Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

রোমান্টিক শহরে মেহজাবীন

বিয়ের পিড়িতে জেফ বেজোস - লরেন সানচেজ

জন্মদিনে রুক্মিণী

মি. অ্যান্ড মিসেস মেসি

নিউইয়র্কে পারসা ইভানা

প্রকৃতির কোলে কৌশানী মুখার্জি

মিষ্টি হাসিতে সাবিলা নূর

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

প্যারিসে রোমান্টিক মুডে মেহজাবীন-আদনান

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

ভিডিও
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৩
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৯
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৭
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৭
গানের বাজার, পর্ব ২৩৭
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২০
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২০
নাটক : প্রেশারম্যান
নাটক : প্রেশারম্যান
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৪
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৪
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
এই সময় : পর্ব ৩৮৩৭
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০১:৩৬, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০১:৩৬, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬
আপডেট: ০১:৩৬, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬
আরও খবর
ড. জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টায় হামলাকারীর যাবজ্জীবন
হৃদয় মণ্ডলকে মুক্তি দিন, নইলে আমাকেও গ্রেপ্তার করুন : জাফর ইকবাল
সফলতা লাভে দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই : জাফর ইকবাল
‘শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামানোর প্রক্রিয়াগুলো নিষ্ঠুর ও দানবীয়’
অবশেষে অনশন ভাঙলেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

সাদাসিধে কথা

নিউ ইয়র্ক! নিউ ইয়র্ক!!

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০১:৩৬, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০১:৩৬, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬
আপডেট: ০১:৩৬, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

চৌদ্দ ঘণ্টা আকাশে উড়ে আমাদের প্লেনটা শেষ পর্যন্ত নিউ ইয়র্কে পৌঁছায়। টানা চৌদ্দ ঘণ্টা প্লেনের ঘুপচি একটা সিটে বসে থাকা সহজ কথা নয়। সময় কাটানোর নানারকম ব্যবস্থা, তারপরও সময় কাটতে চায় না। অনেকক্ষণ পর ঘড়ি দেখি, মনে হয় নিশ্চয়ই এর মাঝে ঘণ্টাখানেক কেটে গেছে; কিন্তু অবাক হয়ে দেখি পনেরো মিনিটও পার হয়নি।

এয়ারপোর্টে নামার পর ইমিগ্রেশনের ভেতর দিয়ে যেতে হয়—প্রত্যেকবারই নতুন নতুন নিয়মকানুন থাকে। এবারেও নতুন নিয়ম, যাত্রীদের নিজেদের পাসপোর্ট নিজেদের স্ক্যান করে নিতে হবে। কিভাবে করতে হবে, তা খুব পরিষ্কার করে লেখা আছে, সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করি, কিন্তু আমাদের পাসপোর্ট আর স্ক্যান হয় না। দেখতে দেখতে বিশাল হলঘর প্রায় খালি হয়ে গেছে, শুধু আমি আর আমার স্ত্রী পাসপোর্ট নিয়ে ধাক্কাধাক্কি করছি। কিছুতেই যখন পাসপোর্ট স্ক্যান করতে পারি না, তখন শেষ পর্যন্ত লাজ-লজ্জা ভুলে, কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকা একজন পুলিশ অফিসারের কাছে গিয়ে মিন মিন করে বললাম, ‘আমার পাসপোর্ট কিছুতেই স্ক্যান হচ্ছে না...।’

আমার কথা শেষ করার আগেই পুলিশ অফিসার আঙুল দিয়ে আমাকে দেখিয়ে বলল, ‘আপনি জাফর ইকবাল না?’ পুলিশ অফিসার বাঙালি। শুধু যে বাঙালি তা নয়, আমাকে চেনে। দেশের এয়ারপোর্টে এটা অনেকবার ঘটেছে, কিন্তু নিউ ইয়র্কের এয়ারপোর্টেও এটা ঘটবে, কল্পনা করিনি।

