচএসসি পরীক্ষা দেয় প্রায় ১০ লাখ ছাত্রছাত্রী। যদি হিসাব করি তাহলে দেখব, শুধু স্কুল আর কলেজেই তিন কোটি ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করে। সবাই যখন ঠিক করে লেখাপড়া করবে, তখন কী একটা অসাধারণ ব্যাপার ঘটবে, সেটি কি কেউ চিন্তা করে দেখেছে?

এই তো সামনে ইংরেজি নববর্ষ এবং তখন দেশের সব ছাত্রছাত্রীর হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হবে। ১ জানুয়ারি স্কুলে ছেলেমেয়েরা তাদের নতুন বইগুলো বুকে চেপে ধরে মুখে বিশাল একটা হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে—এর থেকে সুন্দর দৃশ্য পৃথিবীতে আর কী হতে পারে? শুধু তাই নয়, পাঠ্যবইগুলো আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা আর কিছু না পড়ে যদি শুধু পাঠ্যবইগুলো মন দিয়ে আগাগোড়া পড়ে, তাহলেই কিন্তু লেখাপড়ার পুরোটুকু হয়ে যাবে—তাদের প্রাইভেট টিউটর, কোচিং কিংব ব্যাচে পড়তে যেতে হবে না! গাইডবই যদি ভুলেও খুলে না দেখে তাহলে তো কথাই নেই।

আমি নিশ্চিত, আগে হোক আর পরে হোক আমাদের দেশের লেখাপড়ার বিষয়টা ঠিক হয়ে যাবে। তার প্রধান কারণ, তার জন্য তো এই মুহূর্তে আলাদা করে কিছু করতে হবে না। ছেলেমেয়েদের আমরা শুধু একটুখানি উৎসাহ দেব, তাদের মাথার ভেতরের মস্তিষ্কটাকে একটুখানি উসকে দেব, হাতে নতুন নতুন বই তুলে দেব, শিক্ষকদের একটুখানি সম্মান দেব, এর বেশি তো আমরা কিছু চাইছি না। একটা দেশে, যেই দেশের মানুষ কি আমাদের সেটুকুও দেবে না?

নিশ্চয়ই দেবে। যদি না দেয় আমি আমার ভাঙা রেকর্ডটি বাজিয়েই যাব!

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. ‘নেটফ্লিক্স সাহসী গল্প বলতে ভয় পায়, দর্শক বোঝে না’
  2. রোগা হওয়া প্রসঙ্গে কী জানালেন করণ?
  3. প্রিয়াঙ্কার নাকের অস্ত্রোপচার নিয়ে মুখ খুললেন প্রযোজক
  4. বাবা হচ্ছেন রাজকুমার রাও
  5. বক্স অফিসে ৫ দিনে কত আয় করল ‘মেট্রো ইন দিনো’
  6. গৌরীর সঙ্গে লিভইনে আমির, জানালেন ‘মন থেকে আমরা বিবাহিত’
সর্বাধিক পঠিত

‘নেটফ্লিক্স সাহসী গল্প বলতে ভয় পায়, দর্শক বোঝে না’

রোগা হওয়া প্রসঙ্গে কী জানালেন করণ?

প্রিয়াঙ্কার নাকের অস্ত্রোপচার নিয়ে মুখ খুললেন প্রযোজক

বাবা হচ্ছেন রাজকুমার রাও

বক্স অফিসে ৫ দিনে কত আয় করল ‘মেট্রো ইন দিনো’

ভিডিও
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩৪
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩৪
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮৩
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮৩
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৯৬
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৯৬
এনটিভি'র নিমন্ত্রণে : পর্ব ১০
এনটিভি'র নিমন্ত্রণে : পর্ব ১০
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২৬
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২৬
আজ সকালের গানে (লাইভ) : পর্ব ০৭
আজ সকালের গানে (লাইভ) : পর্ব ০৭
আলোকপাত : পর্ব ৭৮১
আলোকপাত : পর্ব ৭৮১
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৭
গানের বাজার, পর্ব ২৩৯
ধা নাটক : কাজিনস পর্ব ০৩
ধা নাটক : কাজিনস পর্ব ০৩

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x