উন্মুক্ত হলো স্টিফেন হকিংয়ের সফটওয়্যার

পৃথিবী নামক গ্রহে এ মুহূর্তে যে মানুষটিকে সবচেয়ে বুদ্ধিমান বলে ধরা হয় তিনি আর কেউ নন, স্টিফেন হকিং। তুখোড় এই বিজ্ঞানী শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী, স্বাভাবিকভাবে কথা বলতেও তিনি অক্ষম। তবে প্রযুক্তি তাঁকে সুযোগ করে দিয়েছে কথা বলার। নিজের কণ্ঠস্বরে নয়, সফটওয়্যারের মাধ্যমে যান্ত্রিক স্বরে। এবার স্টিফেন হকিংয়ের সেই সফটওয়্যার উন্মুক্ত হলো সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য। এ খবর জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক ম্যাগাজিন মাদারবোর্ড।
‘মোটর নিউরন ডিজিজ’ নামে এক বিরল রোগে আক্রান্ত স্টিফেন হকিং। আর এ রোগের ফলে স্বাভাবিক হাঁটাচলা থেকে শুরু করে কথা বলার শক্তি পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেন তিনি। একমাত্র তাঁর হাতের কয়েকটি আঙুল তিনি স্বাভাবিকভাবে নাড়াতে পারেন। আর এই আঙুলের সাহায্যেই তিনি তাঁর মনের কথা লিখে ফেলেন। সফটওয়্যারটি সেটি যান্ত্রিক কণ্ঠস্বরে রূপান্তরিত করে প্রকাশ করে।
বিখ্যাত কম্পিউটার চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইন্টেল বিশেষভাবে এই সফটওয়্যার তৈরি করে দেয় হকিংয়ের জন্য। এসিএটি (অ্যাসিস্টিভ কনটেক্স-এয়ার টুলকিট) নামের এই সফটওয়্যার এবার ইন্টেল সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
ওপেন সোর্স এই সফটওয়্যারটি এখন যে কেউ বিনামূল্যে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন, একই সঙ্গে উন্নতি সাধন করতে পারবেন নিজের মতো। ইন্টেলের মতে, মোটর নিউরনের মতো ভয়াবহ সব রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এক আশার আলো হতে পারে এসিএটি। আর প্রতিনিয়ত উন্নয়ন এবং পরিবর্তন পারে এই সফটওয়্যারটিকে আরো বেশি ব্যবহারসুলভ করে গড়ে তুলতে।
ইন্টেলের ‘অ্যান্টিসিপেটরি কম্পিউটার ল্যাব’-এর প্রধান প্রকৌশলী লামা ন্যাচম্যানের মতে, ‘ওপেন সোর্স হিসেবে এই সফটওয়্যারের লক্ষ্যই হলো ডেভেলপারদের স্বাচ্ছন্দ্যে এর উন্নতি সাধনের সুযোগ দেওয়া, যেটি আমরা অনেক বছরের পরিশ্রমে পেয়েছি।’
তবে এই সফটওয়্যার পূর্ণাঙ্গভাবে ব্যবহার করতে বেশ কিছু ব্যয়বহুল হার্ডওয়্যারের প্রয়োজন পড়বে, যেমন ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার। তবে আশার ব্যাপার, ওপেন সোর্স এই সফটওয়্যারটির উন্নয়নে এরই মধ্যে ডেভেলপাররা কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আর এর মধ্য দিয়ে অদূর ভবিষ্যতেই সাধারণ প্রতিবন্ধী মানুষের ব্যবহারযোগ্য হতে পারে এসিএটি।