বলাবাহুল্য, এরপর আমার পাসপোর্ট মুহূর্তে স্ক্যান হয়ে গেল (কী কারণ জানা নেই, আমার পাসপোর্টে পুরনো পাসপোর্ট লাগানো থাকে, সে কারণে সাইজ মোটা এবং স্ক্যান করার জন্য যন্ত্রের মাঝে ঢোকানো যায় না। এ রকম অবস্থায় কী করতে হবে, বাংলাদেশের বাঙালি পুলিশ অফিসার সেটা আমাদের শিখিয়ে দিল।) বিদেশের মাটিতে নামার পর নানারকম আশঙ্কায় সবসময় আমার বুক ধুক ধুক করতে থাকে—এবারে মুহূর্তের মাঝে সব দুশ্চিন্তা, সব আশঙ্কা দূর হয়ে গেল। মনে হলো, এই শহরটি বুঝি অপরিচিত, নির্বান্ধব, স্বার্থপর, নিঃসঙ্গ একটি শহর নয়—এই শহরে আমার দেশের মানুষ আছে, দেশের বাইরে তারা দেশ তৈরি করে রাখে।

আমার ধারণা যে ভুল নয়, সেটি কয়েক ঘণ্টার মাঝে আমি আবার তার প্রমাণ পেয়ে গেলাম। যারা খোঁজখবর রাখে তারা সবাই জানে সারা পৃথিবীতেই এখন উবের কিংবা লিফট নামে নতুন সার্ভিস শুরু হয়েছে। স্মার্ট ফোনে তার ‘অ্যাপস’ ডাউনলোড করে নিলেই সেটা ব্যবহার করে গাড়িকে ডাকা যায়, ভাড়া নিয়ে দরদাম করতে হয় না, ক্রেডিট কার্ড থেকে সঠিক ভাড়া কেটে নেয়, তাই কোনও টাকা-পয়সার লেনদেন করতে হয় না। স্মার্ট ফোনের ম্যাপে গাড়িটা কোনদিকে আসছে সেটা দেখা যায়, গাড়িটির নম্বর কত, ড্রাইভার কে, তার নাম কী, টেলিফোন নম্বর কত—সেটাও টেলিফোনের স্ক্রিনে উঠে আসে। নিউ ইয়র্কে পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টার মাঝে আমাদের এক জায়গায় যেতে হবে বলে আমার মেয়ে এরকম একটা গাড়িকে ডেকে পাঠিয়েছে। সেটাতে ওঠার আগেই টের পেলাম গাড়ির ড্রাইভার বাংলাদেশের তরুণ। আমাকে দেখে তার সে কি আনন্দ, গাড়ি চালাতে চালাতে তার কত রকম কথা। গাড়ি থেকে নামার পর সে আমার মেয়েকে বলল—তার কোম্পানিকে সে জানিয়ে দেবে যেন আমাদের কাছ থেকে কোনও ভাড়া কেটে নেওয়া না হয়। আমি অনেক কষ্ট করে তাকে থামালাম।

আমি দুই সপ্তাহের মতো নিউ ইয়র্ক শহরে ছিলাম। যখনই ঘর থেকে বের হয়েছি দেশের মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে। কখনও ফল বিক্রেতা, কখনও রেস্টুরেন্টের কর্মচারী, কখনও ট্রাফিক পুলিশ, কখনও মিউজিয়ামের গার্ড কখনও সাবওয়ের সহযাত্রী। পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে এসে দেশের মানুষ এবং তাদের মমতাটুকু হৃদয়টাকে অন্যভাবে পরিপূর্ণ করে তোলে।

২.
আমেরিকা দেশটি হচ্ছে গাড়ির দেশ, এই দেশে গাড়িটি চালিয়ে শুধুমাত্র এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার জন্যে তৈরি হয়নি। আমেরিকায় গাড়ি হচ্ছে সেই দেশের কালচারের একটা অংশ। মাঝখানে পেট্রোলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে তেল-বান্ধব ছোট গাড়ির প্রচলন হতে শুরু করেছিল, কিন্তু এখন পেট্রোলের দাম কমেছে বলে বিশাল বিশাল বিলাসী গাড়িও আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে। খাঁটি আমেরিকানদের সম্ভবত নিউ ইয়র্ক শহরে গাড়ি চালাতে সমস্যা হয় না। কিন্তু আমার কাছে বিষয়টাকে রীতিমতো দুঃস্বপ্ন মনে হয়। তবে যারা নিউ ইয়র্ক শহরে থাকে তারা অবশ্যই গাড়ি ব্যবহার না করেই দিন কাটাতে পারে, কারণ পুরো শহরের মাটির নিচে মেট্রো ট্রেন মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে আছে। আমি যে দুই সপ্তাহ নিউ ইয়র্ক শহরে ছিলাম, এই মেট্রো ট্রেনেই চলাফেরা করেছি।

