মেলা কথা
বইমেলায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য বই

একুশে বইমেলার বর্ধমান হাউস প্রাঙ্গণে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনীর স্টল। অনেক মানুষের জটলা সেখানে। সবাই মুগ্ধ হয়ে কী যেন দেখছে। কাছে গিয়ে দেখা গেল- আসিফ আহমেদ রূপমের দিকেই সবার নজর। কে এই রুপম? দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েও রূপম বই পড়ছেন অবলীলায়। তাঁর পাঠ শুনতেই উৎসুক জনতা ভিড় জমাচ্ছে বইমেলার এ স্টলে।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা তাদের চোখের কারণে বঞ্চিত হয় পৃথিবীর অনেক কিছু থেকে। ব্রেইল পদ্ধতির কারণে তারা পড়তে পারছে, জানতে পারছে নানা কিছু।
স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনী বইমেলায় এনেছে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল প্রদ্ধতির বই। এ বছর বইমেলায় ১৪টি বই প্রকাশ করেছে তারা। এ নিয়ে তাদের মোট ৬১টি বই প্রকাশিত হয়েছে। ২০০৮ সালে এ প্রকাশনী যত্রা শুরু করে। ২০০৯ সালে বই মেলায় স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনী প্রথম ব্রেইল প্রদ্ধতিতে বই প্রকাশ করে।
নটর ডেম কলেজে পড়ুয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আসিফ আহমেদ রূপম বলেন, ‘পড়াশোনা করতে ভালো করে পাঠ্য বই পাই না আর সাহিত্যের বই পাবো কোথায়। তবে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনী ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের সহযোগিতায় আমরা কিছু সাহিত্যের বই পাচ্ছি। এখন বই মেলাতেও ব্রেইলে সাহিত্যের বই পাওয়া যায়, এটা আমাদের জন্য অনেক পাওয়া।’
স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনীর স্টলে আসা একজন দর্শনার্থী কৌশিক রায় বলেন, ‘আমার ভালো লাগছে দেখে যে একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বই পড়ছেন। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই প্রকাশনীকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য বই পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।’
স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনীটির স্টলের ব্যবস্থাপক শেখ রবিউল ইসলাম বলেন, ‘পড়া ও জানার অধিকার সবার। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং সব দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর হাতে বই তুলে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। আমরা চাই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য সব ভালো মানের বইয়ের ব্রেইল প্রদ্ধতিতে বই প্রকাশিত হোক। যাতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা তাদের জ্ঞানকে আরো সমৃদ্ধ করতে পারে।’
এ বছরের বইমেলায় ব্রেইল প্রদ্ধতিতে প্রকাশিত বইগুলো হচ্ছে, মা, আমি তপু, আঁখি এবং আমরা কজন, ছোটদের সুফিয়া কামাল, স্যাং আর প্যাং, আমপারার সহজ অনুবাদ, স্বপ্ন ডানা, অনন্ত নিদ্রা, আলপনার রান্না, লবীর রান্না, কলঙ্ক ভাগী, সুন্দরবনের সাদা পাহাড়, স্বাস্থ্য তথ্য, হাঁসের পায়ে ঘুড়ি প্রভৃতি।