রকিবুল ইসলাম মুকুলের নতুন দুই উপন্যাস

অমর একুশে বইমেলা-২০১৮-তে আসছে রকিবুল ইসলাম মুকুলের দুটি নতুন উপন্যাস—একটি ‘দোলনচাঁপার ঘ্রাণ’ ও অন্যটি ‘মাইক্রোপিপ’।
‘দোলনচাঁপার ঘ্রাণ’ উপন্যাসে লেখক তুলে ধরেছেন চল্লিশ বছর পর দেশে ফিরে আসা একজন নারীর শেকড়সন্ধানী মনের গভীর অনুরণন। উপন্যাসটি ভালোবাসার, দেশপ্রেমের, গভীর মর্মবেদনার। ‘মাইক্রোপিপ’ উপন্যাসটি একটি কল্পবিজ্ঞান।
বাংলাবাজারের খ্যাতিমান প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অনিন্দ্য প্রকাশ বই দুটি প্রকাশ করেছে। দুটি উপন্যাসেরই প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।
উপন্যাস দুটি সম্পর্কে প্রকাশক আফজাল হোসেন বলেন, ‘রকিবুল ইসলাম মুকুল গত কয়েক বছর নিয়মিত লিখছেন। সম্ভাবনাময় তরুণ কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে তিনি উল্লেখযোগ্য। মানুষের জীবনের চলমান ঘটনাগুলো খুঁটিনাটি ব্যবচ্ছেদ করে তিনি সাবলীল গল্প বলার ধরনে উপন্যাসের পটভূমিতে পাঠককে টেনে নিয়ে যান। আশা করি, বই দুটো পাঠকদের ভালো লাগবে। বিশেষ করে দোলনচাঁপার ঘ্রাণ উপন্যাসটি পাঠকদের আপ্লুত করবে এবং দেশপ্রেমের চেতনায় আরো উজ্জীবিত করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। আমরা এটাও আশা করি যে পাঠক বই কিনবেন এবং এবারের অমর একুশে বইমেলা হবে পাঠক-লেখক ও প্রকাশকদের মিলনমেলা।’
উপন্যাস দুটির কাহিনী সংক্ষেপ
দোলনচাঁপার ঘ্রাণ
সালেহা কাঁদছে। হুহু করে কাঁদছে। বৃষ্টির ছাঁট এসে লাগছে মুখে। ভেজা দোলনচাঁপার ঘ্রাণ ভেসে আসছে বাতাসে। ম-ম করছে সোঁদা মাটির গন্ধ। জারুল গাছ থেকে টুপটুপ করে ঝরে পড়া বৃষ্টির অবশিষ্টের মতো তার চোখের কোণেও ঝুলে আছে দুফোঁটা অশ্রু। এ অশ্রু আনন্দের, এ অশ্রু বেদনার। চল্লিশ বছর পর হারানো স্বজনদের খুঁজতে গ্রাম থেকে গ্রাম ঘুরছে সে। হাতে নিজের ছোটবেলার একটা সাদাকালো ছবি। একটা চিরকুট। চিরকুটে লেখা। সালেহা বেগম (৫), পিতা-জহুরুল ইসলাম, মাতা-সাফিয়া খাতুন, জেলা-বরিশাল। শেকড়ের টানে সুদুর নেদারল্যান্ডস থেকে ছুটে আসা সালেহার সঙ্গী সাংবাদিক মিজান চৌধুরী। মাকে খুঁজতে এসে বাংলাদেশের নিভৃত পল্লীর বুনো প্রকৃতির প্রেমে পড়ে যায় সালেহা। বুকের খাঁচা ভরে নিতে থাকে পথের ধারে ফুটে থাকা দোলনচাঁপার ঘ্রাণ। এই ঘ্রাণেই কি মিশে আছে মা সাফিয়া খাতুনের নোনা ঘামের গন্ধ? শেষ পর্যন্ত কি হারানো পিতা-মাতাকে খুঁজে পাবে সালেহা?
মাইক্রোপিপ
নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে মাইক্রোস্কোপিক পিঁপড়া—‘মাইক্রোপিপ’ তৈরি করে গোটা দুনিয়ায় সাড়া জাগিয়েছে ঢাকার বিজ্ঞানী সফদর হাশমী। কিন্তু লোভে পড়ে মাইক্রোপিপের গবেষণা স্ক্রিপ্ট ও টেকনোলজি চীনা বায়োটেকনোলজি কোম্পানি ‘ওয়ার্ল্ড অ্যাগ্রোর’ কাছে বিক্রি করে দেয় হাশমীর এক সহযোগী। এর পর দ্রুত মাইক্রোপিপের উৎপাদন করে সারা বিশ্বের সবুজ ফসল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে মাঠে নামে ওয়ার্ল্ড অ্যাগ্রো। পৃথিবীর সব ফসলে পিপ সংক্রমণ ঘটিয়ে অঙ্কুরোদ্গমের জেনোম কোড বদলে দিতে থাকে কোম্পানিটি। লক্ষ্য শুধু তাদের উৎপাদিত শস্যবীজ দিয়ে পুরো বিশ্বের কৃষি অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু নিজের আবিষ্কারের চরম অপব্যবহারে পৃথিবীর কৃষকদের হাজার বছরের ঐতিহ্যকে ধ্বংস হতে দেখে মরিয়া হয়ে ওঠেন বিজ্ঞানী সফদর হাশমী। শেষ পর্যন্ত তিনি কি পারবেন, নিজের সৃষ্টি মাইক্রোপিপকে ধ্বংস করে কোটি কোটি কৃষককে বাঁচাতে?