নিউ ইয়র্ক শহরের নতুন প্রজন্ম অবশ্যই চলাফেরার জন্য নতুন আরেকটি সমাধান খুঁজে পেয়েছে। সেটি হচ্ছে বাইসাইকেল। আমি যখন প্রথম জানতে পারলাম আমার মেয়ে বাইসাইকেল চালিয়ে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে, আমি তখন জানতে চাইলাম সাইকেলটি সে কোথায় রেখেছে। রাস্তার পাশে কোনও একটা ল্যাম্পপোস্টে সাইকেলটি বেঁধে রেখে এলে কিছুক্ষণের মাঝেই সাইকেলের ফ্রেম ছাড়া বাকি সবকিছু হাওয়া হয়ে যায়। (আমার ধারণা এই ব্যাপারে নিউ ইয়র্কের মানুষের দক্ষতা আমাদের দেশের মানুষ থেকে বেশি।) আমার মেয়ে বলল, সে নিউ ইয়র্ক শহরে এসে কোনও বাই-সাইকেল কিনেনি, যখনই দরকার হয় একটা ভাড়া নিয়ে নেয়। বিষয়টা আমার কাছে যথেষ্ট বিদঘুটে মনে হলো, সাইকেল ভাড়া নিলেও ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত সেটাকে কোথাও না কোথাও নিজের হেফাজতে রাখতে হয়। পুরো সাইকেল ভাড়া নিয়ে শুধু তার কঙ্কালটা ফেরত দেওয়া হলে সাইকেল ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা দু’দিনে লাটে উঠে যাবে।

আমার মেয়ের কাছ থেকে বাই-সাইকেল ভাড়া দেওয়া-নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটির বর্ণনা শুনে আমি চমত্কৃত হলাম। সিটি বাইক নাম দিয়ে নিউ ইয়র্ক শহরের অসংখ্য জায়গায় সাইকেল স্ট্যান্ড তৈরি করা হয়েছে। যার যখন দরকার হয় এক স্ট্যান্ড থেকে ভাড়া নেয়, গন্তব্যে পৌঁছানোর পর অন্য স্ট্যান্ডে জমা দিয়ে দেয়। কোথাও কোনও মানুষ নেই, পুরো ব্যাপারটা ইলেক্ট্রনিক। কে কোথা থেকে ভাড়া নিয়েছে কোথায় ফেরত দিয়েছে সবকিছু ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে হিসেব রাখা হচ্ছে এবং ক্রেডিট কার্ড থেকে ভাড়ার টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। পুরো শহরে অল্প কয়েকটা জায়গায় সিটি-বাইকের স্ট্যান্ড থাকলে এই প্রক্রিয়াটা মোটেও কাজ করতো না কিন্তু যেহেতু শহরের প্রায় কোণায় কোণায় সিটি বাইক স্ট্যান্ড বসানো হয়েছে কাজেই এখন কাউকেই বাইসাইকেলটা কোথা থেকে ভাড়া নিয়ে কোথায় ফেরত দেবে সেটা নিয়ে ভাবনা করতে হবে না। কাছাকাছি কোথায় সিটি বাইক স্ট্যান্ড আছে সেটা জানার জন্যে দরকার শুধু একটা স্মার্ট ফোন!

নিউ ইয়র্ক শহরের একটা সুন্দর দৃশ্য হচ্ছে এই সিটি বাইক। তাদের জন্য আলাদাভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, ডিজাইনটিও চমত্কার! একজন মানুষ চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্যে স্যুট পরেও এই সাইকেল চালিয়ে যেতে পারবে।

নিউ ইয়র্ক শহরের কত বড় বড় বিষয় থাকার পরও আমি ইচ্ছে করে সিটি বাইক নিয়ে আমার উচ্ছ্বাসটুকু প্রকাশ করেছি। আমার মনে হয় আমাদের ঢাকা শহরেও কোনও একজন উদ্যোক্তা এই ধরনের একটা উদ্যোগ নিলে সেটি শহরের মানুষের জন্যে অনেক বড় একটা আশীর্বাদ হতে পারত। (আমাদের দেশের জন্যে হুবহু এই মডেলটি হয়তো কাজ করবে না, একটু অন্য রকমভাবে শুরু করতে হবে। যেমন আমাদের এটিএম মেশিন—সারা পৃথিবীতেই এটিএম মেশিনকে কারও পাহারা দিতে হয় না, আমাদের দেশে সেখানে সার্বক্ষণিকভাবে কাউকে না কাউকে পাহারা দিতে হয়।)

