নতুন বই
দেওয়ান লালন আহমেদের ‘পুলিশের খেরোখাতা’

সাহিত্যাঙ্গনে অপেক্ষাকৃত নবীন, কৃতী লেখক দেওয়ান লালন আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশের একজন চৌকস কর্মকর্তা। দেওয়ান লালন আহমেদের ‘পুলিশের খেরোখাতা’ গ্রন্থের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশের আত্মিক মেলবন্ধন আরো জোরদার করা। সেই দৃঢ় প্রত্যয়েই লেখকের এগিয়ে চলা। প্রায় ২০০ বছর আমরা বন্দি ছিলাম ব্রিটিশ শাসকদের পরাধীনতার কবলে। বেনিয়ারা নিজেদের স্বার্থে পুলিশকে জনগণের বিরুদ্ধে নানাভাবে ব্যবহার করেছে। পাকিস্তানি শোষকরাও একই কারণে পুলিশকে করেছে বিতর্কিত ও জনবিচ্ছিন্ন। ফলে সাধারণ মানুষের মনে পুলিশ সম্পর্কে একটি বিরূপ ধারণা গড়ে ওঠে। অথচ আজকের স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে পুলিশের সুনাম দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে পুলিশের সেবার হাত, সততার ব্রত আজ প্রসারিত হয়েছে মানবকল্যাণে। বলাবাহুল্য, লেখক পুলিশ কর্মকর্তা দেওয়ান লালন আহমেদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি লালনের শ্রদ্ধার শেকড় প্রোথিত হয় শৈশবে, তাঁর বাবার মাধ্যমে। মুক্তগদ্যে তিনি এই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার ছাপ রেখেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধকে তিনি বিধৃত করেছেন অবিকৃত তথ্যের সজ্জায়। যা নতুন প্রজন্মের মননে একটি ধনাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে সক্ষম। নানা অপারেশনে তাঁর মজুদ করা অভিজ্ঞতা গল্প বলার ছলে তিনি লিখেছেন, যা পাঠকের মনকে ভাসিয়ে নেয় অন্য কোনো জগতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ আজ স্বপ্ন নয়, সাফল্যমণ্ডিত সত্য। আবার আরেকটি বাস্তবতা হলো, সুফলের পাশাপাশি সাইবার ক্রাইম তথা প্রযুক্তিগত অপরাধ বেড়ে যাওয়া। লেখক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের অবয়ব প্রতিফলিত করেছেন তাঁর রচনায়। ফলে পাঠক উপকৃত হবে, গণসচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। একজন আদর্শ, মমতাময়ী, বিনয়ী এবং পারিবারিক মূল্যবোধসম্পন্ন বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতা ও বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্যের প্রতিফলনও ঘটেছে এ গ্রন্থে।
তাঁর লেখনীতে ২০১৬ সালে প্রকাশিত ‘বাবার চোখে মুক্তিযুদ্ধ’ গ্রন্থটি সাহিত্যপ্রেমীদের দৃষ্টি কাড়ে এবং সুধীমহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। গ্রন্থটিতে লেখকের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা পিতার উদ্দেশে লেখা খোলা চিঠিটি সাধারণ পাঠকের মনকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। শোকের এক অশ্রুতপূর্ব আবহ সৃষ্টি করে। বিস্ময় ও ব্যতিক্রমের সাক্ষী হয়ে বিগত অমর একুশে গ্রন্থমেলায় দুটি ভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা থেকে বইটির দুটি সংস্করণ বের হয় শুধু পাঠকপ্রিয়তার কারণেই। মুক্তগদ্যে লেখা এ রচনাগুলো অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় স্বাদে পূর্ণ।
রুচিশীল পাঠক তৈরিতে, জ্ঞান ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে এ গ্রন্থটি ভূমিকা রাখবে এই প্রত্যাশা, ‘দাঁড়কাক’ থেকে প্রকাশিত এই গ্রন্থটির প্রকাশক সঞ্জীব পুরোহিত, প্রচ্ছদ– সঞ্জীব পুরোহিত। বইটি পাওয়া যাবে লিটল ম্যাগ চত্বর দাঁড়কাকের স্টলে, স্টল নং- ৩২ এ ছাড়া ডিএমপি স্টলেও পাওয়া যাবে।