৩.
এটি আমেরিকায় নির্বাচনি বছর। আমেরিকার ইতিহাসের যে কোনও নির্বাচন থেকে এটি অন্যরকম, কারণ এবারে ডোনাল্ড ট্রাম্প নামে একজন ব্যবসায়ী প্রেসিডেন্ট পদের জন্য, আমেরিকার প্রধান দুই দলের একটি, রিপাবলিকান পার্টির পক্ষ থেকে নির্বাচন করছে। আজ থেকে প্রায় দুই যুগ আগে আমি যখন আমেরিকাতে ছিলাম তখন থেকে এই মানুষটিকে চিনি। তখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ছিল স্বল্পবুদ্ধি সম্পন্ন, স্থূল রুচির বাকসর্বস্ব একজন ব্যবসায়ী। প্রথম যখন আমি শুনতে পেয়েছিলাম যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপালিকান পার্টি থেকে নমিনেশন পাওয়ার চেষ্টা করছেন, তখন পুরো বিষয়টাকে একটা উত্কট রসিকতা হিসেবে ধরে নিয়ে আমি উড়িয়ে দিয়েছিলাম। এখন যখন নির্বাচন প্রায় চলে এসেছে এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প সত্যি সত্যি একজন প্রার্থী, তখন পুরো ব্যাপারটা রসিকতার পর্যায়ে না থেকে বিভীষিকার পর্যায়ে চলে এসেছে। আমেরিকায় সংখ্যালঘু মানুষের প্রতি বিদ্বেষ কিংবা সাম্প্রদায়িকতা, আতঙ্ক এবং ঘৃণা—এগুলোর অস্তিত্ব থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে কখনও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। ডোনাল্ড ট্রাম্প ইলেকশনে জিতে গেলে অন্ধকার জগতের এই সব গ্লানি হঠাৎ করে রাষ্ট্রীয় নীতিমালার মাঝে চলে আসবে!

আমি যতদিন ছিলাম তার মাঝে একদিনও একটি মানুষকে পাইনি যে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে ইতিবাচক কোনও কথা বলেছে। সত্যি কথা বলতে কী, একজন অধ্যাপককে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা জিজ্ঞেস করার পর তাকে আমি আক্ষরিক অর্থে শিউরে উঠতে দেখেছি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নানারকম প্রচারণা চলছে। সবচেয়ে মজার প্রচারণাটা শুনেছি একজন গৃহহীন ভিক্ষুকের কাছ থেকে। সে পথের মোড়ে একটা কাগজ নিয়ে বসে থাকে। কাগজে লেখা ‘আমাকে যদি এক ডলার না দাও তাহলে আমি কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়ে দেব!’
আমি যতদূর জানি এই হুমকি কাজে দিয়েছে! প্রচুর মানুষ এই ভিক্ষুককে এক ডলার করে দিয়ে যাচ্ছে।

৪.
একদিন বিকেলে আমার ছেলে আমাদের জানালো সে একটি বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিতে যাচ্ছে। আমার ধারণা ছিল বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন এই ব্যাপারগুলোর বুঝি শুধু আমাদের দেশের জন্যে একচেটিয়া, আমেরিকাতেও যে বিক্ষোভ মিছিল হতে পারে সেটা অনুমান করিনি। আমি জানতে চাইলাম, কিসের বিক্ষোভ মিছিল? উত্তরে সে আমাকে যে কাহিনিটি শোনালো সেটি অবিশ্বাস্য! তার একজন সহকর্মী (ঘটনাক্রমে এই সহকর্মীর সঙ্গে আমারও পরিচয় হয়েছে) লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অ্যাট ব্রুকলিন নামে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছে। আমেরিকাতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পদ মোটামুটি সোনার হরিণ, সেখানে যোগ দিতে পারা কঠিন, কাজেই এ রকম একটি পদে যোগ দেওয়ার পরই একজন তাদের জীবন শুরু করার পরিকল্পনা করতে পারে। লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির কর্মকর্তারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি নতুন বেতন স্কেল তৈরি করেছে, শিক্ষকদের সেটা পছন্দ হয়নি, তাই তারা সেটা গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট কলমের এক খোঁচায় চারশ’শিক্ষককে বরখাস্ত করে দিল!

মুহূর্তের মাঝে একজন নয় দুইজন নয়, চারশ’ শিক্ষক বেকার সবাই একেবারে পথে বসে গেছে। যেহেতু আমেরিকার একাডেমিক জগতে অসংখ্য মানুষ চাকরির খোঁজে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ভালো চাকরি না পেয়ে ছোটখাটো কাজ করে সময় কাটাচ্ছে, তাই এই চারশ’ শিক্ষকের বদলে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া খুব যে অসম্ভব ব্যাপার তা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার জন্যে সে রকম শিক্ষকদের নেওয়া শুরু হয়েছে, অনেকেই খণ্ডকালীন নিয়োগ পেয়ে কাজও করতে শুরু করেছে।

বলা বাহুল্য, চাকরি হারানো চারশ’ শিক্ষক, তাদের পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এই অবিশ্বাস্য ঘটনার প্রতিবাদ করতে শুরু করেছে। যে জন্য বিক্ষোভ মিছিল এবং আমার ছেলেও সেই বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিতে যাচ্ছে। আমার সময় থাকলে আমিও যোগ দিতাম।

শেষ খবর অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত বরখাস্ত করে দেওয়া চারশ’ শিক্ষককে আবার ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ( আমাদের দেশে আমরা বলি ভাইস চ্যান্সেলর) যে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাকে প্রচুর গালমন্দ শুনতে হয়েছে, সাধারণ শিক্ষক এবং ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিলে তাকে একটা ‘ধাড়ী ইঁদুর’ বলে ডাকছে। আমি যতদূর জানি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এখনও তার নিজের পদে বহাল আছে। হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্টকে শুধু ছেলে এবং মেয়ের মেধার তুলনা করতে গিয়ে একটি বেফাঁস কথা বলার জন্যে চাকরি হারাতে হয়েছিল। আমার ধারণা লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির এই ধাড়ী ইঁদুরও সেখানে খুব বেশিদিন থাকতে পারবে না। আমরা আমাদের ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলরকে নিয়ে মাথা চাপড়াই—মনে হচ্ছে সমস্যাটি দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিক!

৫.
শিক্ষক হওয়ার প্রধান আনন্দ হচ্ছে সারা পৃথিবীতে তার ছাত্র-ছাত্রীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে, কাজেই নিউইয়র্ক যাওয়ার পর এই ছাত্র-ছাত্রীরা যে আমাদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে, সেটি এমন কিছু অবাক ব্যাপার নয়। সে কারণে একদিন বিকেলে তাদের সঙ্গে দেখা করার জন্যে আমাদের ‘জ্যাকসন হাইট’ নামে একটা জায়গায় যেতে হলো। (যারা জ্যাকসন হাইটের নাম শোনেননি তাদের বলা যায়, এটি হচ্ছে নিউ ইয়র্কের মিনি বাংলাদেশ!) জ্যাকসন হাইট জায়গাটি আমি যেখানে আছি সেখান থেকে অনেক দূর, কিন্তু মেট্রো ট্রেনে খুব সহজেই যাওয়া যায়। আমি সেভাবেই যাব বলে ঠিক করে রেখেছিলাম। আমার ছাত্র-ছাত্রীদের প্রবল আপত্তি এবং তারা গাড়ি না করে আমাদের নেবে না—এর মাঝে নিশ্চয়ই যথাযথ সম্মান দেখানোর ব্যাপার আছে, যেটা আমি জানি না। কাজেই যে দূরত্বটা অল্প সময়ে অতিক্রম করতে পারতাম, গাড়ি করে ট্রাফিক জ্যাম ঠেলে অনেক সময় নিয়ে অতিক্রম করতে হলো!

যাই হোক, ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে গল্প-গুজব করে, খেয়ে দেয়ে, ছবি তুলে চমত্কার একটি সন্ধ্যা কাটিয়ে আমরা ফিরে আসতে প্রস্তুত হয়েছি। আমরা আবার ছাত্র-ছাত্রীকে বলছি আমাদের মেট্রো ট্রেনে তুলে দিতে, তারা আবার রাজি হলো না, গাড়ি করে আমাদের অ্যাপার্টমেন্টে ফিরিয়ে দেবে। যখন মাঝামাঝি এসেছি তখন হঠাৎ করে আমার ছেলে ফোন করে জিজ্ঞেস করলো ‘তোমরা কোথায়?’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কেন, কী হয়েছে?’ আমার ছেলে বলল, ‘ম্যানহাটানের মাঝখানে বোমা ফেটেছে, খবরদার ঐ পথে ফিরে আসার চেষ্টা করো না।’

শুনে আমি হাসব না কাঁদব, বুঝতে পারলাম না। দেশে জঙ্গি এবং তাদের উত্পাতের খবর পড়তে পড়তে আমাদের সবার জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। ভেবেছিলাম নিউইয়র্ক এসে অন্তত দুটি সপ্তাহ জঙ্গিদের উত্পাতের খবর পড়তে হবে না। কিন্তু আমাদের কপাল, এখানেও সেই একই জঙ্গি, একই উৎপাত।

ছাত্র-ছাত্রীরা আমাদের কথা না শুনে মেট্রো ট্রেনে তুলে না দেওয়ার কারণে আমরা খুব বাঁচা বেঁচে গিয়েছিলাম। কারণ বোম ফাটার সঙ্গে সঙ্গে মেট্রো রেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। অসংখ্য মানুষ অন্য কোনোভাবে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছিল বলে ট্যাক্সি বা ক্যাবও পাওয়া যাচ্ছিল না। কাজেই আমাদের হয়তো পুরো পথটুকু পায়ে হেঁটে ফিরে আসতে হতো। আমাদের ছাত্ররা তাদের গাড়িতে করে নিরাপদে একেবারে আমাদের অ্যাপার্টমেন্টের দরজায় পৌঁছে দিয়ে গেল! আমার ছেলের অবশ্যি এত সৌভাগ্য হয়নি, পায়ে হেঁটে এবং একজন দয়ালু ক্যাব ড্রাইভারের সহযোগিতায় অনেক কষ্টে গভীর রাতে বাসায় ফিরে আসতে পেরেছিল।

যখনই আমাদের দেশে একটা জঙ্গি হামলা হয়, বাংলাদেশ সরকার তখন ঘোষণা দেয়—এটি স্থানীয় ঘটনা, আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। এখানেও তাই হলো, নিউইয়র্কের মেয়র ঘোষণা দিলেন—এটি স্থানীয় ঘটনা, আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। বোঝাই যাচ্ছে, পৃথিবীটা খুবই ছোট!

লেখক: কথাসাহিত্যিক, শিক্ষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট

সাদাসিধে কথা ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. সাধারণ মানুষের জন্য সিনেমা দেখা এখন বিলাসিতা : আমির খান
  2. মৃগী রোগ ছিল ‘কাটা লাগা’ অভিনেত্রীর, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই হয় মৃত্যু
  3. বলিউডের ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালি আর নেই
  4. আমিরের ‘সিতারে জমিন পর’ সাত দিনে ১০০ কোটি থেকে আর কত দূরে?
  5. ৫০০ টাকায় শুরু করা কপিল শর্মা এখন শো প্রতি নেন ৫ কোটি
  6. ঝিমিয়ে পড়ল আমিরের ‘সিতারে জমিন পার’, আয় কমে কত?
সর্বাধিক পঠিত

সাধারণ মানুষের জন্য সিনেমা দেখা এখন বিলাসিতা : আমির খান

মৃগী রোগ ছিল ‘কাটা লাগা’ অভিনেত্রীর, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই হয় মৃত্যু

বলিউডের ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালি আর নেই

আমিরের ‘সিতারে জমিন পর’ সাত দিনে ১০০ কোটি থেকে আর কত দূরে?

৫০০ টাকায় শুরু করা কপিল শর্মা এখন শো প্রতি নেন ৫ কোটি

ভিডিও
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮৮
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮৮
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩০
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২০
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২০
এই সময় : পর্ব ৩৮৩৭
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৩
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬২
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৯
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x